বিজ্ঞাপনে লোগো নেই! ‘জাতীয় দল’ বিজেপিকে কড়া বার্তা প্রধান বিচারপতির

জাতীয় একটি দল এই ধরনের প্রকাশনা কীভাবে করে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে এতে সাধারণ মানুষের মনে কী প্রতিক্রিয়া হবে

বাংলা দৈনিকে বিজেপির বিজ্ঞাপন মামলায় সিঙ্গল বেঞ্চের রায়ে হস্তক্ষেপ করল না প্রধান বিচারপতির (Chief Justice) ডিভিশন বেঞ্চ। তবে জাতীয় দল হয়ে কীভাবে বিজেপি এমন বিজ্ঞাপন প্রকাশ করল তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিবজ্ঞানম (T S Shivgnanam)। সেই সঙ্গে ‘লক্ষ্ণণরেখা’র কথা মনে করিয়ে দেন তিনি। বিজ্ঞাপন নিয়ে নিজেদের ভুল ও বিজেপির নির্দেশে কোনও পদক্ষেপ না নেওয়া নির্বাচন কমিশনের আরও একবার মুখ পুড়ল আদালতে।

বহুল প্রচারিত বাংলা দৈনিকে বিজেপির নির্বাচন সংক্রান্ত একটি বিজ্ঞাপনের ভিত্তিতে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন (writ petition) দায়ের করেন আইনজীবী সঞ্জয় বসু। অভিযোগ করা হয় বিজেপি, নির্বাচন কমিশন ও বাংলা দৈনিকের বিরুদ্ধে। বিজ্ঞাপনটিতে অবমাননাকর বক্তব্য ও নির্বাচন কমিশনের বিধি ভাঙা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য সেই বিজ্ঞাপন সংবাদপত্রে প্রকাশে নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চে যায় বিজেপি। এই মামলার শুনানিতে বুধবার প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ জাতীয় বা রাজ্যস্তরে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা থাকা প্রয়োজন যেখানে বেছে নেওয়া হবে কী প্রকাশনা করা উচিত ও কী উচিত নয়। অভিযোগকারী তৃণমূলকে কোনও রকম পক্ষপাতমূলক দৃষ্টিভঙ্গিতে না দেখে প্রধান বিচারপতির আরও পর্যবেক্ষণ, কোনও একটি লক্ষ্ণণরেখা থাকা দরকার। জাতীয় একটি দল এই ধরনের প্রকাশনা কীভাবে করে তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন তিনি। তবে এতে সাধারণ মানুষের মনে কী প্রতিক্রিয়া হবে তা নিয়ে প্রশ্নে তোলেন তিনি।

সেই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি স্মরণ করিয়ে দেন, বিজ্ঞাপনে সাধারণত কোনও সংস্থার লোগো (logo) ও বিশেষভাবে বেছে নেওয়া রঙ (colour scheme) ব্যবহার করা হয়। এই বিজ্ঞাপন (advertisement) একটি রাজনৈতিক দলের যেখানে কোনও লোগো বা রঙের ব্যবহার নেই, বলে স্পষ্ট পর্যবেক্ষণে জানান প্রধান বিচারপতি। এভাবে রাজনৈতিক দলের লড়াইতে সেই সাধারণ মানুষ ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন যাঁরা নিজেদের প্রতিনিধি নির্বাচিত করতে যাবেন। তাঁদের কাছে ভুল তথ্য পৌঁছবে, বক্তব্য প্রধান বিচারপতির।

পাশাপাশি তিনি বিজেপির আইনজীবীদের মনে করিয়ে দেন, নির্বাচনী আচরণবিধি লাগু থাকা অবস্থায় যে কোনও প্রকাশনার আগে নির্বাচন কমিশনের অনুমোদন প্রয়োজন। প্রধান বিচারপতির পর্যবেক্ষণ শীর্ষে (helm of affairs) থাকা ব্যক্তিদের কথার অনেক প্রভাব সমাজে থাকে। শহরের কথা বাদ দিলেও গ্রামীণ এলাকার মানুষের উপর এর বড় প্রভাব থাকে। বিজেপির করা পাল্টা মামলায় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ কোনও হস্তক্ষেপ করবে না জানালেও সিঙ্গল বেঞ্চে আবার তাঁরা আবেদন করতে পারেন বলে পর্যবেক্ষণে জানানো হয়, যেহেতু রায় প্রকাশের সময় তাঁদের প্রতিনিধি অনুপস্থিত ছিলেন।

Previous articleফের মোদির ভুয়ো বিজ্ঞাপনের পর্দাফাঁস: আবাস যোজনার নামই শোনেননি ‘মডেল’ লক্ষ্মী!
Next articleবসিরহাটের জেলাশাসক বদল, কলকাতা দক্ষিণের জেলা নির্বাচনী আধিকারিককেও সরাল কমিশন