ফের বাংলাকে বঞ্চনা, শেয়ার কেলেঙ্কারি থেকে নজর ঘোরাতেই কী করের টাকা দিল কেন্দ্র!

কেন্দ্রে এবার দুর্বল মোদি সরকার প্রতিষ্ঠা হলেও বহাল রইল রাজ্যের প্রতি চরম আর্থিক বঞ্চনা। সরকার গঠনের পরে নয়া দিল্লির প্রথম পদক্ষেপেই তা একরকম স্পষ্ট হয়ে গেল। ক্ষমতায় এসেই রাজ্যগুলিকে কর-বাবদ রাজস্ব খাতে ১,৩৯,৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নরেন্দ্র মোদি সরকার। বরাদ্দ অংকের নিরিখে যথারীতি পিছিয়ে রয়েছে বাংলা। বিজেপি শাসিত উত্তর প্রদেশ মধ্যপ্রদেশ তো বটেই জোট সঙ্গী নীতিশ কুমারের বিহারকে ঢেলে টাকা দেওয়া হয়েছে। যথারীতি বঞ্চিত হয়েছে বাংলা। এই প্রসঙ্গে দলের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বলেন, এটা বাংলার হকের টাকা। কেন্দ্র দয়া করছে না। যতটা বকেয়া সেই পরিমাণ তো দেয়া হয়নি। চাপে পড়ে বাধ্য হয়ে এই টাকা ছেড়েছে। তাঁর প্রশ্ন প্রায় ১ লক্ষ ৭০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে। এই টাকা গেলো কোথায়? কবে ছাড়বে কেন্দ্রীয় সরকার? আরও একটি প্রশ্নও তুলেছেন জয়প্রকাশ। তিনি বলেন, শেয়ার বাজার চাঙ্গা করার নাম করে বিজেপি তাদের ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী মহলকে লক্ষ লক্ষ কোটি টাকা মুনাফা করিয়েছে। মধ্যবিত্তের কথা তারা ভাবেনি। তারা সর্বস্বান্ত হয়েছে। এখন সে দিক থেকে নজর ঘোরাতেই কী একেবারে শুরুতে এই টাকা ছাড়া নতুন খেলা? দেশের মানুষকে ফের বোকা বোকা বানাচ্ছে। শেয়ার বাজারের এই কেলেঙ্কারি দেশের সবথেকে বড় আর্থিক স্ক্যাম।

সোমবার রাতের দিকে কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, কেন্দ্রীয় করের অংশ বাবদ রাজ্যগুলিকে ১,৩৯,৭৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হচ্ছে। আর রাজ্যগুলির মধ্যে প্রাপ্ত টাকার নিরিখে চতুর্থ স্থানে আছে পশ্চিমবঙ্গ। সবথেকে বেশি টাকা পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ। তারপরেই আছে বিহার এবং মধ্যপ্রদেশ। চারে আছে পশ্চিমবঙ্গ। অর্থ মন্ত্রকের তরফে জানানো হয়েছে, সর্বোচ্চ ২৫,০৬৯.৮৮ কোটি টাকা পেয়েছে উত্তরপ্রদেশ। বিহারকে ১৪,০৫৬.১২ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে। মধ্যপ্রদেশ পেয়েছে ১০,৯৭০.৪৪ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গ ১০,৫১৩.৪৬ কোটি টাকা পেয়েছে।

১০০ দিনের কাজ আবাস যোজনার মত কেন্দ্রীয় প্রকল্পে দীর্ঘদিন ধরে বঞ্চিত রয়েছে বাংলা। তাও মুখ্যমন্ত্রী নিজে উদ্যোগে রাজ্যে চলছে বিরাট উন্নয়নের কর্মযজ্ঞ। ২০২৩-২৪ সালের বাজেট এস্টিমেট অনুযায়ী, ২০১০-১১ থেকে রাজ্যের নিজস্ব আয় চারগুণের বেশি বেড়েছে। ২২,১২৯ কোটি টাকা থেকে বেড়ে ৮৮,৫৯৬ কোটি টাকায় পৌঁছেছে। উন্নয়ন খাতে ব্যয় ১৮ হাজার কোটির ঘর থেকে সাত গুণের বেশি বেড়ে তা ১ লক্ষ ৩৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গিয়েছে। মূলধনী খাতে ব্যয় বেড়েছে ১৫ গুণের বেশি। এর মধ্যে পরিকাঠামো খাতে ব্যয় বেড়েছে ৬ গুণের বেশি। সামাজিক খাতে ১২ গুণ ব্যয় বেড়েছে। অথচ রাজ্য থেকে বিপুল পরিমাণে রাজস্ব আদায় করে নিয়ে গেলেও তা ফেরাবার সময় জনম বৈষম্যের শিকার হচ্ছে বাংলা।

আরও পড়ুন- শরিকদের মাত্র ৫ পূর্ণমন্ত্রী, মন্ত্রকে মোদি-শাহ রাজ কায়েম