Friday, November 14, 2025

চুঁচুড়া আদালতে ঐতিহাসিক রায়: যুবকের নৃশংস খুনে ৭ দোষীর ফাঁসির সাজা ঘোষণা

Date:

Share post:

ত্রিকোণ প্রেমের জেরে যুবক খুনে ঐতিহাসিক রায় দিল চুঁচুড়া আদালত (Court)। সাত দোষীর ফাঁসির সাজা শোনাল চুঁচুড়ার (Chunchura) ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট। ত্রিকোণ প্রেমের জেরে ৬ টুকরো করা হয়েছিল চুঁচুড়ার যুবক বিষ্ণু মালকে (Bishnu Maal)। এই মামলায় সোমবার ৮ জনকে দোষী সাব্যস্ত করে চুঁচুড়া আদালত।

চার বছর আগে ত্রিকোণ প্রেমের জেরে খুন হয়েছিলেন বছর তেইশের যুবক বিষ্ণু মালকে (Bishnu Maal)। মোটরবাইকে করে তুলে নিয়ে গিয়েছিল হুগলির কুখ্যাত দুষ্কৃতী বিশাল দাস ও তাঁর সাগরেদরা। এই হত্যাকাণ্ডে বিশাল ও তাঁর সাতসঙ্গীকে দোষী সাব্যস্ত করে ছিল চুঁচুড়া আদালতের ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট। এই নরকীয় হত্যাকাণ্ডে সাতজনকে ফাঁসি সাজা শোনাল আদালত। একজনকে ৭ বছরের কারাদণ্ডের রায় নির্দেশ দিলেন বিচারক শিবশঙ্কর ঘোষ।

২০২০ সালের ১১ অক্টোবর চুঁচুড়া শহরের জনবহুল এলাকা রায়ের-বেড় থেকে বিষ্ণুকে তুলে নিয়ে যায় বিশাল ও তাঁর সাগরেদরা। সেই রাতেই চাঁপদানি এলাকায় একটি বাড়িতে বিষ্ণুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে বিশাল। ধড়মুণ্ড আলাদা করে দেহ ৬ টুকরো করা হয়। দেহ টুকরো করার ছবি মোবাইলে তুলে রাখে। পরে প্যাকেটে করে শেওড়াফুলি ও বৈদ্যবাটির বিভিন্ন জায়গায় দেহাংশ ফেলে দেয়। ঘটনার তদন্তে নেমে অন্যান্য অভিযুক্তদের গ্রেফতার করে পুলিশ। জেরায় বিষ্ণুর দেহের খণ্ডিত অংশ কোথায় কোথায় ফেলা হয়েছে তাঁর সন্ধান দেয় দুষ্কৃতীরা। সেই অনুযায়ী পুলিশ দেহাংশ উদ্ধার করলেও বিষ্ণুর কাটা মুন্ডুর সন্ধান পায়নি।

পরবর্তীতে ক্যানিং এর জীবনতলা থানা এলাকায় কয়েকজনকে গুলি চালিয়ে স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়ে বিশাল। চন্দননগর পুলিশ তাকে নিয়ে আসে চুঁচুড়া থানায়। বিষ্ণুর কাটা মাথা কোথায় ফেলেছে পুলিশের জেরায় তা জানায় সে। এরপরেই বৈদ্যবাটি খালের ধার থেকে প্লাস্টিকে মোড়ানো অবস্থায় মুণ্ড উদ্ধার করে পুলিশ। চুঁচুড়া শহরে এই নারকীয় হত্যার নিন্দায় সরব হয় সব অংশের মানুষ।

সকাল থেকেই চুঁচুড়া আদালতের সামনে বিষ্ণু মাল হত্যাকাণ্ড মামলার রায়দানের সময়ও অপরাধীদের ফাঁসির দাবিতে পোস্টার হাতে জড়ো হন বহু মানুষ। এই মামলায় একজন রাজসাক্ষী ছিল। তাঁকে মুক্তি দেয় আদালত।

এই খবর আসতেই আনন্দে আত্মহারা সহ কান্নায় ভেঙে পড়েন বিষ্ণুর মা-সহ তার গোটা পরিবার। পরিবারের প্রত্যেক সদস্য আদালত প্রশাসন সকলকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করতে ভুললেন না। তাঁদের সকলের মুখেই বিষ্ণুর আত্মার শান্তি শোনা গেল। বিষ্ণুর মা বলেন, আজ আমার ছেলের জন্ম মাস। আর এই মাসেই তার দোষীদের মৃত্যুদণ্ড রায় তাঁর আত্মার শান্তি দেবে।

আদালতের ঐতিহাসিক রায়ের বিষয় নিয়ে সরকারি আইনজীবী বিভাস চট্টোপাধ্যায় বলেন, আমার আইনজীবী পেশায় জীবনের এমন রায় শোনতে পাইনি। আজকের রায়ের পর মানুষের আবার আইন ও আদালতের প্রতি আস্থা ফিরল।








spot_img

Related articles

সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানি! গ্রেফতার RG Kar আন্দোলনের ‘বিপ্লবী’ ডাক্তার

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বারাসাতে সরকারি হাসপাতালে নাবালিকা রোগীর শ্লীলতাহানির অভিযোগে। ঘটনায় গ্রেফতার বারাসাত মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের...

আন্দুল রোডে বিধ্বংসী অগ্নিকাণ্ড! ভস্মীভূত দুই স্পঞ্জ কারখানা 

রাতের হাওড়ায় ভয়াবহ আগুনে কার্যত ছারখার হয়ে গেল আন্দুল রোডের পাশে হাঁসখালি পোল এলাকার দুটি স্পঞ্জ তৈরির কারখানা।...

সোনারপুরে শুরু হচ্ছে প্রবীণদের জন্য বিনামূল্যে নিউমোনিয়া ও ফ্লু টিকাকরণ কর্মসূচি

শীতের আগমনের সঙ্গে সঙ্গেই নিউমোনিয়ার সংক্রমণ বাড়ছে রাজ্যজুড়ে। বিশেষ করে প্রবীণ নাগরিকদের ক্ষেত্রে এই রোগ অনেক সময় প্রাণঘাতী...

প্রকাশিত হল আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি

প্রকাশিত হল আগামী বছরের দশম এবং দ্বাদশ শ্রেণির আইসিএসই এবং আইএসসি পরীক্ষার সময়সূচি। কাউন্সিলের তরফে এদিন বিজ্ঞপ্তি জারি...