Thursday, November 13, 2025

ক্ষতিপূরণ চাই না: রায় শুনে কান্নায় ভেঙে পড়লেন মৃতার বাবা-মা

Date:

Share post:

বিরলের মধ্যে বিরলতম নয়। সেই তত্ত্বে ফাঁসির সাজা হল না আর জি কর কাণ্ডের মূল অপরাধী সঞ্জয় রাইয়ের। সকাল থেকে আদালতের কাছে সঞ্জয়ের ফাঁসি দাবি করা নির্যাতিতার পরিবার রায়ের পরে অস্বীকার করলেন ক্ষতিপূরণ গ্রহণ করতে। রায় শুনে শিয়ালদহ আদালতের (Sealdah Court) এজলাসেই কান্নায় ভেঙে পড়লেন চিকিৎসক তরুণীর বাবা-মা। রায়ের পাল্টা আপিলের পথও খোলা রয়েছে বলে জানালেন পরিবারের পক্ষের আইনজীবী। তবে আদালতের রায়ে (verdict) প্রমাণিত হল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে চিকিৎসকরা সেই সময়ে ক্ষতিপূরণ নিয়ে যে কুৎসা করেছিলেন তা কতটা মিথ্যা, দাবি রাজ্যের শাসকদলের।

আর জি কর মামলায় (R G Kar case) বারবার সঞ্জয় রাইয়ের মতো অপরাধীর ফাঁসির সাজা চেয়েছিলেন মৃতার বাবা-মা। শনিবার দোষী সাব্যস্ত (convicted) করার দিন থেকে সোমবার রায় ঘোষণা শোনার জন্য শিয়ালদহ আদালতে পৌঁছে ফাঁসির শাস্তিই (capital punishment) দাবি করে এসেছিলেন তাঁরা। তবে আদালতের রায়ে যে তাঁরা অনেকাংশে হতাশ, তা স্পষ্ট এজলাসে তাঁদের প্রতিক্রিয়ায়।

সরকারি পরিকাঠামোর ভিতরে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় নিরাপত্তা দিতে রাজ্য সরকারকে গাফিলতিকে দায়ী করেছেন বিচারক অনির্বাণ দাস। সাজা ঘোষণার সময় সরকারি হাসপাতালের ভিতর ধর্ষণে (rape) ১০ লক্ষ টাকা ও ধর্ষণ করে খুনে (rape and murder) ৭ লক্ষ টাকা, মোট ১৭ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ (fine) রাজ্য সরকারকে দিতে হবে বলে নির্দেশ দেন বিচারক। মৃতার পরিবার সেই ক্ষতিপূরণ পাবে।

এই রায় শুনেই ক্ষতিপূরণ (fine) চাই না বলে ওঠেন মৃতার বাবা ও মা। বরঞ্চ তাঁরা বিচার চান বলে দাবি জানান। তখন বিচারকের (Judge) বক্তব্য তিনি টাকা দিয়ে মৃত্যুর বিকল্প দেওয়ার কারণে ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দেননি। মৃত্যুর ক্ষতিপূরণ হয় না বলেও তিনি জানান। তবে নিরাপত্তা দিতে সরকার দায়িত্ব যেভাবে পালন করেছে তার জন্য সরকারের উপর ক্ষতিপূরণের বোঝা চাপানো হয়েছে।

তবে মৃতার বাবা-মায়ের দেহভঙ্গিমায় (body language) স্পষ্ট হয়ে যায়, শনিবার সঞ্জয়কে দোষী সাব্যস্ত করার পরে তাঁরা যেভাবে বিচারে সন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন, এদিন তেমনটা ছিলেন না। শনিবার তাঁরা বিচারককে ধন্যবাদ (thanked) জানিয়েছিলেন। তবে এদিন তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন ফাঁসির সাজা না হওয়ায়। তবে এই রায়কে চ্যালেঞ্জ করে তাঁদের উচ্চ আদালতে আবেদনের বার্তাও দেন তাঁদের আইনজীবী রাজদীপ হালদার। তিনি জানান, যে সাক্ষ্যপ্রমাণ (evidence) পেশ হয়েছে তাতে বিচারকের মনে হয়নি ফাঁসির সাজা দেওয়া যায়। মৃতার পরিবার আংশিক সন্তুষ্ট (partially happy), স্পষ্ট জানান তিনি। সেই সঙ্গে এই রায়ের পরে উচ্চ আদালতে যাওয়ার রাস্তাও তাঁদের সামনে খোলা রয়েছে বলে জানান তিনি।

আর জি করের ঘটনার পরেই রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে আইন মেনে পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তারপরেও সেই সময়ে চিকিৎসকদের কুৎসার জবাব দেন এদিন তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। তিনি বলেন, এই ধরনের ক্ষেত্রে পরিবারকে কী ক্ষতিপূরণ (fine) বা কতটা ক্ষতিপূরণ দেওয়া যেতে পারে তার নির্দিষ্ট গাইডলাইন (guideline) রয়েছে। আর্থিক পরিমাণ নিয়ে রাজনীতি ও চরম কুৎসা করেছিলেন চিকিৎসকরা। আজ আদালত জানালো ক্ষতিপূরণের আইন রয়েছে। আজ প্রমাণ হল তারা মিথ্যাচার করেছিল। আদালত আজ যা বলেছে তার উপরে কিছু বলা যায় না।

spot_img

Related articles

বাংলায় আটকে যাবে অশ্বমেধের ঘোড়া! বিজেপিকে তোপ ঋতব্রতর

টেলিভিসনের টক শো-তে ভোটের ফল বেরোয় না। মানুষের পাশে থাকতে হয়। কারণ আসল হল জনতা। আর এই জনতার...

বিরোধীদের অভিযোগের জবাব দিতে হিমশিম, নিজের দোষও মানলেন ভলিবল সচিব

ইডেনে যখন ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা টেস্টের প্রস্তুতি তুঙ্গে তখন ময়দানের ভলিবল মাঠে উত্তেজনার গনগনে আঁচ। শাসক বনাম বিরোধী তরজায়...

SIR আতঙ্কে মৃত্যু রাষ্ট্রীয় হত্যা! শ্যামলকুমার সাহার মৃত্যুতে শাহকেই দায়ী করলেন দেবাংশু

নদিয়ার তাহেরপুরের কালীনারায়ণপুর মণ্ডলপাড়ায় ক’দিন আগেই এসআইআর-আতঙ্কে মৃত্যু হয় সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলকুমার সাহার। বৃহস্পতিবার মৃত শ্যামল সাহার বাড়িতে যান...

SIR-এর নামে ষড়যন্ত্রের বিরোধিতায় কোচবিহারে পদযাত্রা অভিষেকের

যে কোচবিহার থেকে নবজোয়ার যাত্রা শুরু করেছিলেন, SIR-এর নামে ষড়যন্ত্রের বিরোধিতায় সেই কোচবিহারে যাচ্ছেন তৃণমূলের (TMC) সর্বভারতীয় সাধারণ...