সমগ্র ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসানোর আবেদন। আইডি কার্ড নিয়েই শুধুমাত্র পড়ুয়াদের প্রবেশাধিকার, অর্থাৎ নো আইডি কার্ড নো এন্ট্রি, বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব আইনগুলি মানা হোক। এই বিষয়গুলি নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেছিলেন তৃণমূল ছাত্রপরিষদের সহ-সভাপতি তথা মুখপাত্র সুদীপ রাহা। হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টিএস শিবজ্ঞানমের ডিভিশন বেঞ্চে আজ, সোমবার ছিল এই মামলার শুনানি। এদিন মামলায় লম্বা শুনানি চলে। ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের আইনজীবীও। ছাত্রনেতা সুদীপ রাহার মামলায় নজিরবিহীন পদক্ষেপ, হাইকোর্ট পার্টি করল যাদবপুরের ছাত্রদের।

এদিন শুনানি শেষে ছাত্রনেতা সুদীপ রাহা জানান, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষা এবং বহিরাগতের প্রবেশের নিষেধাজ্ঞার দাবিতে মামলা দায়ের করা হয়েছিল। কিছু বাম-অতিবাম ছাত্র সংগঠনের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে আইন শৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পর্যন্ত তাদের নিয়ে আতঙ্কিত। কোনও ব্যবস্থা গ্রহণ করতে গেলে আন্দোলনের নামে ঘেরাও, পথ অবরোধ, আমরণ অনশনের হুমকি দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে অচল করে দেয়। একটা সময় সিসিটিভি থাকলেও তা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তাই সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য ক্যাম্পাসে সিসিটিভি বসাতে হবে। পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা করুক ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ। ক্যাম্পাসে বহিরাগতদের প্রবেশের ক্ষেত্রে আই-কার্ড চেক করার আবেদন। শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ এই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের পার্টি করেছে। তারা আদালতে জানাক, কেন ক্যাম্পাসে সিসিটিভি চায় না।বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব কিছু আইন আছে, সেগুলি কি সার্বিকভাবে মানা হয়, না মানা হলে কেন তা হয় না সেটা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আদালতকে জানাবে। দু’সপ্তাহ পরে পরবর্তী শুনানি। সেখানে ছাত্র সংসদগুলির প্রতিনিধিদের পার্টি করা হয়েছে। কেউ বলছে, বাড়ি আমাদের ফার্স্ট হোম, বিশ্ববিদ্যালয় সেকেন্ড হোম। তাই বাড়িতে মদ খেলে, বিশ্ববিদ্যালয়েও খাওয়া যাবে। এটা কখনও হতে পারে না।

সুদীপ আইনজীবী অর্ক কুমার নাগ জানান, যাদবপুরে বছরের পর বছর ধরে বেআইনি কাজ ঘটে চলেছে। রাতে বহিরাগতরা আসছে। মাদকের ব্যবহার করা হচ্ছে। কেউ এটাকে সেকেন্ড হোম ভেবে স্বেচ্ছাচারিতা করছে। বিশ্ববিদ্যালয় কোনওদিন প্রাইভেট স্পেস হতে পারে না। বুঝতে হবে এই মামলা আমরা ছাত্রদের স্বার্থেই করা হয়েছে। তাদের সুরক্ষার কথা ভেবেই করা হয়েছে। কিন্ত আইন কারও পছন্দ নাও হতে পারে, কিন্তু গণতন্ত্রের জন্য সংবিধান, আইন মেনে চলতেই হয়। আমরা চাই, যে অংশের ছাত্ররা বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশৃঙ্খলা করছে, তারা ভুলটা বুঝতে পেরে নিজেদের অবস্থান থেকে সরে আসলে আদালত হয়তো আগামিদিনে বিশ্ববিদ্যালয়ের বিষয়ে হস্তক্ষেপ থেকে সরে যেতে পারে। তাই পরবর্তী শুনানির জন্য দু-সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, তৃণমূল ছাত্রনেতা তথা মুখপাত্র সুদীপ রাহা। এই মামলায় আগেই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। তাঁর বক্তব্য, আচার্য হিসাবে রাজ্যপালই বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ পদাধিকারী। তাছাড়া যে সময় ঘটনাটি ঘটেছে সেসময় বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্যহীন ছিল। তাই মামলায় তাঁকেও যুক্ত করা হোক। যাদবপুরে সুদীপ রাহার মামলায় পার্টি আগেই পার্টি করা হয় রাজ্যপাল তথা আচার্যকে। এবার মামলায় অন্তর্ভুক্তি হল ছাত্র সংসদগুলির।
