শালীনতার সীমা লংঘন করে আদালত কক্ষের মধ্যে তুমুল ভর্ৎসিত হলেন ‘মাথা মোড়ানো’ কংগ্রেসের স্বঘোষিত নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী (Kaustav Bagchi)। মঙ্গলবার, গ্রুপ ডি চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলের অনুমতি সংক্রান্ত মামলার শুনানির সময় তাঁকে তীব্র ভর্ৎসনা করেন কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায় (Indraprasanna Mukherjee)। এমনকী, আদালতে ঢোকা বন্ধ করে দেবেন বলেও হুঁশিয়ারি দেন।

এদিন বিকেলে Group D চাকরিপ্রার্থীদের মিছিলের অনুমতি সংক্রান্ত মামলার শুনানি বিকেল ৪টেয় করবেন বলে জানান বিচারপতি মুখোপাধ্যায়। কিন্তু আবেদনকারীদের আইনজীবী কৌস্তভ তাতে বেগড়া দেন। বুধবার সকালে মামলার শুনানির আর্জি জানান। তাঁর কথায়, “সমস্যা হলে আমাদের হবে। তাহলে বুধবার আদালতের শুনানি করতে সমস্যা কোথায়!” এদিকে মামলাটির দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। সেই প্রসঙ্গ টেনে বিচারপতি মুখোপাধ্যায় বলেন, মামলাটির দ্রুত শুনানির জন্য আবেদন জানানো হয়েছে। সুতরাং, মঙ্গলবার বিকেলেই শুনানি হবে। এরপরেই আদালতের সব শালীনতার সীমালংঘন করে স্বঘোষিত কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী বলেন, “আমি বলতে বাধ্য হচ্ছি। মামলাটি শুনতে এই আদালতের ব্যক্তিগত স্বার্থ রয়েছে। ব্যক্তিগত স্বার্থে আজই বিচারপতি মামলাটি শুনতে চাইছেন।”

এই মন্তব্যে প্রবল ক্ষুব্ধ হন বিচারপতি ইন্দ্রপ্রসন্ন মুখোপাধ্যায়। তীব্র ধমক দিয়ে তিনি বলেন, “এই কথা আপনি বলতে পারেন না। ২০ বছর ওকালতি করছি। দ্রুত শুনানির আর্জিতে কী করে পদক্ষেপ করতে হয় জানি। কিন্তু একজন আইনজীবী হিসাবে আদালতে কী ধরণের আচরণ করতে হয় সেটা বোধ হয় আপনার জানা নেই। আইনজীবী হিসাবে নিদের মর্যাদা বজায় রাখুন। নইলে বার কাউন্সিলকে আপনার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করতে বলব। তখন আদালতে ঢোকা বন্ধ হয়ে যাবে। আদালত কী ভাবে চলবে সেটা আপনি ঠিক করে দিতে পারেন না।”
আরও পড়ুন- “৩৬ হাজার নয়, ৩২ হাজার”, চাকরি বাতিলে নির্দেশ-ই সংশোধন বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায়ের

হঠাৎ করে সংবাদ শিরোনামে আসা কৌস্তভ বাগচী মাথা ন্যাড়া করে বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন রকম মন্তব্য করে বেড়াচ্ছেন। যদিও তার দল কংগ্রেসের কোনও কমিটিতে তাঁর স্থান হয়নি। এজলাসকেও তিনি রাজনৈতিক মঞ্চ ভেবেছেন কি না- তাঁর এই মন্তব্যে সেটা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছে রাজনৈতিক মহল। তবে, এক্ষেত্রে ‘বেশি বাড়াবাড়ি’ করলে তাঁকে যে শাস্তির মুখে পড়তে হতে পারে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন বিচারপতি।