নাসিক থেকে মুম্বই পর্যন্ত কৃষকদের মহামিছিল আপাতত মহারাষ্ট্রের থানে জেলায় গিয়ে অপেক্ষা করছে। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী একনাথ শিন্ডের সঙ্গে আলোচনার পর কৃষকনেতারা আপাতত থানে জেলায় অবস্থানের সিদ্ধান্ত নেন।আন্দোলনকারী নেতারা জানিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রী দাবি পূরণে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। আজ শুক্রবার রাজ্য বিধানসভায় সেই ঘোষণা হওয়ার কথা। প্রতিশ্রুতি পূরণে সরকার কতটা আন্তরিক, পদযাত্রীরা তা বুঝতে চান। সেই কারণে মুম্বই না এসে কৃষকরা থানে জেলায় অপেক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।

থানে থেকে মুম্বাইয়ের দূরত্ব মাত্র ৩০ কিলোমিটার। এ রাজ্যের নাসিক থেকে রাজধানী মুম্বই পর্যন্ত ২০০ কিলোমিটার পথ হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কৃষকেরা, যাতে ৫ বছর আগে দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি সরকার মেনে নেয়। এবারের মবামিছিল শুরুর অন্যতম প্রধান কারণ, পেঁয়াজের দাম অসম্ভব পড়ে যাওয়া। নাসিক ভারতের প্রয়োজনের বেশির ভাগ পেঁয়াজ উৎপাদন করে। নানা কারণে এবার পেঁয়াজের দাম কৃষকেরা পাচ্ছেন না। বড় শহরের খুচরা বাজারেই পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে মাত্র ১৫ টাকা কেজিতে! উৎপাদকেরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে মবামিছিল শুরুর সময় রাজ্য সরকার কৃষকদের কুইন্টাল প্রতি ৩০০ টাকা ভর্তুকির কথা ঘোষণা করে। কিন্তু কৃষকেরা কুইন্টাল প্রতি ৬০০ টাকা ভর্তুকি চান।

গতকাল সিপিএম পরিচালিত অল ইন্ডিয়া কিষাণ সভার নেতাদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী শিন্ডে ও উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডনবিশ বৈঠক করেন। তাতে কুইন্টাল প্রতি সাহায্য কতটা বাড়ানো যায়, তা খতিয়ে দেখার প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। অন্যান্য দাবির অধিকাংশ মেনে নেওয়ার কথাও জানানো হয়।

কৃষকনেতা জে পি গাভিট, অশোক ধাওলে, অজিত নাওয়ালে, বিনোদ নিকোলে ও ইন্দ্রজিৎ গাভিট সংবাদমাধ্যমকে জানান, ঠিক হয়েছে, মুম্বই না এসে কৃষকেরা থানেতে অবস্থান করবেন। তাঁরা দেখতে চান, সরকারি নির্দেশ চারদিনের মধ্যে জেলায় জেলায় পৌঁছাচ্ছে কি না। তাঁরা জানান, স্রেফ মৌখিক প্রতিশ্রুতিতে তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করবেন না।


কৃষকদের অন্য দাবিগুলোর মধ্যে রয়েছে ১২ ঘণ্টা নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ, বকেয়া কৃষিঋণ মকুব, চাষে লোকসানের ক্ষতিপূরণ, জমি অধিগ্রহণের উপযুক্ত মূল্য এবং আদিবাসী কৃষকদের জঙ্গলের অধিকার আইন বলবৎ করা। নেতারা জানিয়েছেন, কৃষিঋণ মকুবের তালিকা থেকে ৮৮ হাজার ৮৪১ জন কৃষকের নাম বাদ পড়েছে। সরকার তাঁদের সেই সুবিধা দিতে রাজি হয়েছে। প্রতিশ্রুতি পালন হচ্ছে কি না, তা দেখে তাঁরা মহামিছিল সম্পর্কে পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেবেন।

