Sunday, August 24, 2025

দ্বিতীয় স্বামীর সঙ্গে সংসার ‘মৃত’ মহিলার, খুনের দায়ে জেল খাটছেন স্বামী!

Date:

Share post:

স্ত্রীকে পণের জন্য খুন করার শাস্তিতে জেল খাটছেন স্বামী। এই খবর নতুন নয়। প্রায়ই শোনা যায় এমন ঘটনা। কিন্তু যাঁকে খুনের দায়ে স্বামী কারাদণ্ড ভোগ করছেন, তিনি যদি জীবিত থাকেন! চমক এখানেই শেষ নয়। সকলের চোখে মৃত স্ত্রী নতুন করে সংসার করছেন তাঁর নতুন স্বামীর সাথে। এমন ঘটনার কাছে হার মানতে পারে টানটান চিত্রনাট্য বা উপন্যাস। বিহারের (Bihar) ভোজপুর (Bhojpur) জেলার এই খবরটি সামনে আসতেই হতবাক সকলে।

বিয়ের পর থেকে প্রায় মারধর করতেন স্বামী (Husband)। তা সহ্য করতে না পেরে বাধ্য হয়ে তাঁর বাবা-মায়ের ঘরে ফিরে যান স্ত্রী (Wife) ধর্মশীলা দেবী। এদিকে দু’মাস কাটতে মা মারা যান ধর্মশীলার। এতে ফের নতুন সমস্যা আসে তাঁর জীবনে। বাবা ‘কুনজরে’ দেখতে শুরু করে ধর্মশীলাকে বলে অভিযোগ। শ্বশুর বাড়িতে স্বামীর নির্যাতন, অন্য দিকে বাবার কীর্তিতে নিজেকে শেষ করে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন তরুণী। আর এরপর গল্পে আসে টুইস্ট। নায়কের মত এক ব্যক্তি শেষ মুহূর্তে প্রাণ বাঁচান ধর্মশীলার। এরপরই এই ব্যক্তি ধর্মশীলাকে একটি মন্দিরে গিয়ে বিয়েও করেন।

এদিকে খোঁজাখুঁজির পরও ধর্মশীলার সন্ধান না পেয়ে তাঁর বাবা অবধ বিহারী ধর্মশীলার স্বামী দীপক, শ্বশুর প্রমোদ সিং এবং শ্যালক রবিশঙ্করের বিরুদ্ধে খুনের মামলা (attempt to murder case) দায়ের করেন। ৩১ অক্টোবর ২০২০ সোন নদীর তীরে একটি মৃতদেহ খুঁজে পায় পুলিশ, যেটিকে অবধ বিহারী সিং তাঁর মেয়ে ধর্মশিলা দেবী হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন। পরে পুলিশ সদর হাসপাতালে লাশের ময়নাতদন্তও করে। ফলে খুনের অভিযোগে ধর্মশিলা দেবীর প্রথম স্বামী দীপককেও জেলে (Arrested) পাঠিয়েছিল পুলিশ।

এর পর কেটে গিয়েছে ৪ বছর! হঠাৎ পুলিশ দেখতে পায় ধর্মশীলাকে। হতবাক পুলিশ! তিনি তো জীবিত! পুলিশ সূত্রে খবর, এরপর সেই দিনের কথা খুলে বলেন ধর্মশীলা দেবী। একদিকে স্বামীর অত্যাচার (Accused) এবং অন্যদিকে বাবার কুনজরের কারণেই ধর্মশীলা আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়ে রেল ট্র্যাকে হাঁটা শুরু করেন। সামনে থেকে ট্রেন আসতে দেখে ধর্মশীলাকে নায়ক হয়ে বাঁচান এক যুবক। এরপর যুবকের সাথে কথা বলে আত্মহত্যার সিদ্ধান্ত থেকে সড়ে আসেন সে। এরপর ধর্মশীলাকে, গাঙ্গীতে অবস্থিত বিশ্বকর্মা মন্দিরে বিয়ে করে আরাতে বসবাস শুরু করেন সেই যুবক। এদিকে জীবিত স্ত্রী কে খুনের দায়ে জেল খাটছিল বেচারা স্বামী!

ইতিমধ্যে পুলিশ ধর্মশীলাকে উদ্ধার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় তাঁর জবানবন্দি রেকর্ড করার পর সদর হাসপাতালে ডাক্তারি পরীক্ষা করান। ১৭ অক্টোবর টাউন থানার পুলিশ মীরগঞ্জ মহল্লা থেকে ধর্মশীলাকে উদ্ধার করে চৌরি থানায় হস্তান্তর করে। এবিষয়ে ধর্মশালা দেবী জানান- “বাবা মিথ্যা এফআইআর নথিভুক্ত করেছেন। পুলিশ মীরগঞ্জে আমার বাড়িতে এসে আমাকে থানায় নিয়ে যায়। আমার বাবা আমার প্রথম স্বামীকে মিথ্যা বলে, অন্য মহিলার মৃতদেহকে আমার মনে করে, মিথ্যা এফআইআর দায়ের করে। আমি আরা মীরগঞ্জের বাসিন্দা অজয় কাহারকে বিয়ে করেছি। আমার দুই সন্তান আছে।”

spot_img

Related articles

উড়ালপুল–সেতুর নীচে বেআইনি দখলদারি সরাতে ‘উচ্ছেদ অভিযান’! উদ্যোগী কেএমডিএ 

কলকাতার উড়ালপুল ও সেতুর নীচ থেকে বেআইনি দখলদারি সরাতে উদ্যোগী হল কলকাতা মেট্রোপলিটন ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (কেএমডিএ)। ইতিমধ্যেই চারটি...

ফের জেলা সফরে মুখ্যমন্ত্রী, ২৬ অগাস্টে বর্ধমানে প্রশাসনিক বৈঠক 

চলতি সপ্তাহ থেকেই ফের শুরু হচ্ছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জেলা সফর। আগামী মঙ্গলবার, ২৬ অগাস্ট তিনি পৌঁছাবেন বর্ধমান।...

ঠাকুরবাড়ির স্বার্থের রাজনীতি ফাঁস: শান্তনুকে কাঠগড়ায় তুললেন মা-দাদা

বিজেপির মধ্যে ঝগড়া ও স্বার্থের লড়াই শুরু হয়েছে বনগাঁর ঠাকুরনগরে। মতুয়া (Matua) সমাজের প্রভূত উন্নয়ন করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা...

মতুয়াদের নাগরিকত্ব দেওয়ার অধিকার কার: চরম দ্বন্দ্ব শান্তনু-সুব্রতর

কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শান্তনু ঠাকুরের বিরুদ্ধে এবার গোটা ঠাকুর পরিবার। মতুয়া সম্প্রদায়ের মানুষদের ঘটা করে যে নাগরিকত্ব দেওয়ার খেলায়...