সন্দেশখালিকাণ্ডে শেখ শাহজাহানের আত্মসমর্পণ করা উচিত, পর্যবেক্ষণ হাই কোর্টের

শাহজাহান প্রকাশ্যে এসে তো বলতে পারেন এই সব অভিযোগ সঠিক নয়। কারও জমি নেওয়া হয়নি।

সন্দেশখালিকাণ্ডে শেখ শাহজাহান এখনও অধরা। কেন তাকে এখনও গ্রেফতার করা সম্ভব হল না তা নিয়ে ক্ষোভপ্রকাশ করল কলকাতা হাই কোর্ট। মঙ্গলবার সন্দেশখালি সংক্রান্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম এতদিন পরেও কেন তিনি পুলিশের আওতার বাইরে। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি জানিয়েছেন, ‘পলাতক’ শাহজাহানকে তাঁরা এই মামলায় ইডি, সিবিআই, পুলিশের সামনে কলকাতা হাই কোর্টে এসে আত্মসমর্পণ করতেও বলতে পারেন। বিচারপতির পর্যবেক্ষণ, এত দিন ধরে ওই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এত সমস্যা। শাহজাহান প্রকাশ্যে এসে তো বলতে পারেন এই সব অভিযোগ সঠিক নয়। কারও জমি নেওয়া হয়নি।

প্রসঙ্গত, সন্দেশখালির ঘটনা নিয়ে এক সপ্তাহ আগেই স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করেছিলেন কলকাতা হাই কোর্টের বিচারপতি অপূর্ব সিং রায়। তবে মঙ্গলবার সেই মামলা পাঠিয়ে দেওয়া হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে। সেখানেই মামলাটির শুনানিতে প্রধান বিচারপতি বলেন, এক জন জনপ্রতিনিধি পুরো সমস্যার জন্য দায়ী। প্রাথমিক ভাবে মনে হচ্ছে, তিনি জনগণের ক্ষতিই করেছেন।

শাহজাহান এবং তাঁর দুই সঙ্গী উত্তম এবং শিবু হাজরার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ করেছেন গ্রামবাসীরা। দুজনের বিরুদ্ধেই গণধর্ষণের অভিযোগও দায়ের হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে শাহজাহানকেই সমস্যার মূল বলে মন্তব্য করেছে কলকাতা হাই কোর্ট। একই সঙ্গে পুলিশের আরও তৎপর হওয়া উচিত ছিল বলে মন্তব্য করেন প্রধান বিচারপতি। তিনি বলেছেন, মামলা দায়ের হয়েছে, অথচ রাজ্য পুলিশ শাহজাহানকে ধরতে পারছে না। তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। ১৮ দিনের বেশি হয়ে গেল তিনি বেপাত্তা। এমন ব্যক্তিকে সমর্থন করা উচিত নয়।

মঙ্গলবার সন্দেশখালি নিয়ে হাই কোর্টের স্বতঃপ্রণোদিত মামলার শুনানিতে শাহজাহানকে হাই কোর্টে তলব করার কথাও বলেছে কলকাতা হাই কোর্ট। প্রধান বিচারপতি বলেন, শেখ শাহজাহানকে স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় তাঁকে আমরা এখানে আত্মসমর্পণ করতে বলতে পারি। এত দিন ধরে ওই ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে এত সমস্যা। শাহজাহান প্রকাশ্যে এসে তো বলতে পারেন, এই সব অভিযোগ সঠিক নয়। কারও জমি নেওয়া হয়নি। তা না করে ওই ব্যক্তি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। যদি তিনি পালিয়ে বেড়ান, তবে স্বাভাবিক ভাবে সমস্যা আরও বাড়বে।

প্রাথমিক পর্যবেক্ষণে প্রধান বিচারপতি বলছেন, মানুষের কৃষিজমি কেড়ে নেওয়া হয়েছে।সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ওই ব্যক্তি এখনও তিনি পলাতক।প্রধান বিচারপতি বলেন, ১৪৪ ধারা জারি করে শুধুমাত্র ওই এলাকায় উত্তেজনা প্রশমিত করার চেষ্টা হচ্ছে। তবে মঙ্গলবার সন্দেশখালি সংক্রান্ত স্বতঃপ্রণোদিত মামলায় প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ পর্যবেক্ষণের কথা জানালেও কোনও নির্দেশ দেয়নি। আগামী সোমবার এই স্বতঃপ্রণোদিত মামলার পরবর্তী শুনানি।