প্রধান বিচারপতির বাড়িতে প্রধানমন্ত্রী! ‘দায়বদ্ধতা’র প্রশ্ন আইনজীবী থেকে রাজনীতিকদের

সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিবাল৷ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল প্রধান বিচারপতির বাসভবনে না যাওয়া

প্রধান বিচারপতি কী আচরণবিধি ভাঙলেন? পদের মর্যাদা কী খর্ব হল? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির করা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টের পর দেশের সর্বোচ্চ আদালতের প্রধান বিচারপতির নাগরিকদের প্রতি সমাদরে প্রশ্ন চিহ্ন তুলে দিল। প্রশাসনের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তি ও বিচারবিভাগের সর্বোচ্চ পদে থাকা ব্যক্তি ব্যক্তিগতভাবে সম্পর্কের প্রচার দেশের বিচার ব্যবস্থার স্বাধীনতার উপর প্রশ্ন তুলে দিল।

বুধবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাসভবনে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ গণেশ চতুর্থী উত্‍সবে অংশ নিয়ে প্রধান বিচারপতির বাসভবনে গিয়ে গণেশের মূর্তির সামনে প্রধানমন্ত্রীকে আরতি করতেও দেখা যায়৷ তাঁর পাশেই উপস্থিত ছিলেন শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড় এবং তাঁর স্ত্রী কল্পনা দাস৷ প্রধানমন্ত্রী নিজেই এই ছবি টুইট করেন৷

কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপির বিরুদ্ধে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ মামলার শুনানি চলছে। বৃহষ্পতিবার সন্ধ্যায় গোটা ঘটনা নিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করেন সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি, বর্ষীয়ান আইনজীবী কপিল সিবাল৷ তাঁর দাবি, প্রধানমন্ত্রীর উচিত ছিল প্রধান বিচারপতির বাসভবনে না যাওয়া৷ কেন তিনি এমন বলছেন, তার ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে কপিল সিবাল বলেন, প্রধান বিচারপতি সম্পর্কে আমার প্রভূত শ্রদ্ধা আছে৷ উনি অত্যন্ত সত্‍ ও মহান ব্যক্তি৷ তারপরেও বলবো আমি গতকালের ভিডিও ও ছবি দেখে অবাক হয়ে গেছি৷ এই ধরণের ক্লিপ জনমানসে কি প্রভাব ফেলবে, সেটা ভাবা প্রয়োজন৷ আপনি কখনই নিজেকে এমন একটা জায়গায় নিয়ে যাবেন না, যেখানে সবাই আপনাকে নিয়ে গুজব তৈরি করবে৷

সুপ্রিম কোর্টের বর্ষীয়ান আইনজীবী ইন্দিরা জয় সিং বলেন, সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি নিজে প্রশাসনের শীর্ষ স্তরের সঙ্গে বজায় থাকা দূরত্বের সঙ্গে আপোষ করছেন৷ এর পরে প্রধান বিচারপতির নিরপেক্ষতা নিয়ে কিভাবে আস্থা রাখা সম্ভব ? একই সুরে গোটা ঘটনার সমালোচনা করেছেন প্রবীণ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণও৷

গোটা ঘটনা নিয়ে মুখ খুলেছেন প্রবীণ সাংসদ, শিবসেনা(উদ্ধব ঠাকরে গোষ্ঠী) নেতা সঞ্জয় রাউত৷ তাঁর যুক্তি, এই সাক্ষাতের পরে দেশবাসীর মনে অনেক ধরণের প্রশ্ন জাগবে৷ প্রধান বিচারপতির উচিত ছিল এই সব ঘটনা থেকে দূরে থাকা৷ তিনি তা করেননি , এটা দুর্ভাগ্যজনক৷ আরজেডি সাংসদ মনোজ ঝাঁর দাবি, গণেশ পুজো একটা ব্যক্তিগত বিষয়৷ সেখানে ক্যামেরা নিয়ে যেভাবে প্রধানমন্ত্রী ও প্রধান বিচারপতিকে একসঙ্গে দেখানো হল, তা অনেক প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে৷ যদিও সিব্বলের দাবি, তিনি নিশ্চিত প্রধান বিচারপতি জানতেন না যে ভিডিও ছবি পাবলিক করা হচ্ছে৷ এটা দুর্ভাগ্যজনক৷

Previous articleফের শিরোনামে পৃথ্বী, সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রেমিকাকে বিশেষ বার্তা
Next articleমদ্যপ পুলিশ এবং সিভিক ভলেন্টিয়ারদের বিরুদ্ধে কড়া পদক্ষেপ নেবে রাজ্য পুলিশ