রাজনৈতিক দলগুলির ‘গৌরী সেন’ কারা? অবশেষে প্রকাশ্যে আসবে তথ্য

কোটি কোটি টাকা! অথচ কোন কর্পোরেট সংস্থার ভালোবাসায় ফুলে ফেঁপে উঠছে রাজনৈতিক দলগুলি দেশবাসীকে তা জানার পথ এতদিন বন্ধ রেখেছিল মোদি সরকার। বৃহস্পতিবার নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত সুপ্রিম রায়ে এবার প্রকাশ্যে আসতে চলেছে সেই তথ্য। এই নির্বাচনী বন্ডকে সম্পূর্ণ বেআইনি ঘোষণা করে আদালতের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যা যা তথ্য এসবিআইয়ের কাছে জমা পড়েছে, তা আগামী ৬ মার্চের মধ্যে জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনে। আর কমিশন এই অনুদান সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পর তা প্রকাশ্যেও আনা হবে।

নির্বাচনী বন্ড মূলত পরিচয় এবং অর্থের অঙ্ক গোপন রেখে রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দেওয়ার সুবিধা। এই ব্যবস্থার দায়িত্বে ছিল স্টেট ব্যাঙ্ক। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও ব্যক্তি বা কর্পোরেট সংস্থা রাজনৈতিক দলগুলিকে চাঁদা দিতে চাইলে, স্টেট ব্যাঙ্কের কাছ থেকে নির্দিষ্ট অর্থের অঙ্কের বন্ড কিনে সংশ্লিষ্ট দলকে দেবেন। সেই অর্থ ভাঙিয়ে নেবে রাজনৈতিক দলগুলি। মূলত কালো টাকার লেনদেন রুখতেই এই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছিল মোদি সরকার। তবে একই সঙ্গে ওই বন্ডে দাতাদের পরিচয় এবং দানের অর্থের পরিমাণ গোপন রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছিল তারা।

তবে এই ব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে রায় ঘোষণা করে শীর্ষ আদালত জানিয়েছে, এই ব্যবস্থা ‘কুইড প্রো কুয়ো’। অর্থাৎ কোনও কিছুর বিনিময়ে কাউকে সুবিধা পাইয়ে দেওয়া। এছাড়াও এই ব্যবস্থাকে অসাংবিধানিক ও ক্ষতিকারক বলে আখ্যা দিয়েছে আদালত। এসবিআইকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে অবিলম্বে তাঁরা যেন এই ব্যবস্থা বন্ধ করে। এবং বন্ড সংক্রান্ত যাবতিয় তথ্য যেন তারা নির্বাচন কমিশনের কাছে জমা দেয়। স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, ২০১৯ সালের ১২ এপ্রিল থেকে নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত যা যা তথ্য এসবিআইয়ের কাছে জমা পড়েছে, তা আগামী ৬ মার্চের মধ্যে জমা দিতে হবে নির্বাচন কমিশনে। আর কমিশন এই অনুদান সংক্রান্ত তথ্য পাওয়ার পর তা প্রকাশ্যেও আনা হবে। কবে সে তথ্য প্রকাশ্যে আসবে তাও স্পষ্ট করে আদালত জানিয়েছে, কমিশন নির্বাচনী বন্ড সংক্রান্ত রিপোর্ট পাওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যে তথ্য প্রকাশ্যে আনবে নির্বাচনী প্যানেল। অর্থাৎ তারিখের হিসেবে তা হওয়া উচিৎ ১৩ মার্চ।

উল্লেখ্য, ২০১৮ সাল থেকে চালু হয় এই নির্বাচনী বন্ড। ১ হাজার, ১০ হাজার, ১ লক্ষ, ১০ লক্ষ এবং ১ কোটি টাকা মূল্যের গুণিতকে এই বন্ড বিক্রি করত এসবিআই। এই বন্ড কিনে রাজনৈতিক দলগুলিকে দিত কর্পোরেট সংস্থাগুলি। রাজনৈতিক দল তা ভাঙিয়ে দলের অ্যাকাউন্টে নিত। বিদেশীরাও রাজনৈতিক দলগুলিকে সহজে টাকা পাঠাতে পারত এই প্রক্রিয়ায়। বাড়তি সুবিধা ছিল এই পদ্ধতিতে ব্যক্তি বা সংস্থা ১০০ শতাংশ কর ছাড় পেত। তবে ব্যাঙ্ক বা রাজনৈতিক দল কোনও তরফেই এই দাতার নাম-পরিচয় প্রকাশ্যে আসত না। এবার সেই নিয়মে ‘দাড়ি’ পড়ল শীর্ষ আদালতের নির্দেশে।

Previous articleমানিকতলায় সিলিন্ডার দুর্ঘটনা! মৃত ১
Next articleখুশি-সম্মানিত: ‘বড় দায়িত্ব’ পেয়ে আপ্লুত সাগরিকা, মমতার ভূয়সী প্রশংসা