Saturday, August 23, 2025

কেন্দ্রের সুপ্রিম ধাক্কা, খনিজ সম্পদের জমিতে কর বসানোর অধিকার রাজ্যের

Date:

Share post:

দেশের শীর্ষ আদালতে (Supreme Court) জোর ধাক্কা কেন্দ্রীয় সরকারের (Government of India)। খনিজ সম্পদের উপর চাপানো রয়্যালটি (Taxes on Mines) বাবদ উপার্জিত অর্থের ভাগাভাগি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে রাজ্যগুলির সঙ্গে কেন্দ্রের বিবাদে জয় রাজ্যের। বৃহস্পতিবার সুপ্রিম কোটের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের (DY Chandrachud) নেতৃত্বাধীন ৯ বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ ঐতিহাসিক রায় দিয়ে জানায় কয়লা, লৌহ আকরিক-সহ যাবতীয় খনিজ সম্পদ থেকে কর বাবদ আয় করতে পারবে রাজ্যগুলি যা এতদিন শুধু কেন্দ্রীয় সরকার একতরফা ভাবে আদায় করত। শীর্ষ আদালতের ১৯৮৯ সালের রায় খারিজ করে দিয়ে ডিভিশন বেঞ্চ এদিন জানিয়েছে যে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির আইনসভা এ সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারে এবং রাজ্যগুলির কর বসানোর ক্ষমতা রয়েছে।

খনিজ সম্পদের রয়্যালটি নিয়ে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত নতুন নয়। পশ্চিমবঙ্গের আসানসোল, রানিগঞ্জ এলাকা ছাড়াও বাঁকুড়া, বীরভূম, পুরুলিয়ার বিভিন্ন খনি থেকে তোলা খনিজ সম্পদ থেকে রাজ্য সরকারের আয়ের কোনও সুযোগই ছিল না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশাসনও কেন্দ্র-রাজ্য আলোচনায় এই প্রসঙ্গ তুলে রয়্যালটি খাতে প্রাপ্ত অর্থের ভাগ দাবি করে আসছিল। অবশেষে রাজ্যের পক্ষেই রায় দিলো শীর্ষ আদালত। ডিভিশন বেঞ্চ এদিন স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে যে রয়্যালটির সঙ্গে করের কোনও সম্পর্ক নেই। কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলিকে স্বত্ব থেকে আয়ের (রয়্যালটি) যে অংশ দেয়, তা কর বলে বিবেচনা করা যেতে পারে না। বেঞ্চ বৃহস্পতিবার জানিয়েছে, আইনের চোখে রয়্যালটি হল জমির মালিকের সঙ্গে ব্যবহারকারীর এক ধরনের বোঝাপড়া বা চুক্তি। তা নির্দিষ্ট মেয়াদের লিজও হতে পারে। যেহেতু ভারতে জমির প্রকৃত মালিক রাষ্ট্র তাই রয়্যালটি চাপানোর এক তরফা অধিকার শুধু কেন্দ্র ভোগ করে আসছে। কিন্তু রাজ্যগুলির তাদের ভৌগোলিক পরিসীমার মধ্যে উত্তোলিত খনিজ পদার্থের উপর স্বত্বধিকার রয়েছে, তাই সেই রাজ্যের সরকার করের হার স্থির করার অধিকারী। বিচারপতি বিভি নাগারত্ন ছাড়া আটজনই এই রায়কে সমর্থন জানিয়েছেন। এর ফলে খনিজ সম্পদে পূর্ণ রাজ্যের রাজস্ব বাবদ বিপুল অর্থ উপার্জনের রাস্তা খুলে গেল। শীর্ষ আদালতের রায়ে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হবে ওডিশা, মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, ছত্তিশগড় এবং পশ্চিমবঙ্গ।

সুপ্রিম নির্দেশ, পিছিয়ে গেল হাইকোর্টে স্থায়ী বিচারপতি নিয়োগ

এর আগে কেন্দ্রীয় সরকার এবং খনি সংস্থার তরফে রাজ্যকে রয়্যালটি স্থির করার ক্ষমতা দেওয়ার বিরোধিতা করা হয়েছিল। খনিজ সমৃদ্ধ রাজ্য ভারী কর আরোপ করে আকরিকের দাম বাড়াতে পারে বলে কেন্দ্রের তরফে যুক্তি দেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। এর বিরোধিতা করে ঝাড়খণ্ড-সহ কয়েকটি রাজ্য রয়্যালটি বণ্টনের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অসাম্যতার অভিযোগ তোলে। সংবিধানের দ্বিতীয় তালিকার ৫০ নম্বর এন্ট্রি অনুযায়ী খনিজ সম্পদ সম্পর্কিত কোনও সিদ্ধান্ত সংসদের নেই বলেও জানিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ। পাশাপাশি এতদিন কেন্দ্র রয়্যালটি বাবদ যে অর্থ উপার্জন করেছে তার ভাগ রাজ্যগুলিকে দিতে হবে কি না তা নিয়ে আগামী বুধবার (৩১ জুলাই) রায় ঘোষণা করবে সুপ্রিম কোর্ট।


spot_img

Related articles

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...

রাজ্যে শুরু SIR প্রস্তুতি: একাধিক পদক্ষেপ নির্বাচন কমিশনের

গোটা দেশেই এসআইআর লাগু হবে ঘোষণা করে দিয়েছিলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার জ্ঞানেশ কুমার (Gyanesh Kumar)। বিহারে ৬৫ হাজার...