শুয়ে পড়তেই গুলি! কোথায় নিরাপত্তা, বেহালার মৃত সমীরের বাড়ি থেকে প্রশ্ন ফিরহাদের

অনেকে মাটিতে শুয়ে পড়ে। তখনই মুখ ঢেকে কয়েকজন দুষ্কৃতী (terrorist) সামনে এসে পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু গুলির (firing) শব্দ

কেন্দ্রের সরকার কয়েক বছর ধরে প্রচার চালিয়েছে কাশ্মীর শান্ত হয়ে গিয়েছে। নিশ্চিন্তে সেখানে ঘুরতে যেতে পারেন। না রয়েছে কোনও আতঙ্কবাদী, না রয়েছে আতঙ্ক – ঠিক এভাবেই লোকসভা নির্বাচনের আগেও প্রচার চালিয়েছেন নরেন্দ্র মোদি ও তাঁর অনুগামীরা। আদতে প্রতি সপ্তাহে সীমান্ত দিয়ে জঙ্গি অনুপ্রবেশের ঘটনা ও ভারতীয় সেনার (Indian Army) উপর হামলার ঘটনা প্রমাণ করে কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) বাস্তব পরিস্থিতি। সেই সব ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে উন্নয়নের প্রচার চালানো হয়। যাতে আশার আলো দেখে হাজারে হাজারে মানুষ বিশেষত গরমে কাশ্মীরকেই ডেস্টিনেশন বানিয়ে নিয়েছিলেন। আর তারই সুযোগ নিয়ে পর্যটকদের নির্বিচারে হত্যা করে জঙ্গিরা (terrorists)। মৃত্যু হয়েছে বেহালার বাসিন্দা সমীর গুহর। পরিবারের পাশে দাঁড়ানোর বার্তা দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Mamata Banerjee)। পরিবারের সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রের নিরাপত্তা নিয়ে সেই প্রশ্নই তুললেন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম।

বেহালার (Behala) শখের বাজারের বাসিন্দা সমীর গুহ মেয়ের দ্বাদশ শ্রেণির বোর্ডের পরীক্ষা হতেই কাশ্মীর ঘুরতে যাওয়ার পরিকল্পনা করেছিলেন। ১৬ তারিখ স্ত্রী, মেয়েকে নিয়ে কাশ্মীরে যান সমীর। মঙ্গলবারের হামলার ঘটনার পরে শখের বাজারের বাড়িতে আশঙ্কায় কাটছিল আত্মীয়দের। এরই মধ্যে মধ্যরাতে ফোন আসে মৃত্যু সংবাদ জানিয়ে। সমীরের স্ত্রী শবরী গুহ যেভাবে স্বামীকে চোখের সামনে ঝাঁঝরা (firing) হতে দেখেছেন তাতে তিনি কথা বলার পরিস্থিতিতে ছিলেন না। মেয়ে শুভাঙ্গি জানায় ঘটনার সময় কী হয়েছিল।

তার থেকেই পরিবারের সদস্যরা জানতে পারেন, প্রথমেই গুলির শব্দে চমকে ওঠেন তাঁরা। স্থানীয় কিছু লোক তাদের শুয়ে পড়তে বলে। অনেকে মাটিতে শুয়ে পড়ে। তখনই মুখ ঢেকে কয়েকজন দুষ্কৃতী (terrorist) সামনে এসে পড়ে। কিছু বুঝে ওঠার আগেই মুহুর্মুহু গুলির (firing) শব্দ। বাবাকে গুলিতে লুটিয়ে পড়তে দেখে কিছুক্ষণের জন্য হতবম্ব হয়ে পড়ে শুভাঙ্গি। পরিবারের লোকেরা শবরী গুহর সঙ্গে কথা বলতেই পারেননি ভালো করে। তিনি চোখের সামনে স্বামীসহ কয়েকজনকে মারা যেতে দেখে সেই সময় থেকেই কথা বলার ক্ষমতা হারিয়েছেন। আপাতত বিশেষ বিমানে সমীর গুহর দেহ নিয়ে কলকাতায় ফেরার অপেক্ষায় হতভাগ্য মা ও মেয়ে।

বুধবার সকালে পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে যান ফিরহাদ হাকিম। সেখানেই তিনি প্রশ্ন তোলেন, সবাই ভেবেছিলাম কেন্দ্রীয় সরকারের নিরাপত্তা থাকবে। এত কেন্দ্রীয় বাহিনী রয়েছে। ৩৭০ ধারা বিলুপ্ত হয়েছে, বদলে গিয়েছে। আমরা সেই ভরসাতেই গিয়েছিলাম। এবার সরকারের কথায় ভরসা যদি না করতে পারি কার উপর ভরসা করব? সেই সঙ্গে সাধারণ মানুষের পক্ষ থেকে কেন্দ্রের অপদার্থতা নিয়ে দাবি করেন, আমার সাধারণ মানুষ আমরা স্টেনগান, একে৪৭ নিয়ে বেড়াতে যাব না। আমরা তো স্ত্রী-সন্তানদের নিয়েই বেড়াতে যাব। ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি।