Thursday, November 6, 2025

উজ্জ্বল সিনহার ‘উজানযাত্রা’: জীবন্ত গল্পের দলিল

Date:

Share post:

বিশ্বায়নের যুগে টালমাটাল পরিস্থিতি। তাকে এড়িয়ে বাঁচতে চায় বাবু। কিন্তু বর্তমানকে আলিঙ্গন করতে বাধ্য সে। এই পরিস্থিতির শিকার হয়ত কমবেশি সকলেই। আর সেই গল্পই ফুটে উঠেছে উজ্জ্বল সিনহার (Ujjwal Sinha) ‘উজানযাত্রা’য়। জীবনের ওঠা-পড়া, টানাপোড়েন নিয়েই এই গল্পের প্লট এগিয়েছে। নবীন লেখক উজ্জ্বল সিনহার (Ujjwal Sinha) প্রথম এই বই (Book) রবিবার প্রকাশ করলেন সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায়। ছিলেন শিক্ষামন্ত্রী তথা বাংলা আকাদেমির সভাপতি ব্রাত্য বসু, মুখ্যমন্ত্রীর উপদেষ্টা আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়, কবি শ্রীজাত, লেখক প্রচেত গুপ্ত, পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের ত্রিদিব চট্টোপাধ্যায় এবং সুধাংশুশেখর দে।

উজান যাত্রা অর্থাৎ পিছনে ফিরে যাওয়া। গল্পের মূল চরিত্র বাবুও যেন তাই বারবার পিছনে ফিরে ফিরে যাচ্ছিল। আর সেই সঙ্গে তাঁর জীবনে প্রবেশ ঘটছিল একাধিক চরিত্রের। বীণাপানি দেবী, স্নিগ্ধা সহ একের পর এক চরিত্র যেন জীবন্ত দলিল হয়ে উঠেছে। আর তাঁদের মধ্যে দিয়েই মফঃস্বলে বেড়ে ওঠা বাবু ফিরে যেতে চেয়েছে অতীতে।

এটি একটি চেনা-অচেনা জীবনের দলিল। বাবু নামে এক বালক, কালো দীঘি, অমলতাস গাছ নিয়ে ঘুরে বেড়ায়। নিপুণ সাহিত্য মুন্সিয়ানা ফুটে উঠেছে গল্পে। রয়েছে জীবনের উত্থান পতন। মূল চরিত্র হয়তো লেখকেরই আত্মজীবনী।

এদিনের অনুষ্ঠানে ব্রাত্য বসু জানান, বাবুর জীবনে দেখা যায় নানা লোক আসছে। বিভিন্ন চরিত্রের আগমন হচ্ছে। যার মধ্যে দিয়ে বিশ্বায়নের আগমন হচ্ছে। নাগরিক জীবন কেবল গ্রাম মফঃস্বলের কাহিনী বলবে তা নয়। মনস্তাত্বিক কথাও বলছে। এই মুহূর্তের অস্থির সময়ে নিজেকে ফিরে দেখা। তিনি অতীতে যেতে চান। বাবু আমরা সবাই। আমরা এই সময়কে বর্জন করতে চাই। কিন্তু এই সময়কে আলিঙ্গন করতে হবে। আমরা এই উজান যাত্রার লেখক কে উৎসাহিত করছি।

সাহিত্যিক শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, আমার ভালোবাসা, সহমর্মিতা জানাই। এমন সহজ ভাবে লিখেছেন যেন লেখার মধ্যে কবিতার সঞ্চার আছে। কেন এত দেরি করলেন আরও আগে লেখা শুরু করা উচিত ছিল। গল্পের প্রসঙ্গে প্রবীণ সাহিত্যিকের সংযোজন, বাবু পুকুরে ডুবে যাচ্ছিল। আমদের জীবনেও এই ডুবে যাওয়া সব সময় ঘটে। ডুব আমাদের আছেই একইসঙ্গে ভেসে ওঠাও আছে। ডুবে যাওয়া, ভেসে ওঠা সবার জীবনেই ঘটেছে। এরমধ্যে সংকেত আছে বাবু উজানে ফিরছেন, অর্থাৎ তাঁর যৌবন কৈশোরে ফিরছেন তিনি।

নস্টালজিক হয়ে আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, মফস্বলের পাঠক হিসেবে যোগ করতে পেরেছি নিজেকে। ছিন্ন মূল বালকের পদচারণা পেলাম।

শেষ পর্যায়ে বইয়ের লেখক যোগ করেন, আমি বিব্রত, কুণ্ঠিত। এই বই লিখতে গিয়ে যাদের সাহায্য পেয়েছি তা ভাগ্যের।লেখকের কথায়, আমি বিপণনের কাজ করি। তবে আমার মনে হয়েছিল আমার মনেও বেশ কিছু কথা রয়েছে যা জানানো দরকার। সেই থেকেই লেখার উদ্ভব।

তিনি জানান, শুভাপ্রসন্ন ভট্টাচর্য্য প্রথমে বইয়ের কভার করে দিয়েছিলেন। কিন্তু সেই প্রচ্ছদ দেখে অতীতে ফিরে যাচ্ছিলেন তিনি। যা তাঁকে বেদনা দিছিল। মনে করিয়ে দিত তিক্ত বিস্মৃতি। তাই বদল করেছেন সেই প্রচ্ছদ। দে’জ পাবলিকেশন থেকে প্রকাশিত হয়েছে এই বই। এবারের বইমেলায় পাওয়া যাবে উজানযাত্রা।

spot_img

Related articles

রাত পোহালে প্রথম দফার নির্বাচন বিহারে: হিংসা ঠেকানোই চ্যালেঞ্জ

নির্বাচনের এক সপ্তাহ আগে পরপর খুন। রাজনৈতিক নেতা থেকে সমর্থক। বিহার বিধানসভা নির্বাচনে তাই শান্তি বজায় রাখাই চ্যালেঞ্জ...

বাংলা কথায় দক্ষতা, কোন পদে পান তৃপ্তি? দীপ্তিকে নিয়ে স্মৃতির ঝাঁপি খুললেন ‘অভিভাবক’ মিঠু

সন্দীপ সুর বাংলার প্রথম ক্রিকেটার হিসাবে আইসিসি একদিনের বিশ্বকাপ জিতেছেন রিচা ঘোষ কিন্তু ভারতীয় দলের আরও এক ক্রিকেটারের সঙ্গে...

দিঘার জগন্নাথ ধামে প্রথম রাস উৎসবে ভক্তদের ঢল 

দিঘার জগন্নাথ ধামে এবারই প্রথম পালিত হল রাস উৎসব, আর সেই উপলক্ষে সকাল থেকেই উপচে পড়েছে ভক্তসমুদ্র। উৎসবের...

বেঁচে আছেন, তাই জানতে পারলেন ‘দোষী নন’: আজব বিচার উত্তরপ্রদেশে

বিচারের বাণী নীরবে নিভৃতে কাঁদে। উত্তরপ্রদেশের আলিগড়ের (Aligarh) মিঠু সিংয়ের জীবনে যেন সেটাই সত্যি হতে বসেছিল। অবশেষে ৫৫...