সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দিল। ধৈর্য ধরে তিনদিন নবান্নে দু’ঘণ্টার বেশি সময় অপেক্ষা করলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তারপরেও কর্ম বিরতি তোলা তো দূরস্ত আলোচনার টেবিলেই বসলেন না আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের এই অনমনীয় মনোভাবে আশাহত ‘দেশ বাঁচাও গণমঞ্চ’। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবের সাংবাদিক বৈঠক থেকে গণমঞ্চের পক্ষে পূর্ণেন্দু বসু বলেন, “জুনিয়র ডাক্তারদের আচরণ আমাদের হতাশ করেছে।”

এদিন দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষে পূর্ণেন্দু বসু বলেন, মুখ্যমন্ত্রী নিজে তাঁদের সঙ্গে খোলা মনে আলোচনায় বসার আহ্বান জানিয়ে ছিলেন। ৩৪ জনকে নিয়ে বৈঠকে উপস্থিত থাকার সম্মতি পেয়েও লাইভ স্ট্রিমিংয়ের বাহানায় বৈঠক এড়িয়ে গেলেন। ডাক্তারদের এই ভূমিকায় আমরা বুঝতে পারছি না, তাঁদের কাছে কোনটা বেশি গুরুত্বপূর্ণ? লাইভ স্ট্রিমিং, না মানুষের লাইফ। ডাক্তারদের আচরণের সাধারণ মানুষের মনেও তাঁদের উদ্দেশ্য নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিয়েছে। এদিন সাংবাদিক বৈঠকে পূর্ণেন্দু বসু ছাড়াও ছিলেন সাংবাদিক রন্তিদেব সেনগুপ্ত, সঙ্গীতশিল্পী সৈকত মিত্র প্রমুখ। ছিলেন ‘বিনা চিকিৎসায়’ মৃত বিক্রমের মা কবিতা ভট্টাচার্যও।

আরও পড়ুন- ছেলের জন্মদিনে মেয়েকে সামনে আনলেন শুভশ্রী, ইয়ালিনীকে দেখে মুগ্ধ নেটপাড়া

দেশ বাঁচাও গণমঞ্চের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, তারা এ-ও লক্ষ্য করেছে, মুখ্যমন্ত্রী জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি আবার সহানুভূতি প্রদর্শন করেছেন। রাজ্য প্রশাসন তাঁদের প্রতি কোনওরকম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে না বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর এই মানবিক আবেদনকে সাধুবাদ জানায় তারা। গত একমাসে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির ফলে সময়মতো চিকিৎসা পরিষেবা না পেয়ে ২৯ জন মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন। এই ঘটনা খুবই দুঃখজনক। তা যেন আর না ঘটে, সেদিকে নজর দিন ডাক্তাররা।

মুখ্যমন্ত্রী নমনীয় আচরণ দেখানোর পরও জুনিয়র ডাক্তাররা এতটা অনমনীয় তা ভাবা যায় না। তারা চান, জুনিয়র ডাক্তাররা অবিলম্বে কাজে ফিরুন। অনেকে তা চাইছেন। কিন্তু কতিপয় জুনিয়র ডাক্তার নেতা চাপ দিয়ে কর্মবিরতি করতে বাধ্য করাচ্ছেন। জুনিয়র ডাক্তারদের কাছে অনুরোধ, কারও প্ররোচনায় বা কারও অঙ্গুলি হেলনে কর্তব্যবিমুখ হবেন না। তিলোত্তমার নৃশংস হত্যাকাণ্ডের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলুক। পাশাপাশি সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবাও অব্যাহত থাকুক।