দুর্ঘটনায় ব্যবস্থা কোথায়: রেলমন্ত্রীর ‘বিভ্রান্তিকর’ ঘোষণায় সদুত্তর দাবি তৃণমূলের

বাংলার জন্য কী কী প্রকল্প, কটি ট্রেন দেওয়া হল, কটি নতুন রুট দেওয়া হল, কত কিলোমিটার নতুন লাইন (new track) দেওয়া হল, সুরক্ষার জন্য কি ব্যবস্থা

0
3

কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হয়ে গেলেও সেখানে রেলে বরাদ্দের কোন ঘোষণাই নেই। রেল দফতরের বঞ্চনা নিয়ে বাজেটের পর সরব হয় তৃণমূল। তারই জবাব দিতে কাগজে-কলমে কিছু টাকার ঘোষণা করে দায় সারেন রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব (Ashwini Vaishnaw)। আদতে বাংলায় কোনও প্রকল্প আসবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করে রেলমন্ত্রীর ঘোষণাকে তুলোধোনা তৃণমূলের। শুধুমাত্র বাংলা নয়, গোটা দেশে কোনও রেল প্রকল্প ঘোষণা না হওয়ায় রেলমন্ত্রীর ঘোষণাকে বিভ্রান্তিকর দাবি বাংলার শাসকদলের।

প্রতিবার বাজেটে রেল নিয়ে ঘোষণা করে থাকেন অর্থমন্ত্রী। বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে নতুন ট্রেনের ঘোষণা করা হয়। ২০২৫ কেন্দ্রীয় বাজেটে (Union Budget 2025) তার কোনটাই দেখা যায়নি। এমনকি দেশের মানুষের জন্য কোন নতুন ট্রেনেরও ঘোষণা করা হয়নি। ২০২৪ এর থেকে নতুন আর্থিক বর্ষে বরাদ্দও বাড়েনি রেলে। এ নিয়ে প্রশ্ন তোলে তৃণমূল। এরপরই আচমকা সাংবাদিক বৈঠকে বসেন রেলমন্ত্রী। সেখানে তিনি দাবি করেন চলতি অর্থবর্ষের ১৩,৯৫৫ কোটি বরাদ্দ হয়েছে বাংলার রেল প্রকল্পে। শুধুমাত্র বাংলার নাম উল্লেখ করে ৬৮,০০০ কোটি বিনিয়োগেরও দাবি করেন অশ্বিনী বৈষ্ণব। ১০১ টি রেল স্টেশন পুর্ননির্মাণেরও দাবী জানান তিনি।

অথচ কোথাও উল্লেখ করা হয়নি কোন কোন প্রকল্প বাংলার জন্য বরাদ্দ করছে কেন্দ্রের সরকার। স্বাভাবিকভাবেই রেলমন্ত্রীর ঘোষণার পর তৃণমূল রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষের দাবি, কেন্দ্র সরকার এখনও কোন ঘোষিত তালিকা দিতে পারেননি বাংলাকে কোন প্রকল্পে কোন খাতে কত দেওয়া হয়েছে তা জানাতে পারেননি রেল দফতর। কোনও ঘোষিত তালিকা দিতে পারেনি কেন্দ্রীয় সরকার।

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) রেলমন্ত্রী থাকাকালীন যেভাবে বাংলার উত্তর প্রান্ত থেকে দীঘা পর্যন্ত রেল যোগাযোগ তৈরি হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গ তুলে ধরে কুণালের দাবি, বাংলার জন্য কী কী প্রকল্প, কটি ট্রেন দেওয়া হল, কটি নতুন রুট দেওয়া হল, কত কিলোমিটার নতুন লাইন (new track) দেওয়া হল, সুরক্ষার জন্য কি ব্যবস্থা করা হলো তা নিয়ে কিছুই জানানো হয়নি। তা না করে হাওয়ায় কথা বলে যাচ্ছে রেলমন্ত্রী।

সেই সঙ্গে ভুরি ভুরি কাগজ-কলমে থাকা প্রকল্প আদতে বাংলার কোনও কাজে আসবে কিনা সন্দেহ প্রকাশ করেন কুণাল। তাঁর দাবি, প্রথমত, তখনকার থেকে টাকা দামের এখন যা হাল বিজেপি করেছে, বরাদ্দ করার সময় সেই ভাবে বিবেচনা করা উচিত। দ্বিতীয়তঃ কাগজে কলমে তাঁরা দেখাচ্ছেন কিন্তু প্রয়োগগতভাবে (effectively) সেই টাকাগুলো তাঁরা দেন না। অথবা আর্থিক বছরের শেষ সময়ে এমনভাবে টাকা রিলিজ (release) করা হয় যাতে সেই প্রকল্পে কোন কাজ হওয়া সম্ভব হয় না।

আচমকাই বাংলার শাসকদলের প্রতিরোধের মুখে পড়ে বাংলার নামে ভুরিভুরি ঘোষণায় আদতে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে রেল দফতর। সেখানেই কুণালের প্রশ্ন, বাংলা কেন, গোটা ভারতের জন্য কোনও প্রকল্পের ঘোষণা হয়নি বাজেটে। সেইসঙ্গে যাত্রী সুরক্ষা, দুর্ঘটনা এড়ানো – সেগুলি নিয়ে ব্যবস্থা কোথায়? রেলওয়ে ট্র্যাক মেইন্টেনেন্স (track maintenance), ট্রেনগুলোই সময় চলা, ট্রেনের ভিতরে যাত্রী পরিষেবা – এগুলো নিয়ে কোন সদুত্তর রেলওয়ে বাজেটে নেই।