চলতি মাসের গোড়াতেই শতাব্দীর অন্যতম ভয়ঙ্কর রেল দুর্ঘটনার (Rail Accident) সাক্ষী হয়েছিলেন দেশবাসী। গত ২ জুন বালাসরের বাহানাগা বাজার স্টেশনের (Bahanaga Bazar Station, Balasore) কাছে করমণ্ডল এক্সপ্রেস (Coromandel Express) দুর্ঘ.টনার স্মৃতি এবং ভীতি এখনও মানুষের মনে টাটকা। বড়সড় প্রশ্ন উঠেছে রেলের সুরক্ষা (Railway Safety) নিয়ে। প্রায় ৩০০ জনের কাছাকাছি মৃত এবং আহত এর সংখ্যা ১০০০ ছাড়িয়ে ছিল বলে জানা যায়। প্রাথমিকভাবে চালকের ঘাড়ে দোষ চাপালেও পড়ে রেলের তরফ থেকে সিগন্যালিং- এর ত্রুটিকেই দায়ী করা হয়। এরপর তদন্ত কমিটি গঠন করে রেল। বৃহস্পতিবার রেলওয়ে বোর্ডের কাছে সেই রিপোর্ট জমা দিয়েছে ‘কমিশন অব রেলওয়ে সেফটি’ (Commission of Railway Safety)। কিন্তু রিপোর্টে কী আছে তা নিয়ে একটি শব্দও খরচ করছেন না রেলের আধিকারিকরা। তাহলে কি নিজেদের অপদার্থটা ঢাকতে মুখে কুলুপ রেলকর্তৃপক্ষের?

বাহানাগা বাজার স্টেশনের কাছে লুপ লাইনে ঢুকে পড়েছিল করমণ্ডল এক্সপ্রেস। ওই লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা মালগাড়িতে ধাক্কা মারলে কার্যত ছিটকে পড়ে ট্রেনের বগিগুলি। লাইনচ্যুত হয় যশবন্তপুর এক্সপ্রেসও। ঘটনার পর প্রথম থেকেই সঙ্কেত ব্যবস্থা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। স্বয়ংক্রিয় সঙ্কেত ব্যবস্থা কি নিয়ন্ত্রণ করছিলেন কেউ? কেন সঠিক সুরক্ষা ব্যবস্থার দিকে নজর দেয়া হয়নি এ প্রশ্ন তুলেছিলেন বিরোধীরা। প্রাথমিকভাবে মৃত এবং আহত এর সংখ্যাটা চেপে যাওয়ার চেষ্টা করে কেন্দ্রীয় সরকার বলে অভিযোগ। দুর্ঘটনার পরের দিনই ঘটনাস্থলে পৌঁছে যান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রেলমন্ত্রী এবং ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি সেখানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিও গিয়েছিলেন। সূত্রের খবর দুর্ঘটনায় মৃতের সংখ্যাটা বেড়েছে কারণ আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এক ব্যক্তিরও মৃত্যুর খবর এসেছে। রেলের গাফিলতি এবং অপদার্থতার জন্যই যে এত বড় এক দুর্ঘটনা সে কথা স্পষ্টতই বুঝতে পারেন দেশবাসী। দোষ ঢাকতে কেন্দ্রীয় সরকারের নিয়ন্ত্রণ রেল সিবিআই (CBI) তদন্ত শুরু করার কথা বলে। ‘কমিশন অব রেলওয়ে সেফটি’ও তদন্ত শুরু করে। দুর্ঘটনার জেরে একাধিক উচ্চপদস্থ রেলের আধিকারিকের বদলি হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত সত্য এখনও উদঘাটিত হয়নি। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, অনুসন্ধানের পর রেলের তরফে যে রিপোর্ট জমা দেওয়া হলো তাতে কি সিগনাল ব্যবস্থার ত্রুটি ধরা পরল, নাকি অন্য কোন গলদ আছে বলে জানা গেছে সেটা এখনও পরিষ্কার নয়। তবে রেলের নিরবতা অনেক প্রশ্নেরই জন্ম দিচ্ছে ।