রাজনৈতিক স্বার্থ পূরণেই আলোচনার ‘নাটক’ জুনিয়র চিকিৎসকরদের! চটলেন সিনিয়ররা 

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান নজিরবিহীন পদক্ষেপ করে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছেন। কিন্তু আন্দোলনরত চিকিৎসকরা আদৌ সমাধান সূত্র খুঁজছেন কি? নাকি চিকিৎসক তরুণীর মৃত্যুকে শিখন্ডী করে উগ্র বামসমর্থক ডাক্তারদের অন্য স্বার্থচরিতার্থতার পরিকল্পনা চলছে? শনিবার জুনিয়র ডাক্তারদের আচরণে এমন প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে প্রবীণ চিকিৎসক মহলে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) যতটা সদিচ্ছা দেখিয়ে সমস্যা সমাধানে চেষ্টা করছেন, তার থেকে বেশি অনড়, একগুঁয়ে মনোভাবে আন্দোলনের অভিমুখ বদলানোর চেষ্টা করছেন জুনিয়র চিকিৎসকদের (Junior Doctors) একাংশ! আন্দোলনরত ডাক্তারদের কার্যক্রম এবং ব্যবহারে বেজায় চটলেন সিনিয়র চিকিৎসকরা। মঙ্গলেই ‘সুপ্রিম’ কোপ পড়ার আশঙ্কা ডাক্তারদের একাংশের।

গণ আন্দোলন থেকে উঠে আসা জননেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ‌্যায় জুনিয়র চিকিৎসকদের কাছে যেভাবে ছুটে গেছেন, পাশে দাঁড়িয়েছেন, সেই ভূমিকায় এ যাবৎ কালে দেশের কোনও রাজ্যের কোনও পদাধিকারীকে দেখা যায়নি। অথচ প্রশাসনিক প্রধানকে ক্রমাগত অপমান করে চলেছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা (WBJDF)। কালীঘাটে মিটিং না হওয়ার পর মিডিয়ার সামনে যেভাবে ‘ঘাড় ধাক্কা’ তত্ত্ব খাড়া করেছেন আন্দোলনরতরা, তা যে সর্বৈব মিথ্যে তার প্রমাণ হিসেবে একাধিক ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এরপরই প্রশ্ন উঠছে আদৌ কি সমাধান চান জুনিয়র চিকিৎসকরা? প্রশ্ন উঠছে সদিচ্ছা নিয়ে।

বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর আন্তরিক প্রয়াস সত্ত্বেও সমস্যার সমাধান হলো না। শনিবার কার্যত আলোচনার ‘নাটক’ করে বেড়ালেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। মুষ্টিমেয় কট্টর বামপন্থী জুনিয়র এদিনের ঘটনার নেপথ্যে রয়েছে বলে সরাসরি অভিযোগ উঠছে। আর তাতেই বেজায় চটেছেন প্রবীণ চিকিৎসকরা। শনিবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন জুনিয়র চিকিৎসকদের কাজে ফেরার অনুরোধ করছেন এবং অভয় দিচ্ছেন কোন কড়া পদক্ষেপ না নেওয়ার তখন ধর্নামঞ্চ থেকে কিছুটা দূরে দাঁড়িয়ে থাকা মেদিনীপুর, বর্ধমান , বাঁকুড়া মেডিক‌্যাল কলেজের ইন্টার্নদের মধ্যে একরাশ বিস্ময়।এমন মুখ্যমন্ত্রীও হয়? এ কার বিরুদ্ধে লড়াই করে স্লোগান দিচ্ছিলেন তাঁরা? মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র চিকিৎসক রবি শংকর পাল বিস্ময়ে পিছু হটতে শুরু করেন আন্দোলন থেকে। মুখ্যমন্ত্রী ধর্নামঞ্চ থেকে চলে যেতেই বিভিন্ন জেলার মেডিক্যাল কলেজের ইন্টার্ন এবং পিজিটিরা ব্যাগ গুছিয়ে কাজে ফেরার প্রস্তুতি নিতে থাকেন। বাঁকুড়ার ডাক্তাররা তো জানিয়ে দেন রবিবার থেকে ১২ ঘণ্টা করে ডিউটিতে ফিরছেন তাঁরা। এরপর দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত মুখ্যমন্ত্রীর অপেক্ষা, বৃষ্টি ভিজে জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতি তাঁর মানবিক আবেদন – এই সব কিছুর পর জুনিয়রদের আচরণে আন্দোলনের অভিমুখ নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন সিনিয়র ডাক্তাররা। তাঁরা স্পষ্ট বলছেন, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মুখ্যমন্ত্রীকে বিরোধীরাও এভাবে অপমান করেনি। অভিযোগের আঙুল উঠছে উগ্র বাম সমর্থক চিকিৎসকদের দিকে। জুনিয়র ডাক্তারদের শনিবারের আচরণের তীব্র সমালোচনা করেছেন বিভিন্ন চিকিৎসক সংগঠন। আন্দোলনরত ডাক্তারদের নিয়মিত ‘নাটক’ এবং ‘মিথ্যাচার’ সমর্থনযোগ্য হতে পারে না বলে মনে করছেন তারা। সার্ভিস ডক্টর্স ফোরাম (Service Doctors Forum) বলছে মুখ্যমন্ত্রীর সৌজন্যতার এতটুকু সম্মান করেননি বিক্ষোভকারী চিকিৎসকরা। প্রশ্ন উঠছে একগুঁয়েমি হয়ে লাভটা কী হল? সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) এই ঘটনার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না তো? ইতিমধ্যেই জুনিয়র চিকিৎসকদের নিজেদের আলোচনার একটি অডিও ভাইরাল হয়েছে (ভাইরাল অডিওর সত্যতা যাচাই করেনি বিশ্ববাংলা সংবাদ)। সেখানে শোনা গেছে যে আগামী মঙ্গলবারের শুনানিতে আইনজীবী পরিবর্তন থেকে শুরু করে কর্মবিরতি তুলে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েও যথেষ্ট দ্বিধাবিভক্ত জুনিয়র চিকিৎসকরা।


Previous articleআরজি কর কাণ্ডে ‘রহস্যজনক ভুল’ পুলিশের! ভিডিয়ো কনফারেন্সিংয়ে CBI-এর জিজ্ঞাসাবাদ 
Next articleযোগী রাজ্যে বহুতল ভেঙে ১০ জনের মৃত্যু! ধ্বংসস্তূপের নীচে আটকে একাধিক