পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন নিয়ে বিধানসভার (Assembly) চলতি অধিবেশনেই প্রস্তাব আসতে চলেছে। ৪ সেপ্টেম্বর প্রস্তাব পেশ করা হতে পারে বলে প্রশাসনিক সূত্রে খবর। তবে, এই বিষয়ে এখনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। এই বিষয়ে ২৯ অগাস্ট নবান্ন সভাঘরে সর্বদলীয় বৈঠক ডেকেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সেখানেই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

পয়লা বৈশাখ পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করতে চায় রাজ্য সরকার (State Government)। সোমবার, বিধানসভায় (Assembly) প্রাক্তন তৃণমূল (TMC) সাংসদ সুগত বসুর নেতৃত্বে গঠিত পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ সংক্রান্ত কমিটি বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। সুগত বসু বলেন, তাঁরা সরকারের কাছে নিজেদের প্রস্তাব জমা দিয়েছেন। সরকারই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। গত ২০ জুন পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস হিসেবে পালন করেছিল বিজেপি। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের নির্দেশেই রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গের প্রতিষ্ঠা দিবস পালন করেন রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোস। বিষয়টি নিয়ে তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দিন পালনের আগেই এ বিষয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি রাজ্যপালকে তাঁর আপত্তির কথা জানিয়ে চিঠিও দিয়েছিলেন৷ লিখেছিলেন, এই দিনটিতে দেশ বিভাজিত হয়েছিল৷ তাই এই তারিখে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের অর্থ বাংলার মানুষকে অপমান করা, অসম্মান করা৷ এই আপত্তি সত্ত্বেও রাজ্যপাল রাজভবনে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালন করেন।
১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। দু’টুকরো হয়ে যায় বাংলা। ১৯৪৭-এর ১৫ অগাস্ট স্বাধীনতা অর্জন করে ভারত। কিন্তু সেই স্বাধীনতা অর্জিত হয় পঞ্জাব এবং বাংলা বিভাজনের মাধ্যমে। আজও সেই যন্ত্রণাময় ইতিহাস জড়িয়ে রয়েছে এই ২০ জুন তারিখের সঙ্গে। সেই কারণেই এই দিনটিকে পশ্চিমবঙ্গ দিবস পালনের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করে রাজ্য সরকার। পশ্চিমবঙ্গ দিবস কবে পালন হবে, তা ঠিক করতে একটি কমিটি গঠন করা হয়। প্রাক্তন তৃণমূল সাংসদ তথা ইতিহাসবিদ সুগত বসুকে উপদেষ্টা করে ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস নির্ধারণ কমিটি’ তৈরি হয়। আহ্বায়ক করা হয় বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার আশিস বন্দ্যোপাধ্যায়কে। দু’দফা বৈঠক করে ১ বৈশাখ ‘পশ্চিমবঙ্গ দিবস’ হিসেবে পালন করার সুপারিশ করে ওই কমিটি। সেই সুপারিশে চূড়ান্ত অনুমোদন দেবেন মুখ্যমন্ত্রী। সেই অনুমোদন পাওয়ার পরেই সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা হয়েছে। ওই দিনই ঠিক হয়ে যেতে পারে রাজ্য সঙ্গীত। পশ্চিমবঙ্গ দিবসের প্রস্তাবে রাজ্য সঙ্গীতের উল্লেখ থাকতে পারে বলেই মনে করা হচ্ছে।
