Friday, November 14, 2025

স্বামীর খুনে দোষী সাব্যস্ত, তবু রসায়নের জ্ঞান নিয়ে আদালতে চ্যালেঞ্জ মমতার

Date:

Share post:

নিম্ন আদালতে স্বামীর খুনের দায়ে ২০ বছরের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত তিনি। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করতে মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্টের (Madhyapradesh High Court) দ্বারস্থ ছতরপুরের মমতা পাঠক। আর সেখানেই প্রাক্তন রসায়নের (chemistry) অধ্যাপিকার রসায়ন-জ্ঞান দেখে বিচারপতি বলতে বাধ্য হন, প্রথাগত মামলার বাইরে বেরিয়ে তাঁরা এই মামলা শোনার চেষ্টা করবেন।

২০২১ সালের ২৯ এপ্রিল মধ্যপ্রদেশের ছতরপুরে (Chhartarpur) নীরজ পাঠককে (৬৩) নিজের বাড়িতেই মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। নীরজ মমতার স্বামী ছিলেন। মমতা ও নীরজ আলাদা থাকলেও কিছুদিন আগে তারা আবার একত্রে বসবাস শুরু করেন। তবে প্রসিকিউশনের দাবি, দাম্পত্য সম্পর্কে এখনও অবিশ্বাস এবং বিবাদ লেগেই ছিল। মৃত্যুর দিন নীরজ তার এক আত্মীয়কে ফোন করে জানান, মমতা তাঁকে কয়েকদিন ধরে বাথরুমে আটকে রেখেছেন, খেতে দেননি, শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। আত্মীয়ের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশ হস্তক্ষেপ করে। সেদিন সন্ধ্যাতেই নীরজ মৃত অবস্থায় উদ্ধার হন। তদন্তকারীরা জানান, তার শরীরে একাধিক বৈদ্যুতিক পোড়ার (electrocuted) চিহ্ন ছিল।

যদিও মমতা দাবি করেন, তিনি খাবার দিতে গিয়ে তাঁর মৃতদেহ দেখতে পান। তিনি আরও জানান, পরদিন সকালে তিনি ডায়ালিসিসের জন্য ঝাঁসি যান এবং হাসপাতাল কোভিড রিপোর্ট না থাকায় ভর্তি নেয়নি, তাই তিনি সেদিন পুলিশের কাছে খবর দিতে পারেননি। এদিকে, পুলিশ তাঁর ঘর থেকে ঘুমের ওষুধ উদ্ধার করে। আত্মীয়ের সাক্ষ্য ও ফোন রেকর্ডিংয়ের ভিত্তিতে নিম্ন আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজা দেয়।

পাল্টা হাইকোর্টে নিজের হয়ে মমতার সওয়াল, পোড়ার ময়নাতদন্তের সময় তাতে হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড (HCL) প্রয়োগের সময় প্রমাণিত হবে বৈদ্যুতিক শকে (electrocuted) তাঁর মৃত্যু হয়েছিল কিনা। একেবারে বিস্তারিত ব্যাখ্যা তুলে ধরেন তিনি। সেই ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হয় (ভাইরাল ভিডিওর সত্যতা বিশ্ববাংলা সংবাদ যাচাই করেনি)। পাল্টা এই সব প্রশ্ন নিম্ন আদালতে তাঁর আইনজীবী কেন তুলে ধরেননি, আদালত এই প্রশ্ন করতেই মমতার ব্যাখ্যা সেই সময় তিনি জেলে বন্দি ছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই তিনি যে নিজের জ্ঞান আইনজীবীকে দিতে পারেননি, তা স্পষ্ট করে দেন।

ময়নাতদন্তের রিপোর্টের পাশাপাশি সামগ্রিক তদন্ত নিয়েও একাধিক প্রশ্ন নিজের সপক্ষে হাইকোর্টে তিনি নিজেই তুলে ধরেন। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিল, মৃত্যুর ৩৬ ঘণ্টা পরেও পচনের গন্ধের উল্লেখ কেন নেই পুলিশের রিপোর্টে, সেই প্রশ্ন। বৈদ্যুতিক শকে মৃত্যুর পরেও কেন বাড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ পরীক্ষা হয়নি, সেই প্রশ্নও করেন তিনি।

নিজের সপক্ষে মমতার সওয়াল শুনে বিচারপতি বিবেক আগরওয়াল ও বিচারপতি দেবনারায়ণ মিশ্রর ডিভিশন বেঞ্চ পর্যবেক্ষণে জানান, প্রথার বাইরে গিয়ে তাঁরা এই মামলা শুনবেন। সেই সঙ্গে অভিযুক্ত মমতা পাঠকের বক্তব্য গুরুত্ব দিয়েই শোনা হবে।

spot_img

Related articles

পাশে প্রথম স্ত্রী! সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মেন্দ্রর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে, গ্রেফতার হাসপাতাল কর্মী

গত এক সপ্তাহ অভিনেতা ধর্মেন্দ্র-র জন্য উদ্বেগে গোটা দেশ। সোমবার ১১ নভেম্বর হঠাৎ তাঁর অসুস্থ হওয়ার খবরে তোলপাড়...

ওটা বিহারের সমীকরণ, বাংলায় জিতবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়ন: বিজেপিকে উড়িয়ে জবাব তৃণমূলের

বিহার বিধানসভা নির্বাচনের (Bihar Assembly Election) এখনও পর্যন্ত ফলে ম্যাজিক ফিগার ছাড়িয়ে এগিয়ে গিয়েছে NDA। আর এই ফল...

দক্ষিণবঙ্গে শীতের আমেজ চলবে, উষ্ণতা বাড়তে পারে উত্তরে!

পারদ পতনের ট্রেন্ড বজায় রেখে দক্ষিণবঙ্গে (Winter in South Bengal)শীতের আমেজ। শুক্রবার সকালে হিমেল ছোঁয়ায় টুপি সোয়েটার সঙ্গী...

ইডেনে খেলতে এসে ছুটির আবদার! গম্ভীরকে আবেদন কুলদীপের

অবসান ঘটিয়ে ইডেনে প্রথম একাদশে জায়গা করে নিয়েছেন কুলদীপ যাদব , প্রথম সেশনে একটি উইকেটও তুলে নিয়েছেন। কিন্তু...