অর্পিতা মুখোপাধ্যায় (Arpita Mukherjee) বর্তমানে এসএসসি স্ক্যামের দৌলতে প্রায় প্রতিদিনই খবরের শিরোনাম দখল করছেন। একসময় টলিউডে ভাগ্যান্বেষণে এসেছিলেন অর্পিতা। চোখে স্বপ্ন ছিল নায়িকা হওয়ার। কিন্তু ‘হৃদয়ে লেখো নাম’ ফিল্মে অভিনয়ের পর ধীরে ধীরে বদলে যেতে শুরু করেন তিনি। বেড়ে যায় পার্টিতে যাওয়া। পাল্টে যায় জীবনযাত্রা। নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সাধারণ মেয়ে অর্পিতা বেলঘরিয়ার দেওয়ানপাড়ার বাড়ি ছেড়ে হয়ে ওঠেন ডায়মন্ড সিটির বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টের বাসিন্দা। বেশ কয়েকটি ওড়িয়া ফিল্ম ও বাংলা ফিল্মে অভিনয়ের পর রাতারাতি ইন্ডাস্ট্রি থেকে উধাও হয়ে যান তিনি। কলকাতার বুকে খোলেন কয়েকটি নেল আর্ট পার্লার। তৈরি করেছিলেন প্রযোজনা সংস্থাও। রাজ্যের প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee)-র ঘনিষ্ঠ বান্ধবী অর্পিতার জীবনে এই সবকিছুই এখন অতীত। তাঁর বর্তমান জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত কাটছে আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে।বিলাসবহুল জীবন যাপনে অভ্যস্ত অর্পিতার প্রথম দিন থেকেই ভালো লাগছে না জেলের বন্দি জীবন। মাটিতে কম্বল পেতে শুতে হচ্ছে তাঁকে। জেলের খাবার খেতে পারছেন না অর্পিতা। ব্ল্যাক কফি, ফলের রসের বায়নাক্কা চলছে না আলিপুর মহিলা সংশোধনাগারে। একই পোশাক প্রতিদিন পরে থাকতে হচ্ছে অর্পিতাকে। তাঁর সাথে কথা বলার কেউ নেই। বোন বা মা কেউই দেখা করতে আসছেন না অর্পিতার সাথে। বোঝাই যাচ্ছে, তাঁর কৃতকর্মের জন্য প্রায় সকলেই মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন তাঁর দিক থেকে। যে পার্থর সঙ্গিনী হয়ে অর্পিতা ভেবেছিলেন স্বচ্ছলতা ও ক্ষমতার শীর্ষে থাকবেন, বর্তমানে তাঁকেই নিজের জেলযাপনের জন্য দোষ দিচ্ছেন অর্পিতা।

প্রায় প্রতিদিন অর্পিতার জেলের বন্দি জীবনে রয়েছে আক্ষেপ, অভিযোগ। তবে তা শুনতে বাধ্য নন কারারক্ষীরা। আবাসিকরা অর্পিতাকে যথাসাধ্য সাহায্য করছেন। অর্পিতার কাপড় কেচে দেওয়া, খাবার এনে দেওয়ার মতো কাজ করছেন তাঁরা। তবে অর্পিতা জিন্সে বেশি স্বচ্ছন্দ। কিন্তু বর্ষাকালে শুকাচ্ছে না জিন্স। অন্য পোশাকগুলি এতটাই আধুনিক যা জেলের মধ্যে পরার উপযুক্ত নয়।

পোশাক নিয়ে অত্যন্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন অর্পিতা। তবে শোনা যাচ্ছে, চলতি সপ্তাহে তাঁর আইনজীবিরা অর্পিতাকে কয়েকটি নতুন পোশাক এনে দিতে পারেন! আপাতত জেলের অন্ধকারে বসে অর্পিতা ভাবছেন, পার্থর কোন ভুলের জন্য তাঁর জীবনে এল এই দুঃখজনক মোড়।
