পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে তাদের ক্ষমতার বিষয়ে সতর্ক করলেন কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম।সোমবার তিনি বললেন, প্রার্থীর কথা ছেড়ে দিলাম। কিন্তু কমিশনের উপর ভোটারদের আস্থা প্রয়োজন। আপনারা নিরপেক্ষ সংস্থা। আপনাদের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়নের সময় বাড়ানো প্রসঙ্গে হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেছেন, আগের বারের তুলনায় মনোনয়ন পেশের সময় কম। প্রতিদিন ৪ ঘণ্টা মনোনয়ন পেশের জন্য অপর্যাপ্ত। এ প্রসঙ্গে কমিশন বলে, মনোনয়নের সময় চাইলে একদিন বাড়ানো যেতে পারে। ৯ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত যে মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল, তা ৯ জুন থেকে ১৬ জুন পর্যন্ত করা যেতে পারে। বিচারপতি বলেন, সে ক্ষেত্রে পঞ্চায়েত ভোট ১৪ জুলাই করাতে হবে।
অতীতে অভিজ্ঞতা থেকে এবারেও ত্রুটি থাকা উচিত নয়। কমিশনের ভূমিকা সন্তোষজনক হওয়া উচিত। আপনাদের ক্ষমতা সম্পর্কে সচেতন হোন। কমিশন চাইলে সঠিক পদক্ষেপ করতে পারে। কিন্তু কমিশন পুরো বিষয়টি হাইজ্যাক করে নিজেদের কাছে রেখেছে।

যদিও আজকেও মনোনয়ন জমা নিয়ে যুক্তি পাল্টা যুক্তি দেখা গেল প্রধান বিচারপতির এজলাসে।কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায় বললেন, গত বার ২ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি দিয়েছিল কমিশন । ৯ এপ্রিল পর্যন্ত মনোনয়নের দিন ছিল। তখনও ৭ দিন সময় ছিল। এর পাল্টা প্রধান বিচারপতি বললেন, এ বার ৯ জুন থেকে ১৫ জুন পর্যন্ত মনোনয়ন জমা দেওয়ার সময় দিলেও মাঝে ১১ জুন ছুটির দিন ছিল। ওই দিন মনোনয়ন দেওয়া হয়নি।

প্রধান বিচারপতিও রাজ্যের কৌঁসুলি কল্যাণের কাছে জানতে চান, ভোট ঘোষণায় রাজ্যের ভূমিকা কী? এমনকী, এ বার বিরোধীদের দাবি মেনে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে পঞ্চায়েত ভোট করানোর কথাও বললেন হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি।তিনি বলেন, হনুমান জয়ন্তীর সময় আমরা বলেছিলাম সাধারণ মানুষের মনোবল বাড়াতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে। তারা রাজ্যকে সহযোগিতা করতে এসেছিল। এ ক্ষেত্রেও কমিশন চাইলে সহযোগিতা চাইতে পারে। কমিশন ৬ থেকে ১০টি জেলাকে স্পর্শকাতর ঘোষণা করেছে। প্রয়োজনে সেখানে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখা যেতে পারে।

পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করা প্রসঙ্গে প্রধান বিচারপতি বললেন, নির্বাচনে কেন্দ্রীয় মোতায়েন করলে ভাল হয়। এ ব্যাপারে চুক্তি ভিত্তিক কর্মী বা সিভিক ভলিন্টিয়ারদের ভোটের কাজে ব্যবহার করা প্রসঙ্গেও সতর্ক করে আদালত বলেছে, এ বিষয়ে অভিযোগ রয়েছে। মনে রাখতে হবে, সিভিক কিন্তু পুলিশ নয়। তারা পুলিশকে সাহায্য করার কাজে যুক্ত।
