আসল বিষয় থেকে নজর ঘুরছে না তো? বিরোধীদের একহাত নিলেন পরমব্রত

আর জি কর হাসপাতালে (RG Kar Medical College & Hospital) ট্রেনি ডাক্তারের ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজ্য জুড়ে প্রতিবাদের ঝড়। পথে নেবে প্রতিবাদ কর্মসূচিতে সাধারণ মানুষের সঙ্গে সামিল টলিউডের তারকারাও (Tollywood Actors)। প্রথম থেকেই মহিলাদের রাত দখল উদ্যোগ থেকে দোষীদের শাস্তির দাবিতে সরব সস্ত্রীক পরমব্রত চট্টোপাধ্যায় (Parambrata Chatterjee)। কিন্তু তা সত্বেও বারবার ‘ শাসকদল ঘনিষ্ঠ’ বলে সমাজমাধ্যমে নানাভাবে তাঁকে কটাক্ষ করা হয়েছে। এবার মুখ খুললেন পরিচালক অভিনেতা। স্যোশাল মিডিয়ায় দীর্ঘ পোস্টে বিরোধীদের একহাত নেওয়ার পাশাপাশি বুঝিয়ে দিলেন নক্কারজনক ঘটনা নিয়ে রাজনীতি করা তিনি কোনভাবেই সমর্থন করেন না।

চিকিৎসক ধর্ষণ- খুন কাণ্ডে রাস্তায় নেমে প্রতিবাদ করেছিলেন বলেই কি ঘোলা জলে মাছ ধরার বিরোধী রাজনীতি করতে হবে? বিগত কয়েকদিন ধরে যেভাবে সমাজমাধ্যমকে ব্যবহার করে ‘বাংলাদেশ’ পরিস্থিতি তৈরির চেষ্টা চলছে তাতে আসল অপরাধী আদৌ কি শাস্তি পাবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। পরমব্রত (Parambrata Chatterjee) জানাচ্ছেন, বিরোধীরা যে সমস্ত প্রসঙ্গে সরব হয়েছেন, তার সব কটি অভিযোগের সঙ্গে সহমত না হওয়ায় কটাক্ষ, সমালোচনার শিকার হতে হয়েছে অভিনেতাকে। দীর্ঘ পোস্টে তিনি লেখেন, ‘রাজ্যের শাসকদলের ঘনিষ্ঠ, এই তকমা বার বার গায়ে লাগে আমার! অতীতেও বহু বার হয়েছে! না আমি শাসকদলের সদস্য বা কর্মী, না আমি তাদের নেতা-মন্ত্রী। না আমি তাদের একনিষ্ঠ সমর্থক। না আমাকে তারা খাওয়া, না পরায়। আমি থাকি তাদের কোনও মিটিং-মিছিলে? থাকি না! তা হলে বার বার এই কথা শুনতে হয় কেন?’ অনেকেই ভেবেছিলেন অভিনেতার এই ভাবনাকে কাজে লাগিয়ে ‘রাজনীতি’ করবেন। কিন্তু আন্দোলন নিয়ে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের পাশে না থাকার কথা জানিয়ে পরমব্রত লেখেন, ‘রাজ্যের বিরোধী দলগুলির সমর্থকেরা যদি প্রত্যাশা করেন সবাই তাদের সুরেই গলা মেলাবেন, তা হলে তো ভুল হয়ে যাচ্ছে। প্রত্যেকের ভাবনাচিন্তা তো ভিন্ন ! আমার তো বটেই। আদর্শের জায়গা থেকে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দলের বিপরীত মেরুর লোক আমি। এই পরিস্থিতিতে, আপনাদের সব পক্ষের অনেকগুলি দাবির সঙ্গে আমি সহমত। কিন্তু সব নয়।’

কলকাতায় যে ঘটনা ঘটেছে তার তদন্তভার গেছে CBI-এর কাছে। অথচ আর জি কর কাণ্ডকে ঢাল বানিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর পদত্যাগের দাবি ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে। মূল ‘ফোকাস’ থেকে দূরে সরে অনেক বেশি করে সরকারের বিরোধিতা করা যেন স্যোশাল মিডিয়া ব্যবহারকারীদের রোজনামচা হয়ে দাঁড়িয়েছে। কী আবার প্রশ্ন তুলছেন কেন সেলেবরা অন্যরাজ্যের নারী নির্যাতনে এভাবে প্রতিবাদ করেন না। এই সবকিছু নিয়েও নিজের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন পরমব্রত চট্টোপাধ্যায়। নেটাগরিকদের উদ্দেশ্য করে তিনি লেখেন, কে কোন মিছিলে কবে গেল, কপা রাস্তা হাঁটল, ক’টা কথা বলল, সেগুলি আপনার পছন্দ মতো হল কি না! এই ‘উইচ হান্টিং’করতে গিয়ে আসল বিষয়টা থেকে নজর ঘুরে যাচ্ছে না তো? এটা করে কিছু রাগ প্রকাশ করা যাচ্ছে ঠিকই, কিন্তু যেখানে আসল কৈফিয়ত চাওয়ার কথা সেখানে ফাঁক থেকে যাচ্ছে। সারা দেশে মহিলাদের সুরক্ষা সুনিশ্চিত করার গোটা ব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন দরকার, সেটার জন্যে সকলে মিলে দাবি জোরদার করি আসুন!’ একতরফা সমালোচনাকারীদেরও ছেড়ে কথা বলেননি অভিনেতা। প্রশ্ন তোলেন, ‘উন্নাওয়ের সময়, হাতরাসের পরে, কিংবা মণিপুরের ঘৃণ্য ঘটনায়, আসিফার মৃত্যুর পর, এমনকি তিন-চার দিন আগে মুজফ্ফরনগরের ঘটনায় এ ভাবে এতটা ফেটে পড়েননি কেন? ওইগুলোও নারকীয়, আর জি করের ঘটনাও তাই। নিরপেক্ষ এবং দ্রুত বিচার ওগুলিতেও দরকার ছিল, এখানেও!’ পরমব্রতর এই দীর্ঘ পোস্টকে সমর্থন জানিয়েছেন অনেকেই।


Previous articleনিম্নচাপের জের! সপ্তাহের শুরুতেই ফের রাজ্যে দুর্যোগের পূর্বাভাস হাওয়া অফিসের
Next articleযখন দায়িত্বে তখন চুপ, আর জি কর নিয়ে শান্তনুর বিদ্রোহের কারণ কি