Sunday, August 24, 2025

ঠাঁই পেল না দেশের জ্বলন্ত সমস্যা, রাজ্যসভায় দীর্ঘ ‘মন কি বাত’ মোদির

Date:

Share post:

দেড় ঘণ্টার দীর্ঘ ভাষণ। ভাষণ না বলে ‘মন কি বাত’ও বলা যায়। শুধু রেডিওর পরিবর্তে স্থান রাজ্যসভা। চেনা ছকে এবারও দীর্ঘ ভাষণের অর্ধেক ব্যয় করলেন কংগ্রেসের ৭০ বছরের শাসনকে তুলোধনা, এরপর বাকি অর্ধেক আত্মপ্রচার ও ক্ষমতায় আসার পর আগামী ৫ বছরের ইস্তেহার নিয়ে। বুধবার রাজ্যসভায় নরেন্দ্র মোদির ভাষণ ঠিক এটাই। একটি শব্দও শোনা গেল না মণিপুরের ভয়াবহ পরিস্থিতি, দেশের যুব সম্প্রদায়ের বেকারত্বের যন্ত্রণা, মূল্যবৃদ্ধির নাগপাশে জর্জরিত মধ্যবিত্তদের সুরাহা নিয়ে। চলল শুধুই ভাষণের কেরামতি ও আকাশ কুসুম স্বপ্ন।

এদিন রাজ্যসভায় মোদির ভাষণের শুরু থেকেই ছিল কংগ্রেসকে নিশানা করেন নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বক্তব্য উঠে আসে পূর্বতন সরকারের ব্যর্থতা। নেহেরু থেকে শুরু করে ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী, মনমোহন সিং, তাঁর নিশানা থেকে বাদ যাননি কেউই। মোদি বলেন, কংগ্রেসের ব্যর্থতার জন্য ক্রমশ পিছিয়ে পড়েছে দেশের উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলো। শত্রুদের হাতেও বিশাল জমি তুলে দিয়েছে কংগ্রেস। পাশাপাশি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকেই কংগ্রেস ধন্দে ছিল, শিল্প না কৃষি কোনটাকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত। তাই ১০ বছর ধরে সরকারে থেকেও বিশ্বের অর্থনীতিতে ১২ নম্বর থেকে ১১ নম্বরে নিয়ে গিয়েছিল ভারতকে। এই কংগ্রেস এখন দেশের অর্থনীতি নিয়ে লম্বা ভাষণ দিচ্ছে আমাদের। এছাড়াও প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের বক্তব্য তুলে ধরে তিনি বলেন, “তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মেনে নিয়েছিলেন যে দেশের অর্থনীতি ক্রমেই দুর্বল হয়ে যাচ্ছে। দুর্নীতির কারণে জেরবার হচ্ছেন সাধারণ মানুষ, সরকারি সংস্থার অপব্যবহার হচ্ছে।” নাম না করে আরেক প্রধানমন্ত্রী রাজীব গান্ধীর স্বীকারোক্তি তুলে ধরেন মোদি বলেন, দেশের নানা প্রান্তে দুর্নীতি হচ্ছে বুঝেও কিছু করেনি কংগ্রেস। দেশের অর্থনীতির হাল ফেরাতে কোনও উদ্যোগ নেয়নি।

এর পাশাপাশি তাঁর সরকারের আমলে একাধিক সরকারি সংস্থার উন্নয়নের খতিয়ান তুলে ধরেন মোদি। উদাহরণ হিসেবে বলেন সরকারি সংস্থা ‘হ্যাল’-এর কথা। দাবি করেন এলআইসি নিয়ে কম সমালোচনা করেনি বিরোধীরা। বর্তমানে এলআইসির শেয়ারের দাম ব্যাপকভাবে বেড়েছে। এছাড়াও আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে ক্ষমতায় আসার দাবি করে। আসন্ন নির্বাচন উপলক্ষ্যে ইস্তেহার তুলে ধরতে দেখা যায় নরেন্দ্র মোদিকে। সবমিলিয়ে দীর্ঘ ভাষণে আত্মপ্রচারের কোনও খামতি না থাকলেও বাদ পড়ল দেশের জ্বলন্ত সমস্যা। যুব সমাজের বেকারত্ব, চরম মূল্যবৃদ্ধি, মণিপুরের জ্বলন্ত সমস্যা ঠাঁই পেল না গোটা ভাষণে। দীর্ঘ ভাষণ শেষের পর মোদিকে কটাক্ষ করে তৃণমূলের রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, “রাজ্যসভায় দীর্ঘ মন কি বাত চালালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এই সরকার সংসদকে এক অন্ধকার কুঠুরিতে প্রবেশ করিয়েছে। মণিপুর, বেকারত্ব, মূল্যবৃদ্ধি প্রসঙ্গে কোনও বক্তব্য নেই দীর্ঘ ভাষণে।” পাশাপাশি তিনি যোগ করেন, “গণতন্ত্র সম্পর্কে এমন একজন মানুষ বক্তৃতা দিচ্ছেন যার হাতে গণতন্ত্রকে হত্যার রক্ত লেগে রয়েছে।

spot_img

Related articles

পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য ‘শ্রমশ্রী’ প্রকল্পে নাম নথিভুক্তি শুরু

পরিযায়ী শ্রমিকদের সুবিধার্থে এবার আরও এক পদক্ষেপ রাজ্য সরকারের। ‘আমাদের পাড়া আমাদের সমাধান’ কর্মসূচির আওতায় দুয়ারে সরকার শিবিরেও...

‘নিখুঁত ভুলগুলি’, উৎপল সিনহার কলম

একটা দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান হয়ে ওঠে ...একটি দুঃখের কথা পথে ও বিপথে ঘুরে প্রত্যাখ্যাত হতে হতে গান...

ষোলতেই ১৩০ কেজি! ছেলের খাবার জোগাতেই নাজেহাল বাবা-মা

মুর্শিদাবাদ জেলার সাগরদিঘি থানার কাবিলপুর পঞ্চায়েতের মথুরাপুর গ্রাম। এখানেই থাকেন দিনমজুর মুনশাদ আলি। তাঁর ছোট ছেলে জিশান আলি...

কবে থেকে শুরু জয়েন্টের কাউন্সেলিং? দিনক্ষণ জানিয়ে দিল বোর্ড

ফলপ্রকাশের পর এবার ১৫ দিনের মধ্যেই কাউন্সেলিং প্রক্রিয়া তথা ভর্তি প্রক্রিয়া শেষ করবে জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ড। এবার কাউন্সেলিং...