Thursday, December 11, 2025

‘গালি’ থেকে পিচ: গোটা দেশের ক্রিকেট খেলা বাঁচিয়ে রেখেছে এই গ্রাম

Date:

Share post:

শাওনী দত্ত, শ্রীনগর

গালি ক্রিকেট হোক অথবা ২২ গজে বোলারকে শাসন – ব্যাটই (bat) হচ্ছে ক্রিকেট খেলার ক্রিকেটের সবথেকে বড় ‘অস্ত্র’। যদি গোটা দেশে সেই ব্যাটের সরবরাহ কমে যায় তবে স্বাভাবিকভাবেই ক্রিকেটপ্রেমীরা যে খুব একটা খুশি হবেন না, বলাই বাহুল্য। তবে দেশের কয়েক কোটি ক্রিকেটপ্রেমীর ব্যাটকে বাঁচিয়ে রেখেছে কোন শহর জানেন? জম্মু ও কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) পাঞ্জিপোরা (Panjipora)গোটা দেশে ব্যাট সরবরাহ করে সারা বছর ধরে।

কাশ্মীর বিখ্যাত উইলো (willow) গাছের জন্য। ব্যাটের যে চওড়া অংশ দিয়ে বলকে শাসন করেন একজন ব্যাটসম্যান, সেটা তৈরি হয় উইলো কাঠ দিয়ে, এটা সবার জানা। আর সেই উইলো কাঠ যে জম্মু ও কাশ্মীর ছাড়া আর কোথাও পাওয়া যায় না, তাও জানেন ক্রিকেটপ্রেমীরা। কাজেই ব্যাট (bat) যে জম্মু-কাশ্মীরের (Jammu and Kashmir) একটা বড় শিল্প, তা বলাই বাহুল্য। তবে গোটা রাজ্যে ছড়িয়ে ছিটিয়ে নয়, রাজ্যের একটি বিশেষ অংশেই ব্যাটশিল্প গড়ে উঠেছে। আর সেটাই পাঞ্জিপোরা।

গোটা পাঞ্জিপোরা এলাকায় ২০০ থেকে ২৫০ ব্যাটের কারখানা রয়েছে। বিশ্বাস না হলেও শ্রীনগর-কন্যাকুমারী হাইওয়ের ধার দিয়ে কাশ্মীরের ব্যবসায়ীরা এই শিল্পকে ক্রমশ বাড়িয়ে নিয়ে চলেছেন। ক্রমশ বাড়ছে ব্যাটের ফ্যাক্টরি। আর তার সব থেকে বড় কারণ – গোটা দেশে ব্যাটের চাহিদা।

এই এলাকার যে কারখানাগুলি বা ব্যাট প্রস্তুতকারক সংস্থা গোটা দেশে বিখ্যাত, তারা প্রতিদিন ৫০০টি করে ব্যাগ তৈরি করে। অর্থাৎ ৩৬৫ দিনের সেই হিসাবটা রীতিমতো অংক কোষেই বের করতে হবে। গোটা দেশে ব্যাটের এত চাহিদা রয়েছে বলেই পাঞ্জিপোরায় ব্যাট শিল্পে ক্রমশ বাড়ছে জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রমিকদের যোগদান।

উইলো কাঠের সঙ্গে বাঁশের হাতল জুড়ে তৈরি করা হয় ব্যাটের মূল কাঠামো। লক্ষ লক্ষ ব্যাট কিনে নিয়ে যায় কলকাতা থেকে কেরালার ব্যাটের বড় ব্যবসায়ীরা। তারপর কেউ কেউ নিজেদের মতো ব্র্যান্ডের স্টিকার বসিয়ে সেই ব্যাট বাজারে বিক্রি করেন। কাশ্মীরের এই এলাকার কারখানাগুলিতে যখন ব্যাটের অর্ডার হয়, তখন কোনওটা হয় ১০ হাজার কোনওটা ২০ হাজার। তবে বড় ব্যবসায়ীরা একসঙ্গে এক লক্ষ বা দুই লক্ষ ব্যাট একসঙ্গে কিনে নিয়ে যান। যার ফলে এভাবেই পাঞ্জিপোরা গ্রাম গোটা ভারতে ব্যাট সরবরাহ করে।

আরও পড়ুন: ধুলো ঝেড়ে প্রস্তুত কাশ্মীর, শুধু যাদের অপেক্ষা তারাই নেই

তবে চাহিদা যদি কখনও গোটা দেশে কমে যায়, কাশ্মীরের ব্যাট শিল্পের উপর নির্ভরশীল প্রায় ২ লক্ষ মানুষ প্রবল বিপদে পড়বেন। কারণ ব্যাট তৈরির প্রক্রিয়াটা নেহাত সহজ নয়। উইলো কাঠকে মাপমতো কেটে ছয় মাস রোদে ও বৃষ্টিতে শুকানো হয়। এরপর আরও ছয়মাস গোডাউনে ফেলে রেখে পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়ানো হয়। মেশিনে কাটিং-এর পরে বাঁশের হ্যান্ডেলের সঙ্গে মাপ মতো আঠায় জুড়ে পালিশের পর ওজন করে কম বেশি হলে আবার বাতিলের সংখ্যা বাড়ে। তৈরির পদ্ধতি ও কাঠের মান অনুযায়ী প্রায় ১০ রকম ব্যাট তৈরি করেন কাশ্মীরের ব্যাট প্রস্তুতকারকরা।

spot_img

Related articles

ইথানল কারখানা থেকে জমিতে দূষণ ছড়াবে: রাজস্থানে প্রতিবাদী কৃষকদের পুলিশের মার!

এলাকায় ইথানল কারখানা হলে চাষের খেতে দূষণ ছড়াবে। জল দূষিত হবে। দীর্ঘ এক বছর ধরে রাজস্থানের হনুমানগড় জেলার...

গোয়ার নাইট ক্লাবে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আটক অভিযুক্ত লুথরা ভাইরা: সূত্র 

গোয়া নৈশকালীন রেস্তোরাঁর অগ্নিকাণ্ডের (Goa night club fire incident) ঘটনায় এবার আটক করা হল মূল অভিযুক্ত সৌরভ ও...

দেশভাগে রবীন্দ্রনাথ! বাংলায় গিয়ে একথা বলুন ক্ষমতা থাকলে, রাজ্যসভায় বিজেপিকে চ্যালেঞ্জ ঋতব্রতর 

বাংলার মনীষীদের অপমানের বিরুদ্ধে বুধবার প্রতিবাদের ঝড় বইয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন,  বন্দে মাতরম্ গানের...

মা সারদার জন্মতিথি উপলক্ষ্যে সোশ্যাল মিডিয়ায় শ্রদ্ধা জানালেন মুখ্যমন্ত্রী

আজ শ্রীশ্রী মা সারদার ১৭৩ তম জন্মতিথি (Sri Sri Sarada Devi birth anniversary)। লক্ষ লক্ষ ভক্তদের কাছে অতি...