ভারতে ভোটার টানতে সাহায্য কেন! ২১ মিলিয়ন ডলার কে পেল, বিজেপি না কংগ্রেস

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০০২ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত স্মৃতিকে (Smriti Irani) এইএসএইড-এর (USAID) দূত হিসাবে নিয়োগ করেছিল

ভারতের ভোটারদের উৎসাহ দিতে মার্কিন সাহায্য। তাও আবার ২১ মিলিয়ন ডলার। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে চরম বিস্ময় প্রকাশ মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump)। ভারতকে তাই কোনওভাবেই ২১ মিলিয়ন ডলার আর্থিক সাহায্য আমেরিকা করবে না, স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন ট্রাম্প। দুদিন আগে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) সঙ্গে সাক্ষাৎ হলেও তাঁর দেশের জন্য আর্থিক সাহায্য়ে নেই আমেরিকা, স্পষ্ট করে দিলেন ট্রাম্প। এরপরেই প্রশ্ন উঠেছে এই সাহায্যের ডলার কাদের হাতে এসেছে, বিজেপি না কংগ্রেস। দুদলই পরস্পরের সপক্ষে একাধিক প্রমাণ তুলে ধরে দায় ঝাড়ার চেষ্টায় ব্যস্ত।

প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জো বাইডেনের (Joe Biden) আমলে ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং-এর (Manmohan Singh) সঙ্গে ইউএসএইড (USAID) প্রকল্পে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সেই উদাহরণ তুলে ধরে বিজেপির দাবি, ভোটার টানতে (voter turnout) কীভাবে কংগ্রেস মার্কিন সাহায্য নিয়েছিল, এই ২১ মিলিয়ন ডলার তার প্রমাণ। এমনকি কংগ্রেসের আমলে এই ২১ মিলিয়ন মার্কিন সাহায্যই দেশের সব থেকে বড় আর্থিক দুর্নীতি।

সম্প্রতি এলন মাস্কের সংস্থা ডোজ-এর (DOGE) তরফ থেকে একাধিক দেশের মার্কির অর্থ সাহায্য (USAID) বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তালিকায় নেপাল, বাংলাদেশ যেমন রয়েছে। তেমনই রয়েছে মোজাম্বিক, কম্বোডিয়া, সার্বিয়া, লাইবেরিয়া, মালি ও মিশর। প্রতিটি দেশকে কোন খাতে সাহায্য় করা হত, তার উল্লেখ করে সাহায্য বন্ধের ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে ভারতকে ভোটারদের উৎসাহ দিতে অর্থ সাহায্য বন্ধের ঘোষণাও ছিল। সেই বরাদ্দ বন্ধ নিয়ে বলতে গিয়ে ডোনাল্ড ট্রাম্প দাবি করেন, আমরা কেন ভারতকে ২১ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছি? ওদের অনেক বেশি টাকা আছে। আমাদের পক্ষে বিশ্বের সবচেয়ে বেশি শুক্ল আদায়কারী দেশগুলির মধ্যে একটি ভারত; তাদের শুল্ক এত বেশি হওয়ায় আমরা সেখানে খুব কমই ঢুকতে পারি। সেই সঙ্গে তিনি যোগ করেন, ভারতের প্রতি আমার যথেষ্ট সম্মান, সেখানকার প্রধানমন্ত্রীর প্রতিও সম্মান রয়েছে। তিনি দুদিন আগে এসেছিলেন। কিন্তু ভারতের ভোটার টানতে ২১ মিলিয়ন ডলার সাহায্য? চরম বিস্ময় প্রকাশ করেন ট্রাম্প।

বিজেপি কংগ্রেসের দিকে আঙুল তোলার পরেই মনমোহন সিংয়ের আমলের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক এস ওয়াই কুরেশি (S Y Quraisi) দাবি করেছেন, তাঁর সময়ে কোনও আর্থিক সাহায্য জাতীয় নির্বাচন কমিশন (Election Commission of India) পায়নি। আমেরিকার সঙ্গে মউ স্বাক্ষরিত হলেও সরাসরি অর্থ সাহায্য পায়নি ভারত, দাবি কুরেশির।

পাল্টা কংগ্রেসের পক্ষ থেকে স্মৃতি ইরানির (Smriti Irani) দিকে আঙুল তোলা হয়েছে এই বিপুল আর্থিক দুর্নীতিতে জড়িয়ে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রীই। তার সপক্ষে দাবি করা হয়েছে, বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) ২০০২ থেকে ২০০৫ পর্যন্ত স্মৃতিকে (Smriti Irani) এইএসএইড-এর (USAID) দূত হিসাবে নিয়োগ করেছিল। সেই সময়ই তিনি নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে আমেরিকা থেকে অর্থসাহায্যের দৌত্য করেছিলেন। সেই সঙ্গে দাবি করা হয়, সেই সময়ে বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার প্রচারে স্মৃতির মুখ দিয়ে দিল্লিতে প্রচার চালানো হয়েছিল। যে প্রচার কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী শিলা দীক্ষিতের (Shila Dikshit) পরাজয়ে ভূমিকা নিয়েছিল বলে দাবি, কংগ্রেসের।

ডোনাল্ড ট্রাম্পের (Donald Trump) ভারতকে অর্থ সাহায্যে বিস্ময় প্রকাশের পরে যদিও অর্থ সাহায্যের ইঙ্গিত বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর দিকেই নির্দেশ করেছে। ট্রাম্প স্পষ্ট জানিয়েছেন, ভারতের প্রতি সম্মান ও প্রধানমন্ত্রীর প্রতি ভালোবাসা থাকলেও অর্থ সাহায্যে কোনও সায় তাঁর নেই। তাও সেই অর্থ সাহায্য ভারতের মাটিতে ভারতীয় ভোটার টানার প্রশ্নে চরম বিস্ময় প্রকাশ করেন তিনি। ফলে সাহায্য মোদি (Narendra Modi) সরকারের পকেটে আসতো, এমনই দাবি রাজনীতিকদের।