সরকারের পাস করা রায়ে সাধারণত সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ না করলেও ওয়াকফ সংশোধনী আইন-কে গুরুত্ব দিয়েই তার বিরোধিতায় দায়ের করা মামলার শুনানিতে সম্মত হয় প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। বুধবার কেন্দ্রের সংবিধান বিরোধী আইনের বিরোধিতায় দায়ের হওয়া একগুচ্ছ মামলার শুনানিতে প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্নার (CJI Sanjeev Khanna) ডিভিশন বেঞ্চ অন্তর্বর্তী রায়ে জানায়, ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে ঘোষিত সম্পত্তিগুলি নিয়ে বাতিলের কোনও নির্দেশ দিতে পারবে না কেন্দ্রের সরকার। সেই সঙ্গে ওয়াকফ আইনের (WAQF Amendment Act) বিরোধিতা নিয়ে যে অশান্তির ঘটনা ঘটছে না নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে শীর্ষ আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি বৃহস্পতিবার।

মূলত ওয়াকফ বিরোধী মামলায় কেন্দ্রের নতুন আইন নিয়ে পাঁচটি প্রশ্ন তোলে সুপ্রিম কোর্ট (Supreme Court)। যেখানে শতাব্দী প্রাচীন ওয়াকফ সম্পত্তিগুলির (WAQF property) রেজিস্ট্রেশন (registration) করার যে নির্দেশ জারি হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়। প্রায় ১০০ বছর ধরে ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে গণ্য হয়ে আসা সম্পত্তি রেজিস্ট্রেশন করা একটা বড় ইস্যু তৈরি করতে পারে। সেখানেই শীর্ষ আদালতের পর্যবেক্ষণ, শতাব্দী প্রাচীন ওয়াকফ সম্পত্তিগুলি কীভাবে রেজিস্ট্রেশন করা সম্ভব? এই ক্ষেত্রে জামা মসজিদের উল্লেখ করেন প্রধান বিচারপতি।

কেন্দ্রের সংবিধান বিরোধী ওয়াকফ আইন (WAQF Amendment Act) নিয়ে এদিন শীর্ষ আদালত প্রশ্ন তোলে, সরকারি আধিকারিক স্বীকৃতি না দেওয়া পর্যন্ত কীভাবে ওয়াকফ সম্পত্তি স্বীকৃত হবে না? আদালতের পর্যবেক্ষণ, সেক্ষেত্রে সরকারি জমি ওয়াকফের সম্পত্তির (WAQF property) অন্তর্গত হয়ে গিয়েছে কি না তা বিচার না হওয়া পর্যন্ত সেই সম্পত্তি ওয়াকফ সম্পত্তি হিসাবে চিহ্নিত না হওয়া অত্যন্ত খারাপ বিষয় হবে।
বুধবারের সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণে নতুন আইনের ২-এ ধারা আদালতের রায়কেও লঙ্ঘন করে। কেন্দ্রের ও রাজ্যগুলির ওয়াকফ বোর্ডগুলির সংখ্যা গরিষ্ঠ সদস্য মুসলিম হওয়া প্রয়োজন বলে পর্যবেক্ষণে জানায় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি সঞ্জয় কুমার ও বিচারপতি কে ভি বিশ্বনাথনের ডিভিশন বেঞ্চ। এক্ষেত্রে প্রধান বিচারপতি মন্দিরের কমিটিগুলি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। তাঁর পর্যবেক্ষণ, মন্দিরের পরিচালন সমিতি কখনই হিন্দু সদস্যের সংখ্যা গরিষ্ঠতা ছাড়া হয় না।

এই মামলার শুনানিতে সাম্প্রতিক হিংসার ঘটনা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। আদালতের সামনে যখন বিষয়টি বিচারাধীন, সেই পরিস্থিতিতে এই ধরনের হিংসার ঘটনা কাম্য নয়, পর্যবেক্ষণ শীর্ষ আদালতের।
–

–

–

–

–


–
