দরিয়া-এ-নূর কোথায়? আদৌ আছে, না শুধুই রয়েছে ধুলো – প্রশ্ন ঢাকার নবাব বংশধরের

Date:

Share post:

দরিয়া-এ-নূর এই প্রজন্মের কাছে যেন শুধুই রূপকথা। হাতের বাজুতে বসানো এই হিরের দাম ‘না কি’ ১১৪ কোটির বেশি। কিন্তু সবটাই সেই কাহিনীর পর্যায়তে রয়েছে। কারণ সেই হিরে আদৌ বাংলাদেশের ব্যাঙ্কের ভল্টে (vault) রয়েছে কি না, তা জানেন না খোদ হিরের (diamond) মালিক ঢাকার (Dhaka) নবাবের পরিবার!

তার সবথেকে বড় কারণ, বাংলাদেশে ১৯০৮ সালের পর থেকে কেউ চোখে দেখেনি সেই হিরে। এরপর ১৯৪৭ সালের স্বাধীনতার পালাবদল হয়েছে বাংলাদেশে। ১৯৭১-এ রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পেয়েছে স্বাধীনতা। আর ২০২৪ সালে আরও এক রক্তক্ষয়ী আরও এক রাজনৈতিক পালাবদলের সাক্ষী ঢাকা। এরপরেও ঢাকার ব্য়াঙ্কের ভল্টে আদৌ আছে কী বিশ্ব বিখ্য়াত সেই হিরে? প্রশ্নটা উঠছে, কারণ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ বলছেন তাঁরা ভল্ট খুলে দেখেননি।

ভারতের কোহিনূর (Kohinooor) ঠিক যতটা পুরোনো, বাংলাদেশের এই দরিয়া-এ-নূরও (Darya-e-Noor)  ঠিক ততটাই প্রাচীন। দুটি হিরেই ইরানের নবাবদের থেকে পাওয়া, এমনটাই কাহিনী। তেহরানের নবাবদের থেকে পারস্যের পথ থেকে পঞ্জাবের শিখ নেতা রঞ্জিত সিং এই দরিয়া-এ-হিন্দ জয় করে নেন। ভারতে ব্রিটিশ শাসন চলাকালীন রঞ্জিত সিংয়ের থেকে হিরে ছিনিয়ে নিয়েছিল ব্রিটিশরা। পর্যায়ক্রমে বাংলাদেশের নবাব পরিবারের হাতে আসে। তবে ১৯০৮ সালে তৎকালীন নবাব শালিমুল্লা বাহাদুর দেউলিয়া হয়ে গিয়ে নিজের সমস্ত সম্পত্তি ব্রিটিশদের হাতে তুলে দিয়েছিলেন। সেই সম্পত্তির মধ্যে যেমন ঢাকার এস্টেট ছিল, তেমনই ছিল এই দরিয়া-এ-হিন্দ।

ব্রিটিশরা সেই সময়ে এই হিরে তৎকালীন বাংলাদেশের রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ব্যাঙ্কের ভল্টে রেখেছিলেন। বর্তমান নবাব বংশের উত্তরসূরি খোয়াদা নঈম মুরাদের দাবি, তিনি নিজে কোনওদিন চোখে দেখেননি সেই হিরে। শুনেছেন যে তাঁর কাকা না কি সেটি দেখেছিলেন। তবে এবার তিনি স্বচক্ষে দেখতে চান সেই হিরে। কারণ তাঁর বিশ্বাস – ধার নিয়ে পৃথিবী থেকে বিদায় নিলে তাঁর আত্মা শান্তি পাবে না। তাই সেই হিরে যদি সত্যিই থেকে থাকে, এবং তার জন্য যদি সরকারের কাছে তাঁর পরিবারের কোনও ধার থেকে থাকে, তবে তিনি সেই ঋণমুক্ত হতে চান।

আরও পড়ুন: ‘দেবী চৌধুরানী’র গানে নজরুল-বঙ্কিমের আবেগ, দেশপ্রেমের সুর শোনালেন বিক্রম-ইমন-দুর্নিবার

সম্প্রতি বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার একটি কমিটি তৈরি করেছে ব্যাঙ্কের ভল্ট খুলে সেই হিরে বের করে আনার। যদি সব ঠিক থাকে তবে খুব তাড়াতাড়ি সেই ভল্ট খুলবে। তবে সেই ভল্ট আগেও খুলেছিল বলে জানাচ্ছে বাংলাদেশের সোনালি ব্য়াঙ্কের বর্তমান ম্যানেজিং ডিরেক্টর। তবে সেই সময়ে শুধুমাত্র ভল্টের বাইরের দরজা খোলা হয়েছিল। কেউ ভল্টটি খুলে দেখেননি তাতে কী রয়েছে। ফলে দরিয়া-এ-নূর প্রকাশ্যে আসার আগে উত্তেজনায় ফুটছেন বর্তমান নবাব বংশের বংশধর মুরাদ। যদিও ভল্টের ভিতরে কী রয়েছে, তা নিয়ে তিনি নিজেও যথেষ্ট আশঙ্কায় রয়েছেন।

spot_img

Related articles

মহিলা চিকিৎসককে হেনস্থার প্রতিবাদ, সকাল থেকে উলুবেড়িয়া হাসপাতালে ডাক্তারদের পেনডাউন!

উলুবেড়িয়া হাসপাতালে (uluberia hospital) মহিলা চিকিৎসককে মারধর ও ধর্ষণের হুমকি দেওয়ার প্রতিবাদে নিরাপত্তা সংক্রান্ত একগুচ্ছ দাবি নিয়ে শুক্রবার...

কুনার নদীতে বাঁধ তুলছে আফগানিস্তান! উদ্বেগে পাকিস্তান 

আফগানিস্তানের নতুন জলনীতি (Afghanistan new water policy) ঘিরে ফের আফ-পাক অশান্তির সুর। তালিবান প্রশাসন ঘোষণা করেছে কুনার ও...

ডেম্পোকে হালকাভাবে নিতে নারাজ, গোয়ায় এসে কেন আবেগপ্রবণ অস্কার?

আইএফএ শিল্ড অতীত। এবার লড়াই সুপার কাপে। শনিবার সুপার কাপে(Super Cup) প্রথম ম্যাচে মাঠে নামছে ইস্টবেঙ্গল। বিকেল ৪.৩০...

মহারাষ্ট্রে হাতে চিরকুট লিখে ‘আত্মঘাতী’ মহিলা চিকিৎসক: পুলিশের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, নীরব বঙ্গ বিজেপি!

ডবলইঞ্জিন সরকারের রাজ্যে হাতের তালুতে সুইসাইড নোট লিখে আত্মঘাতী মহিলা চিকিৎসকে(Lady Doctor)। ২ পুলিশ আধিকারিকের বিরুদ্ধে ধর্ষণ (Rape)...