মোদির ‘ভুয়ো’ ম্যাজিকের ট্র্যাজিক পরিণতি, শুভেন্দুকে কাঠগড়ায় তুললেন দিলীপ!

দায়িত্ব নিয়ে বিজেপিকে হারালেন শুভেন্দু অধিকারী (Subhendu Adhikari)! লোকসভা কেন্দ্র পাল্টে তৃণমূলের কাছে ধরাশায়ী হওয়া দিলীপ ঘোষের (Dilip Ghosh) নিশানায় এবার রাজ্যের বিরোধী দলনেতা।২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল (Loksabha Election Result) মোদি ম্যাজিকের ট্র্যাজিক পরিণতি সকলের সামনে তুলে ধরেছে। রাজ্য তথা দেশ বুঝেছে শুধুমাত্র বড় বড় কথা বললেই মানুষের সমর্থন মেলেনা। তাই ৪০০ পার করার বুলি আওড়ানো ভারতীয় জনতা পার্টি এককভাবে সংখ্যাগরিষ্ঠতা লাভ করতে ব্যর্থ। বাঙালি বিদ্বেষ থেকে শুরু করে বাংলার প্রাপ্য টাকা আটকে রাখা, ধর্মীয় মেরুকরণ থেকে শুরু করে সন্দেশখালি রাজনীতি ভাল চোখে নেয়নি পশ্চিমবঙ্গের মানুষ। তাই বিজেপি সরকারের (BJP Government) গালে থাপ্পড় মেরে ১২- তে নামিয়ে দিলেন জনগণ। কার্যতই বিরোধীদের বিসর্জন এই বাংলায়। আর ফলাফল সামনে আসতেই চওড়া হল বঙ্গ বিজেপির অন্দরের ফাটল। এরপরই রাজনীতির কাঠিবাজি তত্ত্বকে উসকে দিলেন দিলীপ ঘোষ (Dilip Ghosh)।

রাজ্যে ৪২ আসনের মধ্যে ২৯ টি আসনে জয়লাভ করেছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। রেকর্ড গড়েছেন ডায়মন্ড হারবার লোকসভা কেন্দ্রের বিজয়ী সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় (Abhishek Banerjee)। হেরেছেন বিজেপির হেভিওয়েট নেতারা। যার মধ্যে অন্যতম হলেন দিলীপ ঘোষ। বেশ কিছুদিন ধরেই দলের মধ্যে ক্রমশই গুরুত্ব হারাচ্ছিলেন প্রাক্তন সাংসদ। তাঁকে মেদিনীপুর কেন্দ্র থেকে সরিয়ে বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রে প্রার্থী করার সময় থেকেই শুভেন্দু বনাম দিলীপের লড়াইটা বিজেপিকে সমস্যায় ফেলেছিল। লোকসভা নির্বাচনে রাজ্যের বিরোধী দলনেতা নিজের আধিপত্য বজায় রাখতে প্রার্থী নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিয়েছিলেন বলে পদ্মশিবিরের তরফে জানা যায়। অনেকেই বলতে শুরু করেন, দিলীপকে রাস্তা থেকে সরাতেই তাঁর কেন্দ্র পরিবর্তন করানো হয়েছিল। মেদিনীপুর কেন্দ্রে শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ অগ্নিমিত্রা (Agnimitra Paul) টিকিট পান। কিন্তু রেজাল্ট ঘোষণা হতেই দেখা গেল এই দুই কেন্দ্রেই তৃণমূল কংগ্রেসের প্রার্থীদের কাছে লজ্জার হার গেরুয়া নেতাদের। মেদিনীপুরের জুন মালিয়ার (June Maliya) কাছে হেরেছেন অগ্নিমিত্রা পাল আর বর্ধমান দুর্গাপুরে কীর্তি আজাদের (Kirti Azad) কাছে হেরে গেলেন দিলীপ ঘোষ। এরপরই দলের অন্দরে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন দিলীপ, এমনটাই শোনা যাচ্ছে। শুধু তাই নয় এই বিপর্যয়ের দায় যে নন্দীগ্রামের বিধায়কের উপর বর্তায়, হাবেভাবে সেটাই যেন বুঝিয়ে দিতে চাইলেন বিজেপির একসময়ের দাপুটে নেতা। পরাজয় ঘোষণা হতেই দিলীপ জানান, শুধু তিনি একাই নন, হুগলি, আরামবাগ , বারাকপুরের মতো কেন্দ্রে তাঁদের হার অপ্রত্যাশিত। নির্বাচনে সঠিকভাবে প্রচার থেকে শুরু করে সংগঠন মজবুত করা পর্যন্ত অনেকটাই গলদ থেকে গেছে। যাঁরা দায়িত্ব নিয়েছিলেন তাঁরা সেই কাজ করতে ব্যর্থ। এই বিষয়ে পর্যালোচনার প্রয়োজন আছে। তিন বছরে বিজেপি বাংলায় এগোতে পারেনি। বুধবার সকালেও হাঁটতে বেরিয়ে ‘কাঠিবাজি’ প্রসঙ্গ থেকে দলীয় চক্রান্তের দিকে আঙুল তোলেন তিনি। অর্থাৎ নাম না করেই নিজের হারের জন্য কার্যত শুভেন্দুকেই কাঠগড়ায় তুললেন বর্ধমান দুর্গাপুর কেন্দ্রের পরাজিত বিজেপি প্রার্থী দিলীপ ঘোষ।

 

Previous articleআজ ইন্ডিয়া জোটের বৈঠকে দিল্লি যাচ্ছেন বাংলার ‘ডায়মন্ড’ সাংসদ অভিষেক
Next articleআজ ইডি দফতরে হাজিরা দেবেন ঋতুপর্ণা? বাড়ছে জল্পনা