Wednesday, November 12, 2025

২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে EVM-এ ব্যাপক যান্ত্রিক ত্রুটি, প্রকাশ্যে RTI রিপোর্ট

Date:

Share post:

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের আগে ইভিএমের খারাপের সমস্যা নিয়ে যথেষ্ট উদ্বিগ্ন ছিল নির্বাচন কমিশন। সম্প্রতি এক আরটিআই আধিকারিক দ্বারা প্রাপ্ত নথির ভিত্তিতে সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের তরফে এমনটাই দাবি করা হয়েছে। বলা হয়েছে, লোকসভা নির্বাচনের ছয় মাস আগে জেলা পর্যায়ে জেলা নির্বাচন অফিসারের (ডিইও) তত্ত্বাবধানে ইঞ্জিনিয়ারদের দ্বারা ইভিএম পরীক্ষা হয় সেখানে ব্যাপকভাবে সমস্যা ধরা পড়ে। তাৎপর্যপূর্ণভাবে ২০১৯ সালের নির্বাচনে ব্যাপকভাবে ইভিএমে সমস্যার অভিযোগ তোলা হয় বিরোধীদের তরফে।

নিয়ম অনুযায়ী, প্রাথমিক পরীক্ষা বা এফএলসি চলাকালীন ইভিএম-এর কোনো অংশে ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামতের জন্য প্রস্তুতকারক, ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বিইএল) বা ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেডের কাছে ফেরত পাঠানো হয়। তবে এক্ষেত্রে সে নিয়ম যথাযথভাবে পালিত হয়নি। কমনওয়েলথ হিউম্যান রাইটস ইনিশিয়েটিভের ডিরেক্টর ভেঙ্কটেশ নায়েকের RTI-এর অধীনে প্রাপ্ত নথিগুলি দেখা গিয়েছে FLC প্রক্রিয়া চলাকালীন VVPAT এবং নিয়ন্ত্রণ ইউনিটগুলির ভুলভ্রান্তির বহু অভিযোগ এসেছিল রাজ্যগুলি থেকে। নির্বাচনের একেবারে মুখে এভিএমে প্রার্থীদের নাম এবং তাদের নির্বাচনী প্রতীক দেওয়া হলেও সমস্যা অব্যাহত ছিল।

শুধু তাই নয়, ইভিএম মেশিনের এমন গুরুতর সমস্যার অভিযোগ জানিয়ে নাগাল্যান্ড, অরুণাচল প্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, বিহার, কর্ণাটক এবং কেরালা সহ বেশ কয়েকটি রাজ্যের নির্বাচন কমিশনগুলির তরফে দিল্লির নির্বাচন কমিশনের কাছে অভিযোগ জানানো হয়। তবে সেই অভিযোগকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়নি জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফে। প্রাথমিক পরীক্ষা বা এফএলসি চলাকালীন ৩০ শতাংশ পর্যন্ত ইভিএমে ত্রুটি দেখা যায়।

উদাহরণস্বরূপ, ১ নভেম্বর, ২০১৮-এ উত্তরাখণ্ডের সহকারী সিইও-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত প্রথম-স্তরের(এফএলসি) পরীক্ষার স্ট্যাটাস রিপোর্ট, কন্ট্রোল ইউনিটের ইভিএম সমস্যার হার ছিল ৩৪ শতাংশ। ২১শে ডিসেম্বর, ২০১৮-এ, দিল্লির সিইও-এর কার্যালয় দক্ষিণ, উত্তর-পশ্চিম এবং পূর্ব জেলাগুলিতে অনুষ্ঠিত এফএলসি চলাকালীন VVPAT-এব্যপক সমস্যা চিহ্নিত করে নির্বাচন কমিশনকে চিঠি দিয়েছিল এবং অতিরিক্ত মেশিনগুলির সাথে তা বদল করতে চেয়েছিল। একইভাবে, আন্দামানের সিইওর কার্যালয় ২০১৯ সালের মার্চ মাসের প্রথম সপ্তাহে নির্বাচন কমিশনের কাছে অতিরিক্ত ভিভিপিএটিগুলির জন্য একই অনুরোধ জানিয়ে বলেছিল যে প্রশিক্ষণ এবং সচেতনতার জন্য ব্যবহৃত অর্ধেকেরও বেশি ভিভিপিএটি খারাপ। কর্ণাটকের সিইও লোকসভা নির্বাচনের খুব কাছাকাছি সময়ে ১১ এপ্রিল ২০১৯-এ নির্বাচন কমিশনের সাথে যোগাযোগ করেছিলেন এবং জানিয়েছিলেন যে প্রথম স্তরের প্রযুক্তিগত পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরেও, ১২ শতাংশ VVPAT খারাপ। কেরলের মতো রাজ্যেও ১৪ শতাংশ মেসিন খারাপ ছিল। শুধু লোকসভা নির্বাচন নয় তার পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচনগুলিতেও একই সমস্যায় ভুক্তভোগী ছিল পাঞ্জাব, উত্তরাখণ্ড, বিহার, উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্য। তবে সমস্যা এত গুরুতর হওয়া সত্ত্বেও বিষয়টিকে দিব্যি এড়িয়ে গিয়েছে নির্বাচন কমিশন।

spot_img

Related articles

মৃত ভোটারের নামে ফর্ম জমা পড়লে কঠোর পদক্ষেপের নির্দেশ কমিশনের

মৃত ভোটারের নামে এনুমারেশন ফর্ম জমা পড়লে এবার সরাসরি আইনি ব্যবস্থা নেবে নির্বাচন কমিশন। কমিশনের নতুন নির্দেশিকা অনুযায়ী,...

আর্থিক দুনীতির গুরুতর অভিযোগ, রাজ্য ভলিবল সচিবের বিরুদ্ধে নজিরবিহীন বিদ্রোহ

নজিরবিহীন কাণ্ড রাজ্য ভলিবলে(Volleyall)। সচিব পল্টু রায়চৌধুরীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করলেন কর্তাদের একাংশ। অভিযোগ উঠেছে মঙ্গলবার পল্টুর অনুগামীরা...

ভারতকে সমীহ টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়নদের, স্পিন অস্ত্রেই জোর প্রোটিয়াদের

বর্তমানে টেস্টের বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন(WTC) দক্ষিণ আফ্রিকা(South Africa)। কিন্তু ভারতে এসে গম্ভীরের দলকে হারানো যে কঠিন বিলক্ষণ জানে প্রোটিয়ারা।ভারতকে...

২০০৯-এ ডিলিমিটেশন হলে ২০০২-এর ভোটার তালিকা ধরে কেন SIR, কমিশনের সিদ্ধান্তে প্রশ্ন কল্যাণের 

নির্বাচন কমিশনের একের পর এক সিদ্ধান্তকে তীব্র ভাষায় আক্রমণ করলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ ও আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। বুধবার...