চন্দন বন্দ্যোপাধ্যায়

পুজো এবং কুমোরটুলি, দুইই বাঙালির জীবনের সঙ্গে মিশে আছে যুগ যুগ ধরে। দুর্গাপুজোর কয়েক মাস আগে থেকে শুরু হয়ে যায় অক্লান্ত পরিশ্রম। প্রতিমার জন্য কাদামাটি সংগ্রহ থেকে সাজসজ্জা, প্রতিটা কাজই হয় প্রথা মেনে।বলা যেতে পারে বাঙালির মহোৎসব দুর্গাপুজোর কর্মযজ্ঞর মূল কারিগর কুমোরটুলি।শেষ মূহূর্তের প্রস্তুতিতে চলছে চরম কর্মব্যস্ততা।দিনরাত এক করে কাজ করছেন মৃৎশিল্পীরা, ছুটি মিলবে সেই দীপাবলীরর পর।ওয়ার্কশপ থেকে একে একে মূর্তি রওনা দেওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে।মা্ঝে মাঝে এক পশলা বৃষ্টি কাজে ব্যাঘাত ঘটালেও, বৃষ্টি থেকে বাঁচতে অনেক মূর্তিই মুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে প্লাস্টিকে।শিল্পীরা জানালেন, এই বছর বড় মূর্তির পাশাপাশি ঝোঁক বেড়েছে ছোট মূর্তি কেনার।


শিল্পী বঙ্কিম পাল বললেন, বংশ পরম্পরায় তিনি তৈরি করছেন ছোট ছোট দুর্গা প্রতিমা।তাঁর কাছ থেকেই জানা গেল যে তিনি মূলত কৃষ্ণনগরের পুতুল তৈরির ঘরানা থেকেই ছোট প্রতিমা তৈরি করেন বছরের পর বছর। বংশপরম্পরায় অনেকপুরুষ ধরে তারা এই কাজের সঙ্গে যুক্ত। গত লকডাউনের সময় না খেতে পাওয়ার মতো অবস্থা হয়ে দাঁড়িয়েছিল। তবে এবার কুমারটুলির অর্ডারের পরিস্থিতি বেশ ভালো।মূলত ১৫ ইঞ্চি এবং ২৪ ইঞ্চি এই দুই মাপের ৬০টি ঠাকুরের অর্ডার পেয়েছেন এ বছরেও।

কারা মূলত নেয় এই ছোট প্রতিমা? শিল্পী জানালেন,বিশ্ব বাংলার বিভিন্ন স্টলের পাশাপাশি বিমানবন্দরেও শোভা পাবে তাঁর এই শিল্প কীর্তি।বেশ কয়েকটি আবাসনেও এবার ছোট প্রতিমা পূজিতা হবেন। এমনকী, দেশের গন্ডি পেরিয়ে বিদেশে যাচ্ছে তাঁর শিল্পকীর্তি।তিনি দাবি করেন, বড় প্রতিমার তুলনায় ছোট প্রতিমা তৈরিতে অনেক বেশি মুন্সিয়ানা দেখাতে হয়। তাঁর প্রতিমা ছোট হলেও, মায়ের পরনে নানান রঙের পছন্দের শাড়ি পরিয়ে তিনি তিনি মাকে আরও মোহময়ী করে তোলেন।এরই পাশাপাশি, তিনি বলেন যে মায়ের আকৃতি ছোট হওয়ায় পুজোর বাজেটেও অনেক কমে যায়।


প্রবীণ প্রতিমাশিল্পী জানালেন, গতবছরের তুলনায় অবশ্য এই বছর মূর্তির চাহিদা বেশি। দুর্গাপুজোয় খুব একটা ক্ষতির সম্মুখীন হবে না কুমোরটুলি।
