গরু-কয়লা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি, টাকা মন্ত্রীর কাছে গিয়েছে: বিস্ফোরক অভিষেক

0
4

গরু পাচার, কয়লা পাচারের টাকা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের(Amit Shah) কাছে। সোমবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদের(TMCP) প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষ্যে মেয়ো রোডের জনসভায় দাঁড়িয়ে এমনই বিস্ফোরক অভিযোগ করলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhisekh Banerjee)। পাশাপাশি রাজ্যে ইডি-সিবিআই(ED CBI) তৎপরতাকে বিজেপির রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র বলে কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান তিনি।

রাজ্যে গরু পাচার ও কয়লা পাচার কাণ্ডের তদন্ত শুরু করেছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই। গরু পাচার কাণ্ডে অভিযুক্ত সন্দেহে গ্রেফতার করা হয়েছে বীরভুমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলকে। সেই ইস্যুতেই সোমবার তৃণমূলের সভা থেকে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ তুলে অভিষেক বলেন, “কয়লা খনির নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে কেন্দ্রীয় সিআইএসএফ, সীমান্তে দায়িত্বে রয়েছে বিএসএফ। তাহলে কী করে কয়লা পাচার হয়? গরু চুরি হয়? এর দায় কেন্দ্রের। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কেলেঙ্কারি এটা। এই টাকা গিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।” এর সঙ্গে বাগদায় গণধর্ষণ প্রসঙ্গ তুলে ধরে তিনি জানান, “আজ বিএসএফ এক শিশু কন্যার সামনে তার মাকে ধর্ষণ করছে, এটাই মোদির নতুন ভারত।”

আরও পড়ুন:শুভেন্দু-সুকান্ত গদ্দার, দিলীপ গুন্ডা: নাম ধরে আক্রমণ শানিয়ে চ্যালেঞ্জ অভিষেকের

এর পাশাপাশি বিজেপিকে তুলোধনা করে অভিষেক বলেন, “আপনারা দেখেছেন গোটা দেশে কেউ বিজেপিকে হারাতে পারছিল না। অশ্বমেধের ঘোড়া হয়ে উঠেছিল ওরা। আর এই ঘোড়াকে যে আটকেছে তাঁর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলায় লড়াই করতে এসে মুখ থুবড়ে পড়েছে ওরা। একজন মহিলার পা ভেঙেছে, তারপরও দেগঙ্গা থেকে দার্জিলিং ছুটেছেন তিনি। ২০০-র বেশি আসন নিয়ে ফের ক্ষমতায় এসেছে তৃণমূল। বাংলার মানুষ ওদের হারিয়েছে বলে গায়ে এত জ্বালা।” এর পাশাপাশি এত বড় সমাবেশের পর ফের রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের আশঙ্কা প্রকাশ করে অভিষেক বলেন, “২১ জুলাই বাংলায় সর্বকালীন রেকর্ড জনসমাবেশের পর ২২ জুলাই পার্থর বাড়িতে গেল ইডি। আজ এত বড় সমাবেশ, আশঙ্কা ৪-৫ দিনের মধ্যে বড় কিছু হবে। আসলে রাজনৈতিকভাবে লড়তে পারে না এরা। তাই ইডি-সিবিআইকে হাতিয়ার করে প্রতিহিংসার রাজনীতি করে। আমি অন্য ধাতুতে তৈরি, মানুষের সামনে মাথা নত করব, দিল্লির জল্লাদদের কাছে নয়।” এরসঙ্গে সংবাদমাধ্যমের নীরবতার প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, “সংবাদমাধ্যমের সাহস নেই ওদের বিরুদ্ধে কিছু বলার। তাহলে ইডি-সিবিআই লাগিয়ে দেবে ওদের বিরুদ্ধেও।”

আরও পড়ুন:ত্যাজ্যপুত্র করুন বা ইস্তফা দিন: শাহ-পুত্রর জাতীয় পতাকার অবমাননায় সরব অভিষেক

এরপরই রাজ্যের বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলিকে আক্রমণ শানান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূল ছাত্রপরিষদের প্রশংসা করে তিনি বলেন, “মমতার সঙ্গে লড়ার আগে তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও তৃণমূল যুবর সঙ্গে লড়াইয়ে নামুন। ১০ গোল দেব বাম-বিজেপি-সিপিএমকে।” এছাড়াও শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদারদের তোপ দেগে অভিষেক বলেন, “ওরা বলছে আমরা রাজ্যের টাকা আটকে দিয়েছি। বিজেপি তোমরা চাও না মাংলার মানুষ ঘর পাক, ১০০ দিনের কাজ হোক, রাস্তা তৈরি হোক। তাই টাকা আটকে এত গর্ব।” এরপরই বিজেপি নেতাদের নাম ধরে ধরে অভিষেক বলেন, “আমি নাম নিয়ে বলছি, বেইমান-গদ্দার শুভেন্দু অধিকারী, সুকান্ত মজুমদার। দিলীপ ঘোষ গুণ্ডা। এরা চায় বাংলাকে অশান্ত করতে। ক্ষমতা থাকলে আমার বিরুদ্ধে মামলা করো।” একইসঙ্গে তিনি যোগ করেন, “আমার নাম নিয়ে ওরা কিছু বলে না। ক্ষমতা থাকলে বলো ‘তোলাবাজ অভিষেক’। ১০ দিনের মধ্যে ল্যাজে-গোবরে করে ছাড়ব।” আগামিদিনে কঠিন লড়াইয়ের বার্তা দিয়ে অভিষেক আরও বলেন, “অনেকে বলছে তৃণমূলকে শেষ করবে। তৃণমূল হল কাটবি যত বাড়বে তত। আমরা জীবন দিতে প্রস্তুত, প্রাণ দিতে প্রস্তুত। আমরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সংগ্রাম দেখে বড় হয়েছি, সুভাষ চন্দ্র, রবীন্দ্রনাথকে পড়ে বড় হয়েছি। যদি গলা কেটে দেয়, তাও কাটা গলা থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিন্দাবাদ বলব।”

আরও পড়ুন:আমরা চোর, ওরা সাধু! মেয়ো রোডের সমাবেশে বিরোধীদের ধুয়ে দিলেন তৃণমূল সুপ্রিমো

বিজেপিকে কটাক্ষের পাশাপাশি এদিন অভিষেক আরও বলেন, “আমরা ধর্ম পালন নিজের মতো করে করব, কিন্তু যখন মানুষের ভোটে জিতব তখন মানব ধর্ম সকল মানুষের সেবা করাই আমার প্রধান ধর্ম।” কর্মী সমর্থকদের বার্তা দিয়ে তিনি আরও বলেন, “তৃণমূলের ছাত্র যুবদের বলছি সময় করে ছুটির দিন দেখে পাড়ায় পাড়ায় ঘুরুন, যারা সমস্যায় আছে তাঁদের সহায়তা করুন। এটাই তৃণমূল। আর বিজেপিকে বলব, ১ মাসের মধ্যে এর ১০ ভাগের ১ ভাগ লোক জড়ো করে সভা করো, তারপর কথা বলতে আসবে।”