দাবি মেনেছেন মুখ্যমন্ত্রী, মামলা চলছে সুপ্রিম কোর্টে; এখনও কর্মবিরতি কেন, প্রশ্ন আমজনতার

রাজ্য সরকার জানিয়েছে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু হয়ে গেছে, সেখানে দাঁড়িয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার না করে উল্টে টানা আন্দোলন চালিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি কি রাজনৈতিক চক্রান্তের দিকে ইঙ্গিত করছে না?

বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) জুনিয়র ডাক্তারদের ৯৯ শতাংশ দাবি মেনে নিয়েছেন। দুর্যোগের ঘনঘটায় আন্দোলনরত চিকিৎসকদের পাশে দাঁড়াতে পৌঁছে গেছেন তাঁদের ধর্নামঞ্চে। নগরপাল, DC north, স্বাস্থ্য অধিকর্তা, স্বাস্থ্যশিক্ষা অধিকর্তাকে রাজ্য প্রশাসন পদ থেকে সরানো হয়েছে। অথচ ৪০ দিন হতে চলল এখনও কর্মবিরতি প্রত্যাহার করলেন না জুনিয়র ডাক্তাররা। উল্টে আবার নতুন দাবি জুড়ে মুখ্যসচিবকে মেইল পাঠাবে WBJFF। তাহলে কি একটা দাবি পূরণ হলে আরও একটা দাবি নিয়ে রাজ্য সরকারকে (Government of West Bengal) ব্যতিব্যস্ত করাটাই এই আন্দোলনরত চিকিৎসকদের আসল লক্ষ্য? যেখানে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court) জানিয়েছে সিবিআইকে তদন্তের জন্য সময় দিতে হবে এবং রাজ্য সরকার জানিয়েছে হাসপাতালগুলির নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে কাজ শুরু হয়ে গেছে, সেখানে দাঁড়িয়ে কর্মবিরতি প্রত্যাহার না করে উল্টে টানা আন্দোলন চালিয়ে দেওয়ার হুঁশিয়ারি কি রাজনৈতিক চক্রান্তের দিকে ইঙ্গিত করছে না? এ প্রশ্নই ঘোরাফেরা করছে সাধারণ মানুষের মনে।

৯ সেপ্টেম্বর আন্দোলনরত ডাক্তারদের কাজে ফেরার নির্দেশ দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। সেই নির্দেশ তাঁরা অমান্য করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছিলেন তিনি কোন কড়া পদক্ষেপ করবেন না। শুধু আবেদন, যাতে জুনিয়র ডাক্তাররা নিজেদের ডিউটিতে ফিরে যান। স্বাস্থ্য পরিষেবার কথা মাথায় রেখে রাজ্য সরকারের এই নমনীয় মনোভাবের প্রশংসা হয়েছিল সর্বত্র। রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধানকে নিয়ে কুরুচিকর স্লোগান, ঘণ্টার পর ঘণ্টা তাঁকে অপেক্ষা করানোর মতো ধৃষ্টতা দেখানোর পরেও এই ডাক্তারদের নিজের বাড়িতে ডেকে পঞ্চম বারের জন্য আলোচনার প্রস্তাব দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। মধ্যরাত পর্যন্ত সেই আলোচনা চলে এবং তার ‘মিনিটস’ লেখার পর তাতে ৪২ জন চিকিৎসক স্বাক্ষর করেছিলেন। এরপরেও কর্মবিরতি – আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় জুনিয়র ডাক্তাররা। সমাজ মাধ্যমের একাংশ তাঁদের সমর্থন করলেও সাধারণ মানুষ বলছেন যে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী এতটা মানবিক পদক্ষেপ করতে পারেন সেখানে দাঁড়িয়ে ডাক্তারদের সবার আগে নিজেদের কর্তব্যে অবিচল থাকা উচিত। এটা যেন প্রাইমারি স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীদের বায়নার মতো হয়ে দাঁড়াচ্ছে, যেখানে একটা দাবি পূরণ করলেই আর একটা নিয়ে হাজির হয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। সভ্য শিক্ষিত ডাক্তারদের কাছে এমন আচরণ সত্যিই আশা করা যায় না। হতাশ আমজনতা। WBJDF বলছে, নিরাপত্তা, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়ন-সহ আরও একাধিক দাবি এখনও পূরণ হয়নি।সেই সঙ্গে তাঁরা রেসিডেন্ট ডক্টর কাউন্সিল ও ডক্টরস ইউনিয়ন তৈরি দাবিও জুড়েছেন। বুধবার দুপুরের মধ্যে এই সমস্ত দাবি নিয়ে তাঁরা সরকারের কাছে মেইল পাঠিয়ে দ্রুত পদক্ষেপ করার কথা জানাবেন বলে খবর। অর্থাৎ কবে কাজে ফিরবেন ডাক্তাররা সে প্রশ্নের উত্তর এখনও অধরা।


Previous articleফের জল ছাড়ল ডিভিসি, দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলায় তৎপর নবান্ন 
Next articleবন্যা পরিস্থিতি পরিদর্শনে হুগলিতে মুখ্যমন্ত্রী