ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সংশোধন অভিযানকে কেন্দ্র করে আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি হয়েছে রাজ্যজুড়ে, বিশেষত সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতে। বিহারে ‘এসআইআর’ (সিলেক্টিভ ইনটেনসিভ রিভিশন) এবং ‘বাংলাদেশি হটাও’ প্রচারের আবহে পশ্চিমবঙ্গের সীমান্তবর্তী অঞ্চলেও ছড়িয়ে পড়েছে উদ্বেগ। সেই প্রভাবেই রাজ্যের একাধিক জেলায় হঠাৎ করেই বেড়ে গিয়েছে ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন।

নির্বাচন কমিশনের তথ্য বলছে, গত এক সপ্তাহে শুধুমাত্র সীমান্তবর্তী জেলাগুলিতেই ফর্ম ৬ জমা পড়েছে ৭৫ হাজারেরও বেশি, যেখানে সাধারণ সময়ে এই সংখ্যা থাকে ২৫ হাজারের আশেপাশে। অর্থাৎ তিনগুণেরও বেশি আবেদন জমা পড়েছে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে।

সবচেয়ে বেশি আবেদন জমা পড়েছে কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার, মালদা, মুর্শিদাবাদ, উত্তর দিনাজপুর, নদিয়া এবং উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলাগুলিতে। নির্বাচন কমিশন এই প্রবণতার ওপর কড়া নজর রেখেছে।

কমিশনের এক পদস্থ আধিকারিক জানিয়েছেন, শুধু তরুণ প্রজন্ম নয়, বহু বয়স্ক নাগরিকও এবার ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদনে শামিল হয়েছেন। অনেকেই আশঙ্কা করছেন, শীঘ্রই রাজ্যেও বিহারের মতো এসআইআর চালু হতে পারে। কারণ, ২০০২ সালের ভোটার তালিকায় নাম না থাকলে বিএলওদের কাছ থেকে এনু মারেশন ফর্ম পাওয়া যাবে না। ফলে তারা একদিকে যেমন ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন, তেমনই নাগরিকত্ব নিয়েও সংশয় তৈরি হতে পারে।

সিইও দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, অগাস্টের প্রথম বা দ্বিতীয় সপ্তাহেই রাজ্যে শুরু হতে পারে এসআইআর প্রক্রিয়া। দুর্গাপুজোর ছুটি মাথায় রেখেই এই সময় নির্ধারণের কথা ভাবছে কমিশন। বিহারে যেখানে ১১টি নথি জমা দিতে বলা হয়েছে, সেখানে বাংলায় সেই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলেই ইঙ্গিত মিলেছে। নির্বাচন কমিশন এখন একদিকে যেমন বিপুল পরিমাণে জমা পড়া আবেদন খতিয়ে দেখছে, তেমনই এই প্রবণতার সামাজিক-রাজনৈতিক কারণ বিশ্লেষণের কাজেও নেমেছে প্রশাসন। সীমান্তবর্তী এলাকার সাধারণ মানুষ এই মুহূর্তে প্রবল উদ্বেগে রয়েছেন, কারণ এসআইআর প্রক্রিয়া নাগরিক অধিকার ও নিরাপত্তা নিয়ে এক নতুন প্রশ্ন তুলে দিয়েছে।

আরও পড়ুন – ‘মহানায়ক সম্মান’: মহানায়কের প্রয়াণ দিবসে মনমাতানো অনুষ্ঠান

_

_

_

_
_
_
_
_
_