জয়ন্তী দেব (Jayanta Dev) হত্যা মামলায় শিয়ালদহ অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজ, ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্টের (High Court) দেওয়া ফাঁসির সাজাপ্রাপ্ত তিনজনকেই বেকসুর খালাস করে দিল বিচারপতি দেবাংশু বসাকের ডিভিশন বেঞ্চ। দীর্ঘ ১১ বছর পর কলকাতা হাইকোর্টের (High Court) বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বর রশিদীর ডিভিশন বেঞ্চের রায়ে বেকসুর খালাস পেলেন সুরজিৎ দেব, তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং সঞ্জয় বিশ্বাস।

রায়দানের পর, অভিযুক্ত সুরজিৎ দেবের আইনজীবী জয়ন্ত নারায়ণ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘আমার মক্কেল ১১ বছর ধরে অপরাধী হিসেবে সমাজের চোখে অপমান সহ্য করেছেন, জীবনের মূল্যবান সময় কেটে গেছে জেলে। আজ প্রশ্ন উঠছে, কে ফিরিয়ে দেবে তাঁর এই এগারোটি বছর?’

প্রসঙ্গত, শিয়ালদহ রেলওয়ে স্টেশনের পার্কিং লটে ২০১৪ সালের ২০ মে সন্ধ্যায় এক চাঞ্চল্যকর খুনের ঘটনা কাঁপিয়ে দিয়েছিল গোটা শহরকে। সেদিন দড়ি দিয়ে বাঁধা একটি লেপ, একটি বড় ট্রলি ব্যাগ ও একটি স্কুল ব্যাগ বেওয়ারিশ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখা যায়। কর্তব্যরত জিআরপিএফ কর্মীর তৎপরতায় পুলিশ এসে দেখে, ওই ব্যাগ ও লেপের ভিতরে রয়েছে টুকরো টুকরো করে কাটা এক মহিলার দেহ। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, মৃত মহিলার নাম জয়ন্তী দেব। তার স্বামী সুরজিৎ দেবের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরেই সম্পর্কের টানাপোড়েন চলছিল। তাঁরা আলাদা থাকতেন। পুলিশ তদন্ত করে সুরজিৎ দেব, তাঁর বান্ধবী লিপিকা পোদ্দার এবং সঞ্জয় বিশ্বাসকে গ্রেপ্তার করে। দ্রুত বিচার প্রক্রিয়ায় শিয়ালদহ অ্যাডিশনাল ডিস্ট্রিক্ট জজের ফার্স্ট ট্র্যাক কোর্ট ওই তিনজনকেই মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেয়।

এরপর, ২০১৯ সালের ২২ জুলাই হাইকোর্টে আপিল করেন অভিযুক্তরা। তারপর আজ, বৃহস্পতিবার দীর্ঘ ১১ বছর পর কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাক ও বিচারপতি শব্বর রশিদীর ডিভিশন বেঞ্চ তিন অভিযুক্তই বেকসুর খালাস করার নির্দেশ দেয়। ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশে বলা হয়েছে, তদন্তকারী অফিসাররা সুষ্ঠুভাবে তদন্তই করতে পারেননি। এমন একটি মামলায় এত গুরুতর তদন্তগত ফাঁক ফোকরের ভিত্তিতে কাউকে দোষী সাব্যস্ত করা যায় না।

–

–

–

–

–

–

–
–
–
–
–