সামুদ্রিক পণ্য রফতানিতে ২০২৪-২৫ অর্থবর্ষে নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে পশ্চিমবঙ্গ। মেরিন প্রোডাক্টস ডেভেলপমেন্ট অথরিটির (MPEDA) তথ্য অনুযায়ী, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্য থেকে প্রায় ১ লক্ষ ১৪ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক পণ্য রফতানি হয়েছে, যার আর্থিক মূল্য ৪,৩৩৩ কোটি টাকারও বেশি। আগের বছরের তুলনায় রাজ্যের এই খাতে আয় বেড়েছে ৪ শতাংশেরও বেশি।

২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে পশ্চিমবঙ্গ রফতানি করেছিল প্রায় ১ লক্ষ ৩২ হাজার মেট্রিক টন সামুদ্রিক পণ্য, যার থেকে আয় হয়েছিল ৪,১৪৭ কোটি টাকা। যদিও টন সংখ্যায় কিছুটা কমেছে, তবুও আর্থিক দিক থেকে এই বছর রাজ্য নতুন রেকর্ড গড়েছে। মূলত চিংড়ি রফতানিই রাজ্যের সামুদ্রিক রফতানির মেরুদণ্ড। পাশাপাশি অন্যান্য চিংড়ি প্রজাতি, পমফ্রেট, অক্টোপাস ও বিভিন্ন সামুদ্রিক মাছও রফতানির তালিকায় রয়েছে।

রফতানির গন্তব্য হিসেবে জাপান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চিন, মধ্যপ্রাচ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে দেশের মোট সামুদ্রিক রফতানির প্রায় ১২ শতাংশই আসে পশ্চিমবঙ্গ থেকে, যার মধ্যে ৭০ শতাংশ চিংড়ি জাত পণ্য। এগুলির প্রায় ৮০–৮৫ শতাংশই রফতানি হয়, বাকি অংশ দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারে ব্যবহৃত হয়।

চিংড়ি উৎপাদনের মূল কেন্দ্র হিসেবে উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা এবং পূর্ব মেদিনীপুর জেলার নাম উঠে আসে। উল্লেখযোগ্যভাবে, দেশের মোট রফতানি চিংড়ির ৮০ শতাংশ আসে জলচাষ বা অ্যাকুয়াকালচারের মাধ্যমে, এবং বাকি ২০ শতাংশ আসে সরাসরি সমুদ্র থেকে ধরা মাছ থেকে। এমপিইডিএ-র এক আধিকারিকের মতে, বর্তমানে সমুদ্র থেকে ধরা বড় চিংড়ির রফতানির উপর আন্তর্জাতিক স্তরে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও, এই বিধিনিষেধ যদি শিথিল হয়, তবে দেশের সামুদ্রিক রফতানি আয় অন্তত ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। উপকূলবর্তী রাজ্যগুলি এই বিষয়ে আন্তর্জাতিক আলোচনার মাধ্যমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে, পশ্চিমবঙ্গের সামুদ্রিক শিল্প যে শুধু রফতানিতে নতুন দিগন্ত ছুঁয়েছে তাই নয়, ভবিষ্যতে আরও বড় অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দিকেও এগিয়ে যাচ্ছে তা বলাই যায়।


_

_

_

_

_

_
_
_
_
_