Tuesday, December 16, 2025

বিজেপির ভয়-বিভাজনের রাজনীতিতে করুণ পরিণতির দায় নেবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী? তীব্র আক্রমণ মমতার

Date:

Share post:

ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সংশোধনী (SIR) প্রক্রিয়া ঘোষণা হওয়ার ৭২ ঘণ্টার মধ্যেই  আতঙ্কে একের পর এক আত্মহননের খবর সামনে আসছে। এই ঘটনার জন্য বিজেপিকে দায়ী করে তীব্র আক্রমণ শাণালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্যোশাল মিডিয়ায় (Social Media) এক পোস্টে মুখ্যমন্ত্রী অভিযোগ করেন, ”বিজেপির ভয়, বিভাজন এবং ঘৃণার রাজনীতির করুণ পরিণতি আমরা প্রত্যক্ষ করছি।” মমতার কথায়, ”ভোটার তালিকায় সংশোধনের এই  প্রক্রিয়াটি বিজেপির (BJP) ইচ্ছায় জোর করে চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার ফলেই একের পর এক  এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটছে।” একইসঙ্গে তিনি আশ্বাস দেন, “একজন বৈধ নাগরিককেও ‘বহিরাগত’ তকমা পরতে দেওয়া হবে না।“

মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, ”২৭ অক্টোবর, খড়দহের পানিহাটির ৫৭ বছর বয়সী প্রদীপ কর আত্মহত্যা করেন। একটি চিরকুট (Note) রেখে যান যেখানে লেখা ছিল, “আমার মৃত্যুর জন্য NRC দায়ী।” ২৮ অক্টোবর, কোচবিহারের দিনহাটার ৬৩ বছর বয়সী এক ব্যক্তি SIR প্রক্রিয়ার অধীনে হয়রানির ভয়ে নিজের জীবন নেওয়ার চেষ্টা করেন।

আর আজ, পশ্চিম মেদিনীপুরের কোতোয়ালি থেকে ৯৫ বছর বয়সী ক্ষিতীশ মজুমদার-তাঁর মেয়ের সঙ্গে বীরভূমের ইলামবাজারে থাকতেন করতেন- তাঁকে এবং তাঁর পরিবার জমি থেকে উচ্ছেদ কার হতে পারে আতঙ্কে আত্মহত্যা করেন।”

এই ঘটনাগুলিকে “রাজনৈতিকভাবে সৃষ্ট মানসিক ভয় ও আতঙ্কের ফল” বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) প্রশ্ন তোলেন, “এই ট্র্যাজেডিগুলির দায় কে নেবে? স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কি দায় স্বীকার করবেন? বিজেপি ও তাদের মিত্ররা কি সাহস দেখাবে এই আতঙ্কের জন্য নিজেদের দায় মেনে নিতে?”

রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান লেখেন, “৯৫ বছরের এক বৃদ্ধ, যিনি এই মাটির জন্য জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁকে নিজের অস্তিত্ব প্রমাণ করতে গিয়ে মরতে হচ্ছে। এ শুধু ট্র্যাজেডি নয় — মানবতার প্রতি এক বিশ্বাসঘাতকতা।”

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়, “বহু প্রজন্ম ধরে বাংলার মানুষ মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে এসেছে। আজ তাঁদের নিজের জন্মভূমির অধিকার নিয়ে প্রশ্ন তুলতে হচ্ছে। এই নিষ্ঠুরতা কোনও ভাবেই সহ্য করা যায় না।”
আরও খবর: SIR প্রস্তুতি: আজ থেকে প্রশিক্ষণ, আগামিকাল মেগা ভার্চুয়াল বৈঠক অভিষেকের

রাজ্যের মানুষের প্রতি মুখ্যমন্ত্রীর আবেদন, “কেউ প্ররোচনায় পা দেবেন না, কেউ বিশ্বাস হারাবেন না, কেউ চরমপন্থা অবলম্বন করবেন না। মা-মাটি-মানুষ সরকার আপনাদের পাশে আছে। বাংলায় কোনও ভাবেই এনআরসি প্রয়োগ হতে দেওয়া হবে না — না সামনের দরজা দিয়ে, না পিছনের দরজা দিয়ে।” আশ্বাস দিয়ে মমতা লেখেন, “একজন বৈধ নাগরিককেও ‘বহিরাগত’ তকমা পরতে দেওয়া হবে না। শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত আমরা লড়ব, মানুষের অধিকার রক্ষার জন্য এবং বিজেপি ও তাদের মিত্রদের কুটিল ষড়যন্ত্র ব্যর্থ করার জন্য।”

spot_img

Related articles

মোটা অঙ্কের বাজেট নিয়ে মিনি নিলামে নামছে কেকেআর, দল পেতে পারেন ঈশ্বরণ

মঙ্গলবার আবুধাবিতে ২০২৬ সালের আইপিএলের মিনি নিলাম(IPL Mini Auction)। ৭৭টি জায়গার জন্য নিলামে উঠবেন ৩৫০ ক্রিকেটার। এই ৩৫০...

বাংলা না কি জ্বলছে! গদি মিডিয়ার অপপ্রচারকে ধুয়ে দিলেন সাধু থেকে আমজনতা

বাংলা না কি জ্বলছে! এখানে খুন-জখমের রাজনীতি চলছে! আক্রান্ত হিন্দু! গদি মিডিয়া এই খবর করতে এসেছিল কলকাতায় আর...

রাজ্যের শিক্ষাক্ষেত্রকে কুক্ষিগত করার চেষ্টা! কেন্দ্রের অপচেষ্টার বিরুদ্ধে লোকসভায় সোচ্চার তৃণমূল

পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিরোধী শাসিত রাজ্যগুলিকে বাগে আনতে না পেরে এবার দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামো লঙ্ঘন করে...

মতুয়াদের সঙ্গে প্রতারণা! রাজ্যসভায় বিজেপির পর্দাফাঁস সাংসদ মমতাবালা ঠাকুরের

পশ্চিমবঙ্গে বসবাসকারী লক্ষ লক্ষ মতুয়াকে ভুল বুঝিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতারণা করছে মোদি সরকার ও বিজেপি—এমনই অভিযোগ তুলে সোমবার...