দেশ জুড়ে ভোটার তালিকা সংশোধনীর কাজ শুরু করার প্রস্তুতি নিচ্ছে কমিশন। অথচ কমিশনের নিয়োগ করা বিএলও-রাই এখনও প্রশিক্ষিত নন। কলকাতায় জাতীয় নির্বাচন কমিশনের (ECI) প্রতিনিধিদল জেলার আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠকে স্পষ্ট মেনে নিল এই তত্ত্ব। কার্যত স্পষ্ট হয়ে গেল কীভাবে অপ্রশিক্ষিত বিএলও-দের (BLO) দিয়েই বিহারের ভোটার তালিকা সংশোধনীর (Bihar SIR) কাজ চালিয়েছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। এবার সেই আশঙ্কা যে বাংলার ক্ষেত্রেও থাকছে না, তা বুঝেই দ্রুত বিএলওদের প্রশিক্ষণ (training) সম্পূর্ণ করার নির্দেশ কমিশনের প্রতিনিধিদলের।

রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকের দফতরে বুধবার উত্তরবঙ্গের পাঁচ জেলা বাদে বাকি সমস্ত জেলার জেলাশাসক, ইআরও ও এইআরওদের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের সিনিয়র ডেপুটি কমিশনার জ্ঞানেশ ভারতী ও প্রতিনিধিদল। বৈঠকে সব জেলাকে ২০২২ সালের ভোটার তালিকার (voter list) সঙ্গে ২০২৫ সালের ভোটার তালিকা মিলিয়ে দেখার কাজ ৭ দিনের মধ্য়ে শেষ করার সময় সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছে। ভোটারদের অস্তিত্ব যাচাইয়ের কাজ অনেক জেলাতেই মন্থর গতিতে চলছে বলে অভিযোগ কমিশনের আধিকারিকদের। কমিশনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রায় ৪০ শতাংশ কাজ এখনও অসম্পূর্ণ।

বাংলায় উৎসবের মরশুমের মধ্যেই তালিকা সম্পূর্ণ করা নিয়ে চাপ দিয়েছেন দিল্লির নির্বাচনী আধিকারিকরা। তাঁরা দাবি করেন, অন্যান্য রাজ্যে কাজ শেষ বা প্রায় শেষ পর্যায়ে। এখানে পিছিয়ে পড়লে জাতীয় পর্যায়ে সমস্যা হবে। তাই সাত দিনের বেশি সময় দেওয়া যাবে না।

আবার আধিকারিকদেরই দাবি, বিএলওদের প্রযুক্তি নির্ভরতা এখনও সন্তোষজনক নয়। ভোটার তালিকা যাচাইয়ের মূল দায়িত্বে রয়েছেন এই বুথ লেভেল অফিসার বা বিএলও-রাই। কমিশনের তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগের ডিজি সীমা খান্না বৈঠকে স্পষ্ট জানান, বিএলওদের (BLO) প্রযুক্তি নির্ভরতা এখনও সন্তোষজনক নয়। দ্রুত প্রশিক্ষণ (training) শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। প্রয়োজনে ক্লাস্টারভিত্তিক প্রশিক্ষণ চালুর পরামর্শও দেন। প্রশিক্ষণ শেষের আগেই কী তবে তালোগোলে ভোটার তালিকা সংশোধনের কাজ সেরে ফেলতে চাইছে জাতীয় নির্বাচন কমিশন, উঠতে শুরু করেছে সেই প্রশ্ন।

আরও পড়ুন: শাহ থেকে সাবধান, সবচেয়ে বড় মীরজাফর: কাকে সতর্ক করলেন মমতা!

বুধবার রাজ্য সিইও দফতরে মূল বৈঠক শেষ করে কমিশনের প্রতিনিধিরা এদিন উত্তর ২৪ পরগনার রাজারহাট জেলা পরিষদ ভবনে রাজারহাট-গোপালপুর ও রাজারহাট-নিউটাউন বিধানসভার নির্বাচন কর্মীদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এরপর জেলা শাসকের দফতরেও ইআরও ও এইআরওদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক হয়। প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিকে যদিও এদিনের বৈঠক থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তা সত্ত্বেও দুই দিনাজপুর ও মালদহের নির্বাচন আধিকারিকরা ভিডিও কনফারেন্সে অংশ নেন।

–

–

–

–