মাত্র ৪ দিনে রাজ্যসভা ও লোকসভায় ১৪৩ জন বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার পর কার্যত বিরোধী শূন্য লোকসভায় পাশ হয়ে গেল দণ্ডসংহিতা সংক্রান্ত তিনটি বিল। ফাঁকা সংসদে শুধুমাত্র শাসকদলের সাংসদদের উপস্থিতিতে ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই পাশ হয়ে গেল বিলগুলি। আর এই বিল নিয়ে বলতে সংসদে মোদি বন্দনায় মুখর হয়ে উঠলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ।

বুধবার দুপুরে নতুন করে ২ বিরোধী সাংসদকে সাসপেন্ড করার পর কার্যত ফাঁকা সংসদে ন্যায় সংহিতা বিল নিয়ে আলোচনা শুরু করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারতীয় সংবিধানকে প্রাধান্য দিয়েই তৈরি হয়েছে এই তিনটি বিল। আমজনতার উন্নয়নের সঙ্গে ভারতীয়ত্বকেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে নতুন বিলগুলোতে। নরেন্দ্র মোদির প্রশংসা করে এদিন অমিত শাহ বলেন, “জাতীয় নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং জঙ্গি দমনে কঠোর পদক্ষেপের উদ্দেশ্যে এই তিনটি বিল আনা হয়েছে। আমাদের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি সেই দাসত্বের সব চিহ্ন মুছে দিতে চলেছেন।” সেই সঙ্গে তাঁর দাবি, “স্বাধীনতার পরে নরেন্দ্র মোদির সরকারই এক মাত্র ভোটের আগে দেওয়া সমস্ত প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে চলেছে।”
প্রসঙ্গত, গত ১১ অগস্ট সংসদের বাদল অধিবেশনের শেষ দিনে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ লোকসভায় তিনটি বিল পেশ করে জানিয়েছিলেন, ১৮৬০ সালে তৈরি ‘ইন্ডিয়ান পেনাল কোড’ (ভারতীয় দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় ন্যায় সংহিতা’ দিয়ে। ১৮৯৮ সালের ‘ক্রিমিনাল প্রসিডিওর অ্যাক্ট’ (ফৌজদারি দণ্ডবিধি) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় নাগরিক সুরক্ষা সংহিতা’ দ্বারা এবং ১৮৭২ সালের ‘ইন্ডিয়ান এভিডেন্স অ্যাক্ট’ (ভারতীয় সাক্ষ্য আইন) প্রতিস্থাপিত হবে ‘ভারতীয় সাক্ষ্য বিল’-এ। এর পরেই বিল তিনটি সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটির কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। পাশাপাশি, শাহ বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীদের এই আইন বদলের বিষয়ে চিঠি পাঠিয়েছিলেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর পাঠানো ২২ অগস্টের সেই চিঠির জবাবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লিখেছিলেন, “আইন বদলের এই উদ্যোগ ভারতীয় জনজীবনকে প্রভাবিত করতে পারে। তাই চূড়ান্ত সতর্কতা বজায় রেখেই এ ক্ষেত্রে পদক্ষেপ করতে হবে।” এবার বিরোধী শূন্য সংসদে কোনও আলোচনা ছাড়াই পাশ হয়ে গেল এই বিল।
