প্রেমের টানে বাড়ি, পরিবার, চাকরি সব ছেড়েছিলেন। স্বপ্ন ছিল দু’জনে একসঙ্গে ঘর বাঁধবেন। তাই পরিবারের বারণ সত্ত্বেও প্রেমিকের কাছে দিল্লিতে এসেছিলেন। প্রেমিকের ফ্ল্যাটেই থাকতে শুরু করেছিলেন দু;জনে। কিন্তু প্রেমিককে বিয়ের প্রস্তাব দিতেই সম্পর্কের অবনতি ঘটে। তা চরমে উঠতেই প্রেমিকাকে নৃশংসভাবে খুন করেন প্রেমিকা।
আরও পড়ুন:সল্টলেকে যুবকের মৃ*ত্যু, আত্মহ*ত্যা প্ররোচনার অভিযোগে গ্রেফতার প্রেমিকা ও তার বন্ধু
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে, এক তরুণীকে খুন করে তার দেহ কুপিয়ে ৩৫ টুকরো করা হয়েছে। সেই টুকরোগুলো ফেলা হয়েছে দিল্লির নানা জায়গায়। ঘটনা ঘটেছিল ১৮ মে। তরুণীর নিখোঁজ হয়ে যাওয়ার সূত্র ধরে ঘটনাক্রম সাজায় পুলিশ। এরপর পরিবারের লোকজনের বয়ান শোনা হয়। পরে পুলিশ জানতে পারে এর পেছনে এক অন্য ঘটনা লুকিয়ে আছে। ধীরে ধীরে রহস্যের সমাধান হয়। ধরা পড়ে অপরাধী। ধৃতের নাম অফতাব আমিন পুনাওয়ালা। ওই তরুণীরই প্রেমিক।

পুলিশ আরও জানায়, মৃত তরুণীর নাম শ্রদ্ধা। মুম্বইয়ের একটি মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানির কল সেন্টারে কাজ করতেন ২৬ বছরের শ্রদ্ধা। দিল্লির বাসিন্দা আফতাবের সঙ্গে পরিচয় হয় তাঁর। মুম্বই থেকে দিল্লিতে এসে আফতাবের সঙ্গে থাকতে শুরু করে তিনি। তাঁরা লিভ-ইন করতেন বলে জানা গেছে।

মেহরুলিতে একটি ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে আফতাব আর শ্রদ্ধা থাকতেন। তদন্তকারীরা বলছেন, ধৃতকে জেরা করে জানা গেছে, প্রায়ই তাঁদের মধ্যে নানা টুকিটাকি বিষয় নিয়ে ঝামেলা লেগে লাগত। একদিন অশান্তি চরমে ওঠে। রাগের মাথায় শ্রদ্ধাকে গলা টিপে খুন করে আফতাব। শ্রদ্ধার শরীর নিথর হয়ে গেল আফতাব ভয় পেয়ে যায়। অপরাধ ঢাকতে মেয়েটির দেহ ৩৫ টুকরো করে কেটে ফেলে । এরপর বড় একটি ফ্রিজার কিনে এনে তার মধ্যে টুকরোগুলো রেখে দেয়। এরপর সময় বুঝে দিল্লির নানা জায়গায় সেই টুকরোগুলো ফেলে দিয়ে আসে।

তবে অপরাধ ধামাচাপা দিতে কম চেষ্টা করেনি আফতাব। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। শ্রদ্ধার বাবা মেয়েকে না পেয়ে মুম্বইয়ে মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেন। কিন্যতু কোনওভাবেই যোগাযোগ করতে না পেরে শেষমেশ দিল্লিতে এসে শ্রদ্ধা যে ফ্ল্যাটে থাকতেন সেখানে গিয়ে দেখেন দরজায় তালা বন্ধ। কোনও বিপদ হয়েছে বুঝে পুলিশকে সব জানান। শ্রদ্ধাকে খুঁজতে তল্লাশি শুরু করে পুলিশ। আফতাবের খোঁজও শুরু হয়। এরপরেই রহস্যের উন্মোচন হয়। নৃশংস হত্যাকাণ্ডের ঘটনা সামনে আসে।

পুলিশের কাছে ঘাতক আফতাব স্বীকার করেছে, শ্রদ্ধাকে খুন সেইই করছে। শ্রদ্ধা তাঁকে বিয়ে করতে নাছোড়বান্দা ছিলেন। তাই রাগের মাথায় এই খুন করে বসে আফতাব।
