Friday, November 7, 2025

স্নেহাশিসের বিরুদ্ধে বি.স্ফোরক মোম

Date:

Share post:

বধূ নির্যাতনের গুরুতর অভিযোগ সিএবি প্রেসিডেন্ট স্নেহাশিস গাঙ্গুলীর বিরুদ্ধে। দীর্ঘ প্রায় আড়াই দশক ধরে বধূ নির্যাতনের অভিযোগ বাংলার প্রাক্তন এই ক্রিকেটারের বিরুদ্ধে। অভিযোগ করেছেন স্নেহাশিসের স্ত্রী মোম গাঙ্গুলী। মোমের দাবি, নতুন সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পর অত্যাচার বাড়তে থাকে। ডিভোর্স মামলা, তার উপর ইনজাংশন। ঠাকুরপুকুর থানায় এফআইআর এবং পুলিশের অস্বাভাবিক নীরবতা। যারে জেরে স্নেহাশিসপত্নী বাধ্য হয়েছেন অধিকার বুঝে নেওয়ার লড়াইয়ে নামতে। চলছে ‘ক্ষমতা প্রয়োগ’-এর চিরাচরিত পদক্ষেপ। কিন্তু মোমও এবার অধিকার বুঝে নিতে বধ্যপরিকর।

আরও পড়ুন:সংসার সামলে বিড়ি বাঁধেন, কুঁড়েঘরের পঞ্চায়েত প্রধানের জীবন কাহিনী আপনাকেও গর্বিত করবে

মোমের এফআইআর বিস্ফোরক। বিশ্ববাংলা সংবাদে বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরেই অস্বস্তি শুরু গাঙ্গুলী পরিবারে। এফআইআরে করা অভিযোগ যদি সত্য হয়, তাহলে গাঙ্গুলী পরিবারের সম্মান ধুলোয় মিশে যেতে বাধ্য। বৃহস্পতিবারের কিস্তিতে সেকথা বলা হয়েছে। আজ এফআইআরে বিস্ফোরক কিছু অভিযোগের কথা বলা হবে। তবে তার আগে আরও কিছু না বলা কথা যা এফআইআরে রয়েছে।

মোম অভিযোগ করছেন, পড়াশোনা আর তাঁর নাচের কেরিয়ার ধুলোয় মিশিয়ে দিতে বাড়ি থেকে বেরনোর উপর নজরদারি রাখা হত। বাড়ির নিরাপত্তারক্ষীর ও পরিচারকরা মোমের যাতায়াতের উপর নজর রাখতেন। বীরেন রায় রোডের বাড়ি থেকে বেরিয়ে বাপের বাড়ি গেলে ফিরে আসার পর ঢুকতে দেওয়া হত না। বাড়িতে ঢোকার অনুমতি মিললে অমানবিক আচরণ করা হত। চলত গালিগালাজ, কন্যার সামনেই মারধর। মেয়ে স্নেহার বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে সে বাবার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে শুরু করে। ক্রিকেট, ব্যাট বা উইকেট দিয়ে চলত দেদার মারধর। আশ্চর্যের বিষয় হল সেগুলি মোমই কিনে দিতেন। দৈনন্দিন খরচের জন্য কোনও টাকা-পয়সাও দেওয়া হত না। ধরা যাক পরিবারের সকলে কোনও অনুষ্ঠানে যাবেন। মোমও তৈরি হয়েছেন। হঠাৎ স্নেহাশিস বললেন, মোমকে যেতে হবে না। এর প্রতিবাদ করলেও শুরু হত অত্যাচার, গালাগালি, মারধর। ক্রিকেট মাঠের স্নেহাশিস আর বীরেন রায় রোডের স্নেহাশিসের মধ্যে তখন আসমান-জমিন ফারাক। বাইরে কোনও সময় ভুল করেও যদি সকলে একসঙ্গে বেরোতেন, সেক্ষেত্রেও অদ্ভুত সব অভিজ্ঞতার মুখোমুখি হতে হত। স্নেহাশিস কখন কী করবেন সেই ভয়ে মোম অন্য জায়গায় ঘুমোতেন। এমন অভিজ্ঞতাও হয়েছে, গভীর রাতে চেয়ার তুলে মোমকে মারতে গিয়েছেন স্নেহাশিস। ঘুম না ভাঙলে হাসপাতালে জায়গা হত মোমের।

এবার সেই ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতার কথা এফআইআরে লিখছেন মোম গাঙ্গুলী। কী লিখছেন? লিখছেন, স্নেহাশিসের অত্যাচারের মাত্রা, সন্দেহবাতিক মন এবং ঘৃণা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছিল সে নিয়ে। মোম বাইরে থেকে বীরেন রায় রোডের বাড়িতে ফিরলে সমস্ত পোশাক পরিচ্ছদ খুলে স্নেহাশিসের সামনে তাঁকে নগ্ন হয়ে দাঁড়াতে হত। স্নেহাশিস গোপন অঙ্গ পরীক্ষা করতেন। সন্তুষ্ট হলে তবেই শোয়ার ঘরে ঢোকার অনুমতি মিলত। রোজই ঘটনার পূণরাবৃত্তি হত। মোমের প্রতিবাদ গায়ে মাখত না স্নেহাশিস। ২৯ মার্চ কিংবা এপ্রিলের ৪ তারিখে এই ঘটনাই ঘটেছিল। স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কটা প্রভু-ভৃত্যের জায়গায় পৌঁছেছিল। মেয়ের ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে মোম প্রকাশ্যে আনেননি সেকথা।
স্নেহাশিসের বিবাহবহির্ভূত বহু সম্পর্ক মোম জানতে পেরেছিলেন। পার্কস্ট্রিটের রেস্তোরাঁর মহিলা কর্মীর গোপনীয় মেসেজ দেখতে পেয়েছিলেন মোম। মেয়ে বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তার কাছেও এসে যায় স্নেহাশিসের কিছু ছবি, কিছু মোবাইল চ্যাট। একটি ব্যবসায়ী সংস্থার কর্ণধারের স্ত্রীর সঙ্গে এখন নতুন সম্পর্ক। মেয়েকে এসব জিনিস থেকে সরিয়ে রাখতেই পড়াশোনার জন্য বিদেশে পাঠিয়ে দেন মোম।
সিএবি সভাপতির বিরুদ্ধে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আনতে চাননি মোম। এক ব্যবসায়ী সংস্থার কর্তার বর্তমান স্ত্রীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার পরেই নানা আইনি নোটিশ ধরাতে শুরু করে স্নেহাশিস। বাধ্য হয়ে মোম গাঙ্গুলীও আইনি পদক্ষেপ করতে বাধ্য হচ্ছেন। ঘনিষ্ঠ মহলে মোম বলছেন, স্নেহাশিসই বাধ্য করছে গাঙ্গুলী পরিবারের সম্মান রাস্তায় টেনে নামাতে। আত্মসম্মান রক্ষার জন্য তাই তিনিও আইনি পদ্ধতিতেই শেষ দেখে ছাড়তে চান।
পুলিশে এফআইআরের নথি আমাদের হাতে এসেছে। তার ভিত্তিতেই আমরা এই খবর করছি। যদি সংশ্লিষ্ট কারওর এবিষয়ে কোনও বক্তব্য থাকে, আমাদের কাছে তা পাঠালে প্রকাশ করা হবে।
কিন্তু ঘটনা এটাই, গাঙ্গুলী পরিবারের অন্দরমহলে স্নেহাশিস ক্রমশ একা।

 

 

spot_img

Related articles

ব্রিটিশ-তোষণে লেখা ‘জন গণ মন’! বিজেপি সাংসদের অপমানজনক মন্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ তৃণমূলের

ব্রিটিশদের তোষণ করতেই নাকি লেখা হয়েছিল ‘জন গণ মন’। ভারতের জাতীয় সঙ্গীত নিয়ে এই ন্যক্কারজনক মন্তব্য করে ফের...

চিংড়িঘাটা মোড়ে যানজট কমাতে নতুন সেতু নির্মাণের উদ্যোগ কেএমডিএ-র

ইএম বাইপাসের চিংড়িঘাটা মোড়ে দীর্ঘদিনের যানজট সমস্যার সমাধানে বড় পদক্ষেপ নিতে চলেছে কেএমডিএ। শান্তিনগর খালের উপর বর্তমান সরু...

নামের বানানভুল থেকে ডিটেনশন আতঙ্ক! এসআইআর আতঙ্কে মানসিক চাপে সাঁইথিয়ায় মৃত্যু বৃদ্ধের

ইলামবাজারের ঘটনার পর ফের এসআইআর আতঙ্কে মৃত্যু বীরভূমে। হৃদরোগে প্রয়াত হলেন সাঁইথিয়া পুরসভার ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা বিমান...

বিহারে প্রথম দফায় অতিরিক্ত ভোটদানে নতুন সমীকরণ! চিন্তায় শাসক শিবির

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের প্রথম দফায় ভোটদানের হার নিয়ে রাজনৈতিক চর্চা তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার ১২১টি আসনে ভোটগ্রহণ শেষ হয়েছে। নির্বাচনী...