জানলা দিয়ে চিরকুট ছুড়ে বিপদ থেকে বাঁচলেন বধূ, স্বামী-শাশুড়ির বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের পরে প্রথমে তাঁরা ছিলেন পুনেতে। পরে কর্মসূত্রে স্বামীর বদলির কারণে তেলিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। সুমিত্রার অভিযোগ, এরপরই স্বামী ও শাশুড়ি মিলে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে শুরু করেন।

রাস্তা দিয়ে যেতে গিয়ে হঠাৎই একটি চিরকুট পেয়ে থমকে গিয়েছিলেন প্রতিবেশী (Neighbour)। খুলে দেখেন লেখা রয়েছে, “আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা চলছে, যত তাড়াতাড়ি পারেন আমার মাকে খবর দিন।“ সঙ্গে লেখা দুটি ফোন নম্বর। বিষয়ের আকস্মিকতায় কাটিয়ে তিনি ফোন করেন একটি নম্বরে (Number)। জানান চিরকুটের লেখার কথা। এরপরই দ্রুত পৌঁছন বধূর বাপের বাড়ির লোকজন। উদ্ধার করা হয় বানারহাটের (Banarhat) বধূ সুমিত্রা সরকারকে (sumitra sarkar)।

পুলিশ সূত্রে খবর, বানারহাট থানার তেলিপাড়ার বাসিন্দা পেশায় সেনাবাহিনীর (army) হাবিলদার বিনোদকুমার সাহার (Binodkumar Das) সঙ্গে ৫ বছর আগে ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হয় রায়গঞ্জের বাসিন্দা সুমিত্রা সরকারের। পরে তাদের বিয়ে হয়। তাদের ৩ বছরের একটি কন্যাসন্তান রয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, বিয়ের পরে প্রথমে তাঁরা ছিলেন পুনেতে। পরে কর্মসূত্রে স্বামীর বদলির কারণে তেলিপাড়ায় শ্বশুরবাড়িতে চলে আসেন। সুমিত্রার অভিযোগ, এরপরই স্বামী ও শাশুড়ি মিলে তাঁর উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন চালাতে শুরু করেন।

সুমিত্রার অভিযোগ, সম্প্রতি অত্যাচার চরমে ওঠে। ৫-৬ দিন খেতে না দিয়ে তাঁকে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়। কেড়ে নেওয়া হয় মোবাইলও। ফলে বাইরের কারও সঙ্গে যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। হুমকি দিয়ে বলা হয়, সুমিত্রাকে বিহারে রেখে এসে স্বামীর আবার বিয়ে দেওয়া হবে।আশা যখন প্রায় ছেড়েই দিয়েছিলেন তখন হঠাৎই মাথায় আসে একটি বুদ্ধি। শুক্রবার, সুমিত্রা বাঁচার আর্জি জানিয়ে বাপের বাড়ির ফোন নম্বর একটি চিরকুটে লিখে পথ চলতি পড়শিকে ছুড়ে দেন। এরপর ফলেই বড় বিপদ তেকে বাঁচলেন তিনি।

ঘটনার কথা জানতে পেরে ছুটে আসেন সুমিত্রার বাপের বাড়ির লোকজন। শুরু হয় দুপক্ষের মধ্যে বচসা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। তাদের উপস্থিতিতেই উদ্ধার করে ঘর থেকে বের করা হয় সুমিত্রাকে। রাতেই বানারহাট থানার বিন্নাগুড়ি ফাঁড়িতে স্বামী ও পরিবারের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন বধূ। পুলিশ সূত্রে খবর, ওই অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই শাশুড়িকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে।

ঘটনা পরিপ্রেক্ষিতে স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্যা সীমা দাস বলেন, “গতকাল আমি মেয়েটির লেখা চিরকুটের বিষয়ে জানতে পারি। আজকে সকালে ওর বাড়ির লোকেরা এলে আমিও ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি, চিরকুটে যা লেখা আছে তা সত্য। এরপর পুলিশের উপস্থিতিতে তাঁকে উদ্ধার করা হয়।”