পিছিয়ে গেল বৈঠক, মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে একের পর এক সদস্যের ইস্তফা

তদন্ত চলাকালীনও যদি ওই সদস্যেরা কাউন্সিলের পদে থাকেন, তবে তিনি কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করবেন

আরজি কর-কাণ্ড নিয়ে তোলপাড় গোটা রাজ্য। প্রতিবাদের ঢেউ আছড়ে পড়েছে রাজ্য ছাড়িয়ে দেশ, দেশ ছাড়িয়ে বিদেশে।আর এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে একের পর এক সদস্য ইস্তফা দিচ্ছেন। শুধুমাত্র তাই নয়, সন্দীপ ঘোষ-সহ আরজি কর-কাণ্ডে নাম জড়ানো চিকিৎসকদের রেজিস্ট্রেশন বাতিলের দাবি উঠে গিয়েছে ইতিমধ্যে।যা পরিস্থিতি, মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠকও পিছিয়ে দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার এবং শুক্রবার এই বৈঠক হওয়ার কথা ছিল।কিন্তু বুধবার জানানো হয়েছে, বৈঠক পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কারণ হিসাবে কিছু জানানো হয়নি।

রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিল থেকে চিকিৎসক দীপাঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায় আগেই ইস্তফা দিয়েছেন।জানা গিয়েছে, বুধবার ইস্তফা দিলেন সাগরদত্ত মেডিক্যালের অধ্যাপক চিকিৎসক সুমন মুখোপাধ্যায়। তিনি কাউন্সিলকে লিখিত জানিয়েছেন, সন্দীপ এবং অন্যদের রেজিস্ট্রেশন অবিলম্বে বাতিল করা উচিত। তাতে কাউন্সিলের ভাবমূর্তি বজায় থাকবে। যদি তা না করা হয়, তবে এই চিঠিই তাঁর পদত্যাগপত্র হিসাবে গ্রহণ করতে বলেছেন ওই চিকিৎসক।তিনি আরও জানিয়েছেন, সন্দীপ-সহ যাদের নাম আরজি কর-কাণ্ডে প্রকাশ্যে এসেছে, তারা তদন্তে নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত কাউন্সিল থেকে তাদের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করা উচিত। তদন্ত চলাকালীনও যদি ওই সদস্যেরা কাউন্সিলের পদে থাকেন, তবে তিনি কাউন্সিল থেকে পদত্যাগ করবেন।

মঙ্গলবারই রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার মানস চক্রবর্তী বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার কথা জানান। তিনি কাউন্সিলের সভাপতি, সহ-সভাপতি এবং সদস্যদের ইমেল করে সে কথা জানিয়ে দেন।বৈঠকের পরবর্তী দিন পরে জানিয়ে দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, আরজি করে মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় রাজ্য রাজনীতি তোলপাড়। বিচার এবং নিরাপত্তার দাবিতে চিকিৎসকদের আন্দোলন চলছে। এই পরিস্থিতিতে আরজি কর-কাণ্ডে বেশ কয়েক জন চিকিৎসকের নামও জড়িয়েছে। বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসক বিরূপাক্ষ বিশ্বাস, এসএসকেএমের অভীক দে-সহ একাধিক চিকিৎসকের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

কিসের অভিযোগ? অপরাধস্থলের ভিডিয়োয় অভীককে দেখা গিয়েছিল।এরই পাশাপাশি, আরজি কর আবহে কিছু ভাইরাল অডিয়োয় বিরূপাক্ষকে হুমকি দিতে শোনা গিয়েছে বলে অভিযোগ।বুধবার তাকে বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ থেকে সরিয়ে কাকদ্বীপে পাঠানো হয়েছে। সেখানেও তাকে বিক্ষোভের মুখে পড়তে হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য মেডিক্যাল কাউন্সিলের বৈঠক পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন ওয়াকিবহালমহল।

আরজি কর হাসপাতালে গত ৯ অগাস্ট এক মহিলা চিকিৎসকের দেহ উদ্ধার হয়। তাকে ধর্ষণ এবং খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় এক জনকেই গ্রেফতার করা হয়েছে। কলকাতা পুলিশ গ্রেফতার করেছে এক সিভিক ভলান্টিয়ার। আপাতত তিনি জেল হেফাজতে। আদালতের নির্দেশে এই ঘটনার তদন্ত করছে সিবিআই। এখন দেখার কত তাড়াতাড়ি সিবিআই এই ঘটনার তদন্ত শেষ করে।

 

 

Previous articleক্ষুব্ধ উত্তরবঙ্গের ডাক্তাররা, রাজনৈতিক মেরুকরণ নিয়ে সতর্কতা তৃণমূলের
Next articleমিথ্যাচার! জুনিয়র ডাক্তারদের ‘নেতৃত্বের’ অভিযোগের পাল্টা প্রমাণ দিয়ে ধুয়ে দিলেন কুণাল