তৃতীয়বার প্রধানমন্ত্রী হচ্ছেন না মোদি, ২০০ পৌঁছানোর জন্য স্ট্রাগল বিজেপির: কুণাল

আগামী দিনে যখন দিল্লিতে বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন যেন গোটা দেশের সাংবাদিকরা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যেন বুঝতে পারেন যে রাজধানীর বুকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM of West Bengal) এলেন দেশের নতুন সরকার গঠনের লাঙ্গল ধরতে।

লোকসভা ভোটের প্রচারে বুধবার দক্ষিণ কলকাতার ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থী মালা রায়ের (Mala Roy) সমর্থনে নির্বাচনী সভায় বক্তব্য রাখেন কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। উপস্থিত ছিলেন পুরপিতা সুশান্ত ঘোষ (Susanta Ghosh) ছাড়াও ওয়ার্ড প্রেসিডেন্ট এবং তৃণমূল কংগ্রেসের কর্মী সমর্থকরা। কুণাল শুরুতেই বলেন, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে বিজেপি দল সরকার গঠন করার জায়গায় আসতে পারবে না। ওদের গ্রাফ ক্রমশ কমছে। নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) নমিনেশন ফাইল করার সময় চোখের জল ফেলাকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, আসলে মোদি বুঝে গেছেন তৃতীয়বার আর তাঁর প্রধানমন্ত্রী হওয়া হচ্ছে না। বিজেপি এখন ২০০ পৌঁছানোর জন্য স্ট্রাগল করছে।

এদিনের সভায় দিল্লির সরকার এবং বাংলার সরকারের তুলনা টেনে এনে কুণাল ঘোষ বলেন ৫০০ টাকা থেকে বিচার করা শুরু করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার লক্ষ্মীর ভান্ডারে ৫০০ টাকা বাড়িয়েছে। আর মোদি সরকার গ্যাসের দাম বাড়িয়েছে ৫০০ টাকা। এর থেকেই পরিষ্কার মানুষের পাশে কারা আছে। তিনি বলেন দিল্লিতে বিকল্প সরকার গঠনে চেয়ার গুরুত্বপূর্ণ নয়, কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের লক্ষ্য বেশি সংখ্যক সাংসদ দিল্লিতে পাঠানো যাতে বাংলার বকেয়া নিয়ে ভবিষ্যতে কোনও সমস্যায় না পড়তে হয়। যেখানে কেন্দ্র সরকার (central government) পেট্রোল ডিজেল থেকে কৃষকের সার, ওষুধের দাম বাড়িয়ে চলেছে, সেখানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার কৃষক বন্ধু থেকে সবুজ সাথী, বার্ধক্য ভাতা, কন্যাশ্রী, স্টুডেন্ট ক্রেডিট কার্ড থেকে স্বাস্থ্যসাথীর মতো জনকল্যাণমূলক কর্মসূচি গ্রহণ করে বাংলার মানুষকে ভাল রাখতে চাইছে। বিজেপি জানে দক্ষিণ কলকাতায় মালা রায় জিতছেন, তাই পদ্ম নেতারা নাটক শুরু করেছেন বলেও কটাক্ষ করেন কুণাল। তিনি বলেন, নরেন্দ্র মোদি সরকার মানুষের মাসিক খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে, আর তৃণমূল সরকার আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া মানুষের উন্নয়নে কাজ করে চলেছে। হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের গানের কলি উল্লেখ করে কুণাল ঘোষ বলেন, কে আসলে মানুষের দুঃখ কষ্টের সাথী, প্রকৃত বন্ধু- তাঁকে সঠিকভাবে চিনে নেওয়া প্রয়োজন। ব্যাংকের সুদ কমানো থেকে শুরু করে LIC থেকে শুরু করে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার বেসরকারিকরণ করে বিজেপি অনিশ্চয়তার দিকে দেশকে ঠেলে দিচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘যাঁরা মায়ের গা থেকে গয়না খুলে বিক্রি করে দেয় তাঁদের কাছ থেকে দেশভক্তি শেখার প্রয়োজন পড়ে না।’ “জয় শ্রীরাম” উচ্চারণ করে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করা বিজেপির উদ্দেশ্যে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে কুণাল বলেন এই স্লোগান উচ্চারণ করে পেট্রোল পাম্পে গিয়ে কি কম দামে তেল পাওয়া যাবে, নাকি রান্নার গ্যাসের ছাড় মিলবে? এটা জীবন জীবিকার লড়াই, সেখানে নিজেদের ব্যর্থতা থেকে নজর ঘোরাতে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করছে বিজেপি। এর পাশাপাশি সন্দেশখালি নিয়েও বিজেপিকে নিশানা করেন কুণাল ঘোষ।

হাওড়ায় যে পথ বাকি ছিল সন্ধেয় ফের সেখানে পদযাত্রা মমতার, আপ্লুত স্থানীয়রা

এদিন সিপিএম কংগ্রেসের বিরুদ্ধে সুর চড়ান কুণাল। তিনি বলেন, এর আসলে ভোট কাটুয়া হিসেবে কাজ করছে। ৩৪ বছরের অত্যাচারী জমানা বাংলার মানুষ ভোলেননি। গণহত্যা করার পর এখন সিপিএমের ভক্তরা টিভির পর্দায় সাধু সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। কুণালের কথায়, তৃণমূল সরকারের আমলে নিরানব্বই দশমিক পাঁচ শতাংশ ভাল কাজ হচ্ছে। রশিদ খানের বাড়ির আর ডি এক্স প্রসঙ্গ তুলে ধরে সিপিএমকে তুলোধোনা করেন তিনি। বক্তব্য শেষে সকলকে অনুরোধ করেন বিপুল ভোটে তৃণমূলকে জয়ী করার, যাতে আগামী দিনে যখন দিল্লিতে বৈঠকে যোগ দিতে যাবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, তখন যেন গোটা দেশের সাংবাদিকরা এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বরা যেন বুঝতে পারেন যে রাজধানীর বুকে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী (CM of West Bengal) এলেন দেশের নতুন সরকার গঠনের লাঙ্গল ধরতে।

 

Previous articleহাওড়ায় যে পথ বাকি ছিল সন্ধেয় ফের সেখানে পদযাত্রা মমতার, আপ্লুত স্থানীয়রা
Next articleমুখ পুড়ল বিজেপির! মালা-হাজি নুরুল প্রার্থিপদ বাতিলের আবেদন খারিজ কমিশনে