গণতন্ত্রের লজ্জা! ত্রিপুরায় ভোটের আগেই ৭১ শতাংশ আসনে জয়ী বিজেপি!

৮ অগস্ট ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। ফলাফল ১২ অগস্ট। তবে তার আগে একের পর এক হিংসার ঘটনায় নির্বাচন কতটা নির্বিঘ্নে হবে তা নিয়ে উদ্বেগ থাকবেই

বিজেপি শাসিত রাজ্য হলেই বাহুবলে ক্ষমতা দখলই যেন ট্যাডিশন। লোকসভা নির্বাচন থেকে পঞ্চায়েত নির্বাচন, সর্বত্রই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে ক্ষমতা দখল করে গণতন্ত্রের প্রহসন তৈরি করাই লক্ষ্য বিজেপির। এবার তারই প্রতিফলন মানিক সাহা পরিচালিত ত্রিপুরায়। ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৭১ শতাংশ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজেপি প্রার্থীদের জয়ী ঘোষণা নির্বাচন কমিশনের। ২০২১ সালে যেভাবে রক্তের ধারার মধ্যে দিয়ে পুরসভাগুলির ক্ষমতা দখল করেছিল বিজেপি, ২০২৪ পঞ্চায়েত নির্বাচনেও তারই প্রতিফলন।

২০২১ সালের পুরসভা নির্বাচনের আগে বিরোধীদের কণ্ঠরোধ করার জন্য মিথ্যা মামলা, হামলা থেকে সব ধরনের পথ নিয়েছিল তৎকালীন বিপ্লব দেব সরকার। তৃণমূল নেতৃত্ব বেশ কিছু আসনে বিজেপিকে কড়া চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলায় নিরঙ্কুশ ক্ষমতা অর্জন করতে বিজেপি যে দমননীতি নিয়েছিল তার বিরোধিতায় বিজেপি বিধায়করাও মুখ খুলেছিলেন সেই সময়। তবে এবারেও তার কিছু ব্যতিক্রম হল না। ইতিমধ্যে খুন করে পঞ্চায়েতের ক্ষমতা দখলের পথে বিজেপি। সিপিআইএমের জেলা পরিষদ প্রার্থী বাদল শিল খুন হওয়ার প্রতিবাদে ধর্মঘট করেও বিজেপির অত্যাচার থামাতে পারেনি পঞ্চায়েতে বিরোধী হিসাবে লড়াইয়ের মাঠে নামা বামেরা।

ত্রিপুরার পঞ্চায়েতে আসন সংখ্যা ৬৩৭০টি। তার মধ্যে ৪৫৫০ আসনেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিজেপি। বাকি ১৮৮৯ আসনে বিজেপির প্রতিদ্বন্দ্বী সিপিআইএম, কংগ্রেস এবং বিজেপির সহযোগী টিপরা মোথা। পঞ্চায়েত সমিতির মোট আসন ৪২৩টি, যার মধ্যে ২৪৪ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী শাসকদল। জেলা পরিষদের ১১৬ আসনের মধ্যে ২০টিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী ঘোষিত বিজেপি। তিন স্তরে সব মিলিয়ে ৭১ শতাংশ আসনেই বিরোধীদের প্রার্থী দেওয়া থেকে আটকানো বা জোর করে প্রত্যাহারের মতো অভিযোগের মধ্যে দিয়ে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী বিজেপি।

সদ্য সমাপ্ত লোকসভা নির্বাচনে মোদির রাজ্য গুজরাটে একটি লোকসভা আসনও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতার ‘নজির’ রেখেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব দেবের আমলেও ২০১৯ সালে পঞ্চায়েত নির্বাচনে ৮৯ শতাংশ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেতে বিজেপি। ৮ অগস্ট ত্রিপুরায় পঞ্চায়েত নির্বাচন। ফলাফল ১২ অগস্ট। তবে তার আগে একের পর এক হিংসার ঘটনায় নির্বাচন কতটা নির্বিঘ্নে হবে তা নিয়ে উদ্বেগ থাকবেই।

Previous articleএবার কোন সিনিয়রের কাছে ব্যাটের আবদার করলেন রিঙ্কু সিং?
Next articleদক্ষিণবঙ্গে কমবে বৃষ্টি, সপ্তাহান্তে ফের উত্তরবঙ্গে হাওয়া বদলের পূর্বাভাস আলিপুরের