Monday, August 25, 2025

কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই সারা রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট, হাই কোর্টের রায় বহাল সুপ্রিম কোর্টে

Date:

Share post:

রাজ্য সরকার এবং নির্বাচন কমিশনের আনা লিভ পিটিশন খারিজ হয়ে গেল সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court)। রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে সর্বত্র জায়গায় কেন্দ্রীয় বাহিনীর মোতায়নের হাই কোর্টের রায় বহাল রাখল সুপ্রিম কোর্ট। মঙ্গলবার, শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট জানায়, পশ্চিমবঙ্গে একই দিনে সব জায়গায় পঞ্চায়েত নির্বাচন হবে। সে ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বজায় রাখতে কলকাতা হাই কোর্ট (Calcutta High Court) যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে শীর্ষ আদালত হস্তক্ষেপ করবে না। এই কথা বলে রাজ্য ও রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) আনা SLP খারিজ করে দেয় সুপ্রিম কোর্ট।

৮ জুলাই রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচন। প্রথমে স্পর্শকাতর বুথে কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়ে ভোট করার কথা বললেও, মনোনয়ন পর্বে বিক্ষিপ্ত অশান্তির পরে মামলার প্রেক্ষিতে রাজ্যের সব জেলাতেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছিল হাই কোর্ট। গত বৃহস্পতিবার ওই নির্দেশ দেয় উচ্চ আদালত। একই সঙ্গে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে কেন্দ্রীয় বাহিনী চেয়ে আবেদন করার নির্দেশ দেওয়া হয় রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। প্রথমে আদালতের নির্দেশ মেনে নেওয়ার কথা বললেও, পর অবস্থান বদল করে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। এই নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে শনিবার শীর্ষ আদালতে আবেদন করে কমিশন।সোমবার সুপ্রিম কোর্টে কমিশন জানায়, হাই কোর্ট যে নির্দেশ দিয়েছে, তা কার্যকর করা সম্ভব নয়। কারণ, ভোটে নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে রাজ্য। এ বিষয়ে অনুরোধ করা কমিশনের কাজ নয়।

এদিন, সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিভি নাগরত্ন এবং বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চে মামলার শুনানি হয়। রাজ্যের আইনজীবী বলেন, রাজ্যের সব বুথ স্পর্শকাতর নয়। যেগুলি স্পর্শকাতর সেগুলির জন্য তারা বাহিনী চাইবেন। বাকিগুলির জন্য রাজ্যের পুলিশ যথেষ্ট সমর্থ। অন্য রাজ্য থেকেও পুলিশ চাওয়া হয়েছে। সব রকম প্রস্তুতি নেওয়া হয়ে গিয়েছে। এই অবস্থায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে হলে আবার পরিকল্পনা বদল করতে হবে। বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, ‘‘আপনারা পাঁচ রাজ্য থেকে পুলিশ চেয়েছেন। তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীতে অসুবিধা কোথায়? আর হাই কোর্ট কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করতে বলেছে। খরচ তো দেবে কেন্দ্র। আপনাদের অসুবিধা কী? ’’

রাজ্য নির্বাচন কমিশনের আইনজীবী বলেন, ‘‘নির্বাচন ঘোষণার পরের দিনই মামলা হয়। মনোনয়ন পর্বে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছিল। রাজ্যের পুলিশ সহযোগিতায় মনোনয়ন কেন্দ্রের ১ কিমি পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। নিরাপত্তার বিষয়টি রাজ্য দেখে। কিন্তু হাই কোর্ট নির্বাচন কমিশনকে সরাসরি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে।

এর প্রেক্ষিতে বিচারপতি নাগরত্ন বলেন, ‘‘নিরাপত্তা ব্যবস্থা আপনাদের উপর না হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে মাথা ব্যাথা কেন? আপনারা আপনাদের কাজ করুন। যেখান থেকেই বাহিনী আসুক, আপনাদের কী সমস্যা?’’

বিচারপতি নাগরত্ন আরও জানান, ‘‘ভোটে কোনও রকম অশান্তি প্রত্যাশিত নয়। অতীতে রাজ্যে নির্বাচনে হিংসার ঘটনা ঘটেছে। এই অবস্থায় পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে হাই কোর্ট যে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নির্দেশ দিয়েছে, সেখানে অসুবিধার কিছু দেখছি না।’’ এরপরে রাজ্য ও নির্বাচন কমিশনের করা এসএলপি খারিজ করে কলকাতা হাই কোর্টের রায় বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।

spot_img

Related articles

কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি: দু-মলাটে বাংলার দুর্গোৎসবের ৪৩৪ বছরের ইতিহাস

রবিবাসরীয় সন্ধেয় গড়িয়াহাটের একটি ব্যাঙ্কয়েটে আড্ডার আবহে প্রকাশিত হল সাংবাদিক-লেখক সম্রাট চট্টোপাধ্যায়ের বই 'কলকাতার সর্বজনীন পুজো ডিরেক্টারি'। উপস্থিত...

তৃণমূল–সমাজবাদী পার্টির পথে এবার আম আদমি পার্টি! জেপিসিতে থাকছে না আপও 

সংবিধান সংশোধনী বিল খতিয়ে দেখতে গঠিত যৌথ সংসদীয় কমিটি (জেপিসি) থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিল আম আদমি পার্টি।...

মোদির বিরুদ্ধে সরব! হিটলারি কোপে লাদাখের সোনম ওয়াংচু

দফা এক দাবি এক। লাদাখের জন্য একই দাবিতে আজও অনড় সমাজকর্মী সোনম ওয়াংচু (Sonam Wangchuk)। লাদাখের জমি, যা...

শান্তিপুরে মহিলা স্বয়ম্ভর গোষ্ঠীর ভোটে গোহারা বিজেপি! ২৬-৪-এ জয়ী তৃণমূল 

এসআইআর ইস্যু নিয়ে রাজ্যে বিজেপির মাতামাতির মধ্যে নদিয়ার শান্তিপুরে মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ক্লাস্টার কমিটির নির্বাচনে বড় সাফল্য পেল...