সংবিধান মেনে চলব। বিজেপির গাইডলাইনে নয়, পরিষ্কার করে বলে গেলাম। বুধবার, সংবিধান দিবসে (Constitution Day) বাবা সাহেব আম্বেদকরের (Baba Saheb Ambedkar) মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানিয়ে গর্জে উঠলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হয়ে ফের গণতন্ত্র রক্ষার ডাক দেন তিনি। এদিন সংবিধান হাতে আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানাতে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী।

সংবিধান দিবস উপলক্ষ্যে এদিন সকালেই ভারতের সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে নিজের এক্স হ্যান্ডেলে (X Handle) মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) লেখেন, বর্তমানে গণতন্ত্র সংকট ধর্মনিরপেক্ষতা বিপন্ন, যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোকে বুলডোজার দিয়ে ধ্বংস করা হচ্ছে। পরে রেড রোডে আম্বেদকরের মুর্তি শ্রদ্ধা জানিয়ে বিজেপি তথা মোদি সরকারকে তীব্র আক্রমণ করেন তিনি। বলেন, “যেকোনও মূল্য গণতন্ত্রকে রক্ষা করবই। যারা দেশ গড়েছেন, ভারতবর্ষকে স্বাধীন করেছেন সেই বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের গাইডলাইন মেনে চলব। সংবিধান মেনে চলব। বিজেপির গাইডলাইনে নয়, পরিষ্কার করে বলে গেলাম।”

এর পরেই বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জানান, “আজকে একটি সংবাদ পত্রে দেখলাম সংসদে নাকি জয়হিন্দ, বন্দে মাতরম বলা যাবে না। সত্য-মিথ্যা জানি না। খোঁজ নেব।” এর পরেই তিনি তীব্র কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “বন্দে মাতরম তো জাতীয় সঙ্গীত। তাহলে কি বাংলার আইডেনটিটি নষ্ট করতে চাইছে? ওরা ভুলে যাচ্ছে বাংলা ভারতের বাইরে নয়। ক্ষমতায় আছে বলে বিজেপি ভাবছে যা খুশি করবে, তা আমরা বরদাস্ত করব না।”

এদিন তাৎপর্যপূর্ণভাবে সংবিধান হাতেই আম্বেদকরের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান রাজ্যের প্রশাসনিক প্রধান। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বিষয়ে নিরপেক্ষতা, সাম্যের যে খসড়া তৈরি হয়েছিল তাও পড়ে শোনান বাংলার মুখ্যমন্ত্রী।

মোদি সরকারের নাম না করে তোপ দাগে মমতা। বলেন, “দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করছি মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে, ধর্মের অধিকার কেড়ে নেওয়া হচ্ছে। কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ চলছে, তপসিলি, দলিত, সংখ্যা লঘু বা সাধারণ হিন্দু ভোটার কাউকেই বাদ দেওয়া হচ্ছে না।”

এসআইআরের প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার এত বছর পর আমাদের নতুন করে নাগরিকত্বের প্রমাণ দিতে হচ্ছে। যাঁরা বছরের পর বছর দেশের মাটিকে লালন-পালন করেছেন, আজকে তাঁদের কাছে দেশে থাকার প্রমাণ চাওয়া হচ্ছে। নাগরিক অধিকারের নাম করে মানুষের মধ্যে তীব্র আতঙ্কের পরিবেশ তৈরি করেছে। শপথ নিলাম যেকোনও মূল্যে গণতন্ত্রকে রক্ষা করব।

মঙ্গলবার বনগাঁ সীমান্তে গিয়েছিলেন মমতা। সেই কথা উল্লেখ করে বলেন, সেখানকার মানুষ হাউহাউ করে কাঁদছে, সেই বুক ফাটা কান্না আর্তনাদ না দেখলে বুঝতে পারবেন না। যারা এটা নিয়ে রাজনীতি করছে তারা দেশের পক্ষে লজ্জা। এদের ধিক্কার জানাই।

“এটাই কি বিজেপির নীতি? ঝুট আর লুট, ভোটের আগে ১০ হাজার দাও, আর ভোটের পর সব লুট করে নাও!”- তীব্র কটাক্ষ মমতার। মঙ্গলবারের পরে বুধবারেও তিনি বলেন, কোনভাবেই ওরা ২৯ এ আসবে না, তার আগেও পড়ে যেতে পারে।

–

–


