বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণতম শিশুর (Baby born) জন্ম হল। ৩৯৬ মাসের পুরনো ভ্রুণ থেকে! কীভাবে? কোথায়? সমস্ত প্রশ্নেরই উত্তর রয়েছে এই প্রতিবেদনে। এই ঘটনা সারা বিশ্ব সারা ফেলে দিয়েছে। চিকিৎসা বিজ্ঞানের দুনিয়ায় তৈরি হয়েছে নয়া মাইলফলক। তিন দশকেরও বেশি সময় আগে হিমায়িত অবস্থায় থাকা ভ্রূণ থেকে জন্ম নেওয়ায় সদ্যজাতকে প্রবীণতম শিশু বলে উল্লেখ করেছেন চিকিৎসকেরা।

কীভাবে সম্ভব?
১৯৯২ সালে ভ্রূণটি সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সেই মতো ৩৩ বছর অর্থাৎ ৩৯৬ মাসের পুরনো ভ্রুণ থেকে গত ২৬ জুলাই একটি সুস্থ শিশুর জন্ম হয়েছে। নাম রাখা হয়েছে থাডিউস ড্যানিয়েল পিয়ার্স। যাকে কোলে পেয়েছেন লিনজি ও টিম পিয়ার্স দম্পতি। এই শিশুর (Baby born) জন্মের গল্প রূপকথার মতোই। এত দীর্ঘ সময় হিমায়িত অবস্থায় থাকা ভ্রূণ থেকে শিশু জন্মের ঘটনা বেনজির।

আরও পড়ুন-মূর্খ, ওটা বাংলা ভাষা: দিল্লি পুলিশের বিরুদ্ধে সরব সৃজিত

কোথায় ঘটল?
আমেরিকায় ওহিয়োর ঘটনা। আমেরিকায় যেমন সন্তান দত্তক নেওয়া যায়, তেমনই নেওয়া যায় ভ্রূণও। অনেক দম্পতি নিঃসন্তান। তাঁরা দত্তক নেওয়াকেই শেষ অবলম্বন হিসেবে বিবেচনা করে। সেই দত্তক নেওয়া সন্তান ধারণ করতে পারেন অনেক মহিলাই। চিকিৎসা প্রযুক্তির অগ্রগতি আজ এটি সম্ভব করেছে। আইভিএফ অর্থাৎ ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন চিকিৎসার মাধ্যমে সম্ভব হয়েছে।

কারা ভ্রূণ দাতা কারাই বা গ্রহীতা?
লিন্ডসে এবং টিম পিয়ার্স বেশ কয়েক বছর ধরে বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছিলেন। এরপর তাঁরা ভ্রূণ দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। তাঁরা যে ভ্রূণগুলি ধারণ করেছিলেন তা ১৯৯৪ সাল থেকে অর্থাৎ ঠিক ১১,১৪৮ দিন ধরে লিকুইড নাইট্রোজেনের মধ্যে সংরক্ষিত ছিল। ১৯৯২ সালে লিন্ডা আর্চার্ড এবং তাঁর স্বামীর ডিম্বাণু ও শুক্রাণু মিলিয়ে IVF পদ্ধতিতে মোট চারটি ভ্রূণ তৈরি করা হয়েছিল। তার মধ্য়ে একটি ব্যবহার করে ১৯৯৪ সালে অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন লিন্ডা। জন্ম নেয় তাঁদের কন্যাসন্তান। সেই মেয়ের বয়স এখন ৩০ বছর, যাঁর নিজের ১০ বছরের এক সন্তান রয়েছে। বাকি ভ্রূণ সংরক্ষণের সিদ্ধান্ত নেন লিন্ডা ও তাঁর প্রাক্তন স্বামী। বিবাহবিচ্ছেদের পর ওই ভ্রূণর উপর লিন্ডার একার অধিকার জন্মায়। সেই সময়ই ভ্রূণ দত্তক দেওয়া যায় বলে জানতে পারেন তিনি। নিঃসন্তান দম্পতিকে ওই ভ্রূণ দত্তক দিতে আগ্রহী ছিলেন লিন্ডা শেষ পর্যন্ত ২০২৩ সালে লিনজি এবং টিমের সঙ্গে যোগাযোগ হয় তাঁর। লিন্ডার সেই একটি ভ্রূণ থেকেই লিনজি এবং টিমের কোলে জন্ম নিয়েছে তাঁদের পুত্রসন্তান। লিনজি জানিয়েছেন, তিনি এবং সদ্যজাত, দু’জনই সুস্থ। ছেলের ছবি তাঁকে পাঠিয়েছেন লিনজি। তাঁর মেয়ের সঙ্গে মুখের মিল রয়েছে শিশুটির। যে IVF ক্লিনিক এই অসাধ্যসাধন করেছে, তার প্রধান জন গর্ডন জানিয়েছেন, সংরক্ষিত ভ্রূণগুলি যাতে পৃথিবীতে আসার সুযোগ পায়, সেই চেষ্টাই করছেন তাঁরা।

_

_

_
_

_

_
_
_
_
_