Saturday, August 23, 2025

১০০ দিনের কাজের দুর্নীতিতে কড়া হাই কোর্ট, তদন্তে মালদার পুলিশ সুপারকে নির্দেশ 

Date:

Share post:

মালদার সিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের টাকা নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে এবার কড়া পদক্ষেপ নিল কলকাতা হাই কোর্ট। দুর্নীতির বিষয়টি আগেই স্বীকার করেছিলেন সংশ্লিষ্ট গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধান। এবার সেই মামলায় পুলিশ সুপারকে দ্রুত তদন্তের নির্দেশ দিল বিচারপতি সৌমেন সেন ও বিচারপতি স্মিতা দাস-এর ডিভিশন বেঞ্চ। আদালতের স্পষ্ট নির্দেশ— ৮ সপ্তাহের মধ্যে তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে হবে এবং সম্ভব হলে অর্থ পুনরুদ্ধারের ব্যবস্থাও নিতে হবে।

হাই কোর্টে জনস্বার্থ মামলা দায়ের হয় সিরপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে দীর্ঘদিন ধরে চলা আর্থিক অনিয়ম নিয়ে। অভিযোগ, ২০১৭ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত সময়ে ১০ থেকে ১৫ কোটি টাকার দুর্নীতি হয়েছে ১০০ দিনের কাজের বিভিন্ন প্রকল্পে। সরকারি নিয়ম অনুযায়ী এক লক্ষ টাকার বেশি প্রকল্প হলে সেখানে টেন্ডার ডাকতে হয়। কিন্তু এই নিয়ম এড়াতে পরিকল্পিতভাবে প্রকল্পের আর্থিক পরিমাণ কমিয়ে দেখানো হয়েছে।

অভিযোগ, মাশরুম চাষ, ড্রাগন ফ্রুট চাষ-সহ একাধিক প্রকল্পে টেন্ডার ছাড়াই ভুয়োভাবে বরাদ্দ হয়েছে লক্ষ লক্ষ টাকা। প্রকল্পগুলিকে কৃত্রিমভাবে খণ্ডিত করে কয়েকজনের নামে সরাসরি অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। হাই কোর্টে দাখিল হওয়া নথিতে উল্লেখ, একাধিক ভুয়ো ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সেই অর্থ স্থানান্তর করা হয়েছে, যা পঞ্চায়েত প্রধান নিজেই স্বীকার করেছেন।

এই মামলার শুনানির সময় আদালত জানায়, দুর্নীতির পরিমাণ বিপুল এবং তা জনসাধারণের অর্থের অপব্যবহারের একটি জ্বলন্ত দৃষ্টান্ত। আদালত পুলিশকে জানিয়েছে, অর্থ উদ্ধারে পঞ্চায়েত প্রধান সহযোগিতা করছেন, তবে তদন্ত দ্রুত সম্পন্ন করে দায়ীদের শনাক্ত করতেই হবে।

উল্লেখ্য, রাজ্যে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে গত তিন বছর ধরে কেন্দ্র সরকার প্রকল্পের অর্থ বন্ধ রেখেছে। এই প্রেক্ষাপটেই কলকাতা হাই কোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ সম্প্রতি নির্দেশ দেয়, ১ আগস্ট থেকে প্রকল্প চালু করতে হবে কেন্দ্রকে। তবে সঙ্গে থাকবে কিছু শর্ত ও বিধিনিষেধ, যাতে ভবিষ্যতে এমন দুর্নীতি না ঘটে।

প্রসঙ্গত, এর আগেও মালদার বিভিন্ন গ্রাম পঞ্চায়েতে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছিল। ২০১৭ সালের বন্যা পরিস্থিতির পর বাড়ি নির্মাণের অর্থ নিয়েও অনিয়ম এবং স্বজনপোষণের অভিযোগে উত্তাল হয়েছিল জেলা প্রশাসন। তখনও হাই কোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্তদের সাহায্য নিশ্চিত করার। এবার ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পেও একই অভিযোগে জড়াল সেই মালদাই। জনস্বার্থে দায়ের হওয়া মামলাটি রাজ্যের পঞ্চায়েত ব্যবস্থা এবং প্রকল্প বাস্তবায়নের পদ্ধতিকে বড় প্রশ্নের মুখে দাঁড় করাল বলে মনে করছেন প্রশাসনিক মহল।

আরও পড়ুন – সংখ্যালঘুদের উপর অত্যাচারে শীর্ষে বিজেপি-শাসিত ৫ রাজ্য! বলছে কেন্দ্রীয় রিপোর্ট 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

 

_

spot_img

Related articles

সঠিক পরিকল্পনাই ডায়মন্ডহারবারের সাফল্যের চাবিকাঠি, মনে করছেন আকাশ বন্দ্যোপাধ্যায়

মাত্র তিন বছরের ক্লাব। কিন্তু কী অসাধারণ সাফল্য। কলকাতা লিগ, আইলিগ থ্রি থেকে আইলিগ টু জিতে এবার আইলিগের...

অসংগঠিত শ্রমিক-ক্ষেত্রে পথ দেখাচ্ছে বাংলা: সাহায্য পেলেন ৭২০ শ্রমিক

একের পর এক নতুন প্রকল্প, অসংগঠিত শ্রমিকদের দাবিদাওয়া নিয়ে লাগাতার আলোচনা, তাঁদের পরিবারের প্রতি নজর রাখার ব্যাপারে তৎপর...

প্রাপ্য চায় বাংলা, উপহার না: মোদিকে জবাব তৃণমূলের

বাংলার মানুষ উপহার চায় না, প্রাপ্য চায়। উপহার দিয়ে বাংলার মানুষকে অপমান করবেন না। বাংলায় বরাদ্দ নিয়ে শুক্রবার...

অনুপ্রবেশ ঠেকাতে ব্যর্থ শাহ, শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা মোদির: কটাক্ষ তৃণমূলের

অনুপ্রবেশ ইস্যুকে বার বার জাগিয়ে তুলে কেন্দ্রের বিজেপি সরকার আদতে নিজেদের ভুল নিজেরাই চোখ আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয়।...