শহিদ দিবসকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক উত্তাপ বড়ল নন্দীগ্রামে(Nandigram)। মঙ্গলবার সকালে শহিদ তর্পণ অনুষ্ঠানে গিয়ে নাম না করে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নিশানা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী(Shuvendu Adhikari)। দাবি করেছিলেন, “সিপিএমকে সাফ করেছি। চব্বিশের নন্দীগ্রাম দিবসের আগে গ্যারেজ করে দেব।” তাঁর পাল্টা তোপ দেগে নাম না করে শুভেন্দুকে ‘অমাবস্যার চাঁদ’ বলে কটাক্ষ করলেন তৃণমূল নেত্রী তথা রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য(Chandrima Bhattacharya)। জানালেন, উনি নিজেই গ্যারেজ হয়ে যাবেন।

এদিন নাম না করে শুভেন্দুকে নিশানা করে চন্দ্রিমা বলেন, “শুভ-ইন্দু নন, উনি আসলে অমাবস্যার চাঁদ। এক ভুঁইফোঁড় বিজেপি নেতা আজ শহিদ তর্পণ করতে গেছেন। গেছেন কার সঙ্গে? যারা সেদিন শহিদ করেছিল, যাদের হাত রক্তে রাঙ্গা তাঁদের হাত ধরে আজ শহিদ তর্পন করতে গেছেন।” এরপর তিনি বলেন, “ওখানে গিয়ে মিডিয়ার সামনে তিনি বলছেন, “আগামি ১৪ মার্চ উনি নাকি গ্যারেজ করে দেবেন। উনি নিজে গ্যারেজ হয়ে যাবেন। গ্যারেজ ওনার কপালে লেখা আছে।” আরও যোগ করে চন্দ্রিমা বলেন, “এত অহং ভালো নয়, এত দম্ভ ভালো নয়। ওই দর্প কীভাবে চূর্ণ হয় তা নন্দীগ্রামের মানুষ দেখিয়ে দেবে। শহিদ দিবসে ‘গ্যারেজ’ করে দেওয়ার কথা যাঁরা বলতে পারে, তাঁরা শহিদদের প্রতি কতটা শ্রদ্ধাশীল, তা বোঝাই যাচ্ছে।”


এছাড়াও মঙ্গলবার নন্দীগ্রামে শহিদ দিবসের মঞ্চে দাঁড়িয়ে বিজেপিকেও কড়া ভাষায় আক্রমণ শানান চন্দ্রিমা। তিনি বলেন, “আজ এই শহিদ দিবসের মঞ্চে আমাদের অঙ্গিকার করতে হবে যে রাজনৈতিক দল এখন দিল্লি শাসন করছে, ওদেরকে রাজনৈতিক লড়াইয়ের মাধ্যমে শহিদ করার। আমরা মারব না। রক্তের খেলা খেলব না। শুধু মানুষের ভালবাসায় রাজনৈতিক লড়াই দিয়েই ওদের শহিদ করব। এই শপথই হোক আজ শহিদ দিবসের মূল কথা।” কেন্দ্রের প্রকল্পের বিরুদ্ধেও সরব হয়ে রাজ্যের মন্ত্রী বলেন, “স্বাস্থ্যসাথী থেকে টুকে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প করেছে ওরা, উজ্জ্বলায় একবার ফ্রি দিয়ে এখন গ্যাসের বেলুন উড়িয়ে দিচ্ছেন। ১২০০ টাকা গ্যাসের দাম। ফলে ওভেনে ন্যাকড়া চাপা দিয়ে রাখতে হচ্ছে। মানুসের গ্যাস কেনার ক্ষমতা নেই। জনধন যোজনায় আধার প্যানের লিঙ্ক করতে হবে। যদি না করা হয় তবে ১০০০ টাকা জরিমানা দিতে হবে। ২০০ টাকা সাইবার ক্যাফে দিতে হবে তবে জনধন হবে। এই তো ওদের মানুষকে লুঠ করার প্রকল্প। অথচ বাংলাকে দেখুন কন্যাশ্রী, স্বাস্থ্যসাথী, লক্ষ্মীর ভান্ডার, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ডের মত প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বদা তিনি মানুষের পাশে।”

উল্লেখ্য, ১৪ মার্চ, নন্দীগ্রাম দিবসে শুভেন্দু অধিকারীর কর্মসূচি ঘিরে আইনি জটিলতা তৈরি হয়েছিল মঙ্গলবার। সোমবার কলকাতা হাই কোর্ট অবশ্য সেই সভার অনুমতি দেয় একাধিক শর্তসাপেক্ষে। আদালতের তরফে জানানো হয়, মঙ্গলবার সকাল ৮টা থেকে সকাল ১০টার মধ্যে সভা করতে হবে শুভেন্দুকে। সকাল সাড়ে ১০টার মধ্যে জায়গা খালি করে দিতে হবে। শান্তিপূর্ণ মিছিল করতে হবে। যাতে জনজীবন ব্যাহত না হয়, সেদিকে অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে মিছিলকারীদের। এরপর বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টের মধ্যে তৃণমূল মিছিল করতে পারবে।

